ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বগুড়া পৌরবাসী জলাবদ্ধতায় নাকাল

প্রকাশিত: ০৪:১১, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৫

বগুড়া পৌরবাসী জলাবদ্ধতায় নাকাল

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ বৃষ্টি বা বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা হতে পারে এমন ধারা সাধারণের কিন্তু এ শুষ্ক মৌসুমেও শহরে জলবদ্ধতায় নগরবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, এমন ঘটনা প্রশ্ন তুলতে পারে। তবে দুর্ভোগময় এমন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হচ্ছে বগুড়া শহরের অন্যতম ব্যস্ততম এলাকা কবি নজরুল ইসলাম সড়কে। চারদিকে ভোটের ডামাডোল আর পৌরবাসীকে প্রার্থীদের সুযোগ-সুবিধা দেয়ার নানা প্রতিশ্রতির মাঝে এমন অবস্থা। এ সড়কে পথচারীদের প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের মুখে পড়তে হচ্ছে জমে থাকা দুর্গন্ধময় পানির কারণে। শহরের ব্যস্ততম এ সড়কে এমন অবস্থা একদিনের নয়, চলছে মাসের পর মাস ধরে। পৌর কর্তৃপক্ষের অবহেলার খেসারত দিতে হচ্ছে পৌরবাসীকে। ড্রেনের উপচে পড়া দুর্গন্ধময় পানির কারণে জলাবদ্ধ রাস্তা দিয়ে চলাচলই কষ্টকর হয়ে উঠেছে। প্রায় ৭০ বর্গকিলোমিটার এলাকার বগুড়া পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিয়ে জলাবদ্ধতা আর চলার অযোগ্য অনেক সড়ক নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। পৌর এলাকায় মোট ড্রেন রয়েছে ৭১০ কিলোমিটার। এর মধ্যে কাঁচা ড্রেন রয়েছে ২৭০ কিলোমিটার। এসব ড্রেনের বেশির ভাগই আবার জলাবদ্ধতার কারণ হয়ে ওঠে। বিশেষ করে পৌরসভার বর্ধিত ৯টি ওয়ার্ডে এ অবস্থা আরও নাজুক। পৌর এলাকাভুক্ত হয়েও পৌরবাসী অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। কেবল ভোট সামনে এলেই তাদের বঞ্চনার বিষয়টি উঠে আসে। আর বর্ষার সময় গোটা শহরের বেশিরভাগ সড়কই জলবদ্ধতার কবলে পড়ে। শুধু বর্ষা নয় এখন শুষ্ক মৌসুমেও শহরবাসীকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কবি নজরুল ইসলাম সড়কের ব্যবসায়ী মামুন ও পারভেজ ক্ষুব্ধ হয়ে জানালেন, উপচে পড়া দুর্গন্ধময় পানির জলবদ্ধতায় তারা অতিষ্ট হয়ে উঠছেন। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও থাকা যায় না তেমনি ক্রেতারাও পানি ডিঙ্গিয়ে আসতে চান না। তারা জনালেন, কয়েক দিন পর পরেই এমন অবস্থা চলে সপ্তাহজুড়ে। কোন সময় এ দুর্গন্ধময় ভোগান্তির সময় আরও বেড়ে যায়। পৌরসভা সদয় হওয়ার পর দুর্ভোগ ও অস্বস্তিকর এ পরিস্থিতি থেকে সাময়িক মুক্তি মেলে পথচারী আর পথচারীদের। কয়েক দিন পর আবার ফিরে আসে পুরনো চিত্র, আবার সেই দুর্ভোগ। স্থায়ী কোন সমাধান নেই। কিছুতেই পরিত্রাণ পাওয়া যাচ্ছে না। গত কয়েক দিন ধরে কবি নজরুল ইসলাম সড়কে ড্রেনের উপচে পড়া পচা পানির জলবদ্ধতা স্থায়ী রূপ নিয়েছে, পথচারীদের নাকে রুমাল দিয়ে পথ চলতে হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে মহিলা ও শিশুদের। দুর্গন্ধময় পানি ডিঙ্গিয়ে পারাপার হতে অস্বস্তিকর ও চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। ব্যবসায়ী ও পথচারীরা বলছেন, পৌরসভা ড্রেনেজ লাইন নিয়মিত পরিষ্কার করলে এমন ভোগান্তির হাত থেকে কিছুটা পরিত্রাণ পাওয়া যেত। পৌরসভা আবার এ বিষয়ে দুষছে বগুড়া সড়ক বিভাগকে। তাদের বক্তব্য সড়ক বনানী- মাটিডালি সড়ক সম্প্রসারণের সময় অপরিকল্পিতভাবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণের কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। বগুড়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী জানিয়েছেন, ড্রেনেজ লাইনে উঁচু-নিচু থাকায় এবং ধারণ ক্ষমতার বেশি পানি প্রবাহসহ আবর্জনার কারণে কবি নজরুল ইসলাম সড়কে ড্রেন উপচে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এ বিষয়ে সওজ বগুড়া জানিয়েছে, সড়কটি তাদের আওতায় থাকলেও ড্রেনেজ লাইন পরিষ্কারের দায়িত্ব পৌরসভার। তবে দুই বিভাগ পরস্পরের বিরুদ্ধে দোষ চাপালেও সাধারণ লোকজনের দুর্ভোগ কমছে না। আর ভোটের লড়াইয়ে থাকা বর্তমান মেয়র বিএনপি নেতা এ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান এ অবস্থাতেও নাগরিকদের পৌর সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন।
×