ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ॥ শিক্ষিত নারীদের অনীহা

প্রকাশিত: ০৩:৫৯, ২১ ডিসেম্বর ২০১৫

নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ॥ শিক্ষিত নারীদের অনীহা

সঞ্জয় সরকার, নেত্রকোনা ॥ পৌরসভার সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর পদে উচ্চ শিক্ষিত ও রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত নারীরা তেমন অংশগ্রহণ করছে না। দেখা যাচ্ছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রার্থী হচ্ছে স্বশিক্ষিত ও অর্ধ শিক্ষিত নারী। এ নির্বাচন পদ্ধতি চালুর পর ১৮ বছরেও অবস্থার তেমন পরিবর্তন হয়নি বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও স্থানীয় নির্বাচনে নারীদের অংশগ্রহণের বিষয়টিকে উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের গুরুত্বপূর্ণ ধাপ বলে মনে করছেন উন্নয়নবিদ ও স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞরা। জানা গেছে, চলতি পৌরসভা নির্বাচনে নেত্রকোনার পাঁচটি পৌরসভার ১৫টি সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন মাত্র ৪৭ নারী। তাদের মধ্যে ২১ জনই ‘স্বশিক্ষিত’ বা ‘স্বাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন’। অর্থাৎ তাদের কোন একাডেমিক সার্টিফিকেট নেই। আর শিক্ষিত প্রার্থীদের মধ্যে স্নাতক ডিগ্রিধারী (বিএ পাস) প্রার্থী আছেন মাত্র একজন। তিনি আদিবাসী নারী। এছাড়া এইচএসসি পাস প্রার্থী তিনজন। এসএসসি পাস মাত্র দুইজন। বাকি সবার সর্বোচ্চ লেখাপড়া ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণী পর্যন্ত। জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে স্থানীয় সরকারে প্রথম সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন পদ্ধতি চালু হয়। এরই মধ্যে ১৮ বছর চলে গেছে। এই দীর্ঘ সময়ে দেখা যায়, অনেক এলাকায় নারী প্রার্থীদের সংখ্যাও তুলনামূলক কমে গেছে। প্রথমবারের নির্বাচনে বেশ কিছু উচ্চ শিক্ষিত নারী অংশ নিয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয়বারে দেখা গেছে তাদের মধ্য থেকে অনেকেই ঝরে গেছে। এ ব্যাপারে কমিউনিস্ট পার্টির নেত্রকোনা জেলা শাখার সম্পাদকম-লীর সদস্য কোহিনূর বেগম বলেন, সংরক্ষিত আসনে নির্বাচিত নারীদের কাজ করার এখনও উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। তাদের মর্যাদার বিষয়টিও প্রশ্নাতীত। তাছাড়া রাজনৈতিক দলগুলোর তৃণমূল পর্যায়ে নারী নেতৃত্ব সৃষ্টির কোন কর্মসূচী নেই। ফলে উচ্চ শিক্ষিত ও সামাজিক বা রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত নারীরা এসব নির্বাচনে এগিয়ে আসছে না। নেত্রকোনা সদর উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তুহিন আক্তার মনে করেন, স্থানীয় সরকারে নারী প্রতিনিধিদের কাজের পরিধি একেবারেই সীমিত। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, তিনটি ওয়ার্ড নিয়ে নির্বাচিত সত্ত্বেও তাদের কোণঠাসা করে রাখা হয়। ফলে জনগণের কাক্সিক্ষত সেবা দিতে না পেরে আরও অবমূল্যায়নের শিকার হয়। এসব কারণে উচ্চ শিক্ষিত ও প্রতিষ্ঠিত নারীরা নির্বাচনে এগিয়ে আসতে চায় না। তবে পাশাপাশি নারী শিক্ষার স্বল্প হারও অনেকটা দায়ী।
×