ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার ॥ শরীয়তপুরের সোলাইমান ও ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৫

যুদ্ধাপরাধী বিচার ॥ শরীয়তপুরের সোলাইমান ও ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শরীয়তপুরের মোঃ সোলাইমান মোল্লা (৮৪) ও ইদ্রিস আলী সরদারের (৬৭) বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে পলাতক ইদ্রিস আলী সরদারের বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন আদালত। মঙ্গলবার চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ঠিক করেছেন আদালত। এর আগে গত ২৯ অক্টোবর হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগসহ চার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে তদন্ত সংস্থা। শরীয়তপুর জেলার পালং উপজেলার ৫নং ওয়ার্ডের কাশিপুর মুসলিম পাড়ার মৃত চান মোল্লার ছেলে সোলায়মান মোল্লা (৮৪) ও একই থানার মাহমুদপুরের মৃত হাকিম আলী সরদারের ছেলে ইদ্রিস আলী সরদার ওরফে গাজী ইদ্রিস (৬৭)। এদের মধ্যে গত ১৫ জুন সোলায়মান মোল্লাকে আটক করে ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। ইদ্রিস আলী এখনও পলাতক রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলায় ২৮ জনকে সাক্ষী ও সিজার লিস্টে আরও ৩ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৪টি অভিযোগ আনা হয়েছে। সেগুলো হলো। প্রথম অভিযোগ ॥ ১৯৭১ সালের ২২ মে আসামিরা পাকিস্তান দখলদার সেনাবাহিনীর ১০০ থেকে দেড়শ’ সদস্যসহ শরীয়তপুর জেলার পালং থানা এলাকায় কয়েকটি গ্রামে হামলা চালিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কৃষক আব্দুস সামাদসহ প্রায় ২০০ হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে গুলি করে হত্যা করে ও বাড়ির মালামাল লুট করে। দ্বিতীয় অভিযোগ ॥ ১৯৭১ সালে ২৬ মে জেলার পালং থানার মালোপাড়া ও রুদ্রকর গ্রামে হামলা চালিয়ে মঠের পুরোহিতকে গুলে করে হত্যা করে ও গ্রামগুলো থেকে মামালাল লুট ও আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। মালোপাড়া থেকে ৩০-৪৫ জন মহিলা ও পুরুষকে ধরে মাদারীপুর পাকিস্তান আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে ৩ দিন আটকে রেখে মহিলাদের ধর্ষণ করে ছেড়ে দেয়। কিন্তু পুরুষদের গুলি করে হত্যা করে। তৃতীয় অভিযোগ ॥ জুন মাসে একই থানার শৈণেন্দ্র কৃষ্ণ পালের বাড়িতে হামলা চালিয়ে দুইজনকে হত্যা করে ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের নির্যাতন করে বেনওয়েট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। চতুর্থ অভিযোগ ॥ ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত আসামিরা দখলদার বাহিনীর সহায়তায় এলাকায় হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপরাধ করে। এ সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ করার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ভয়ভীতি ও আতঙ্কের সৃষ্টি করে পালং থানার এক থেকে দেড় হাজার মানুষকে দেশ ত্যাগ করে ভারতের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় গ্রহণে বাধ্য করে।
×