ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পাবনার ৬ পৌরসভায় বিদ্রোহীদের নিয়ে আ’লীগ বিএনপি প্রার্থীদের ঘুম হারাম

প্রার্থীদের নাভিশ্বাস

প্রকাশিত: ০৪:১০, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৫

প্রার্থীদের নাভিশ্বাস

কৃষ্ণ ভৌমিক, পাবনা ॥ জেলার ৭টি পৌর নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রচার জমে উঠেছে। তবে ৬টি পৌর নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় বিএনপি-আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থীদের ঘুম হারাম হতে চলেছে। তাই নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে মেয়র প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে দিনরাত ঘুরে দিচ্ছেন নানা রকম প্রতিশ্রুতি। পাবনা পৌরসভা নির্বাচনে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রকিব হাসান টিপু আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হয়েছেন। জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নুর মোহাম্মদ মাসুম বগা বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন। জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বর্তমান মেয়র কামরুল হাসান মিন্টু ও ইসলামী আন্দোলনের মওলানা আবু বক্কর সিদ্দিকী মেয়র প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থীর নৌকার হাওয়া ততই জোরালো হচ্ছে। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল হাসান মিন্টুর জোরালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা সুস্পষ্ট হয়ে উঠছে। সুজানগর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাব, বর্তমান মেয়র যুবলীগ নেতা তোফাজ্জল হোসেন তোফা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। বিএনপির মেয়র প্রার্থী হয়েছেন আজম আলী বিশ্বাস। একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান মেয়র কামাল বিশ্বাস। জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী মমতাজ উদ্দিন। বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী আব্দুল ওহাব বেকায়দায় পড়েছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেমসহ প্রথমসারির নেতারা বিদ্রোহী প্রার্থী তোফাজ্জল হোসেনের ভোট চাইছেন। বিদ্রোহী প্রার্থীর নিজস্ব ভোট ব্যাংক না থাকলেও আওয়ামী লীগ নেতাদের রিজার্ভ ভোটের ভরসায় নির্বাচন করছেন। এ পৌরসভায় বিএনপির তুলনায় আওয়ামী লীগের ৪ হাজার ভোট বেশি রয়েছে। বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে এ ভোট বিভাজন হলে বিএনপির মেয়র প্রার্থী বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনাও নাকচ করছেন না সুধীমহল। চাটমোহর পৌরসভায় এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যেই মেয়রপদে জোরালো প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস মিলছে। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন সাকো, একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন রেজাউল করিম দুলাল। বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হয়েছেন অধ্যক্ষ আঃ রহিম কালু, একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন প্রফেসর আব্দুল মান্নান। রেজাউল করিম দুলালের সাথেই বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী প্রফেসর আব্দুল মান্নানের জোরালো প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। প্রফেসর আব্দুল মান্নান উপজেলা বিএনপির খ- খ- অংশকে জোড়া লাগিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। ফরিদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান মেয়র খ. ম কামরুজ্জামান মাজেদ। বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন এনামুল হক চন্দন। আওয়ামী লীগের সামসুজ্জামান আলাল, জাহাঙ্গীর আলম, হাফিজুর রহমান বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। এখানে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান মেয়র ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকা- করায় ভোটারদের মনের কাছে রয়েছেন। এছাড়াও বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর এলাকায় অপর প্রার্থী আসাদুজ্জামান আলালের বাড়ি হওয়ায় তিনি বিএনপি প্রার্থীর ভোট কাটছেন। এ বিচারে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিজয়ের সম্ভাবনা প্রবল রয়েছে বলে ভোটাররা ধারণা করছেন। ভাঙ্গুড়া পৌর নির্বাচনে মেয়রপদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন গোলাম হাসনায়েন রাসেল। বিএনপির প্রার্থী এ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর ফুপাতো ভাই আলহাজ আব্দুল মালেক, আওয়ামী লীগ নেতা আজাদ খান বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন অধ্যাপক মাহবুব আলম। বিদ্রোহী প্রার্থীরা ভোট টানলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে বেকায়দায় পড়তে হবে বলে সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন। সাঁথিয়া পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান মেয়র মিরাজুল ইসলাম প্রামাণিক। বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন সিরাজুল ইসলাম। উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি মফিজ উদ্দিন, পৌর বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম, ছাত্রদল নেতা আশিক ইকবাল স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এ পৌরসভায় জামায়াতের ভোট ব্যাংক যেদিকে যাবে তিনিই মেয়র পদে বিজয়ী হবেন বলে অনুমান করছেন সাধারণ ভোটারা। ঈশ্বরদী পৌর নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক মেয়র মোখলেছুর রহমান বাবলু। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টু। আওয়ামী লীগ প্রার্থী গত ১ বছর ধরে প্রতি পাড়ায় পাড়ায় উঠান বৈঠক করে ভোটারদের মনের কোঠায় স্থান পেয়েছেন। এ নির্বাচনে মেয়র পদে তার বিজয়ের সম্ভাবনাই দেখছেন সাধারণ ভোটাররা।
×