ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দু’টি স্কোয়াড্রনই গুড়িয়ে দিতে পারে গোটা পাক বিমানবাহিনী

প্রকাশিত: ২৩:৪৩, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৫

দু’টি স্কোয়াড্রনই গুড়িয়ে দিতে পারে গোটা পাক বিমানবাহিনী

স্টাফ রিপোর্টার॥ ভারতীয় বিমানবাহিনীর মাত্র দু’টি স্কোয়াড্রন মোকাবিলা করতে পারে গোটা পাক বিমানবাহিনীর। গোয়েন্দা সূত্রে নাকি এমনই রিপোর্ট পৌঁছেছে পাক প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে। আর তাতেই নাকি প্রবল তোলপাড় শুরু হয়েছে ইসলামাবাদের ক্ষমতার অলিন্দে। ভারতের মতো প্রতিবেশীর সঙ্গে ক্ষমতার ভারসাম্যে এঁটে উঠতে না পারা পাকিস্তানের পক্ষে চিরকালই অস্বস্তিকর। সামরিক শক্তির নিরিখে ভারতের চেয়ে এতটা পিছিয়ে পড়া পাকিস্তানের পক্ষে আতঙ্কেরও কারণ। শুধু পাকিস্তানে নয়, ভারত-পাক বিমানবাহিনীর ক্ষমতার এই বিপুল ফারাক কিন্তু আন্তর্জাতিক মহলেও এখন আলোচনার বিষয়। আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, গত কয়েক দশকে দ্রুত আধুনিকীকরণ ঘটিয়ে ভারতীয় বিমানবাহিনী যোজন পিছনে ফেলে দিয়েছে পাকিস্তানকে। ভারতের প্রতিবেশীর হাতে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান প্রায় নেই-ই। ১৯৮৩ সালে হাতে পাওয়া এ-৫ এবং এফ-১৬ যুদ্ধবিমান হল পাক বিমানবাহিনীর সবচেয়ে শক্তিশালী ফাইটারগুলির অন্যতম। কিন্তু, দুই গোত্রের যুদ্ধবিমানের কোনওটিকেই সমর বিশারদরা অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান হিসেবে ধরছেন না। রাশিয়ার সুখোই বিমানের বহু পুরনো সংস্করণ সুখোই-২৪ আর আমেরিকার তৈরি এফ-১৬ মোটামুটি একই রকম ক্ষমতাসম্পন্ন। ভারতের হাতে রয়েছে সুখোই-৩০, যা এই সুখোই-২৪ বা এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের চেয়ে অনেক এগিয়ে। বিধ্বংসী সুখোই-৩০ ফাইটারের মোকাবিলা করা কোনও ভাবেই সম্ভব নয় পাক বিমানবাহিনীর হাতে থাকা কোনও যুদ্ধবিমানের পক্ষে। ২০০৫ সালে পাকিস্তান চীনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে জেএফ-১৭ থান্ডার নামে একটি যুদ্ধবিমান তৈরি করা শুরু করে। চীন-পাক যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই যুদ্ধবিমান নিয়ে প্রথমে খুব আস্ফালন করেছিল পাক বিমানবাহিনী। কিন্তু, পরে জানা যায় সাবেক সোভিয়েতের মিগ-৩৩ নামে যে যুদ্ধবিমান পছন্দ না হওয়ায় বাতিল করে দিয়েছিল, সেই বিমানের প্রযুক্তিই কিনে নেয় চিন। সেই প্রযুক্তিতেই পাকিস্তানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তৈরি করে জেএফ-১৭ থান্ডার। সাবেক সোভিয়েতের তৈরি মিগ-২৯ এই মিগ-৩৩ তথা জেএফ-১৭ থান্ডারের চেয়ে বহু গুণ শক্তিশালী। ডাবল ইঞ্জিন মাল্টিরোল মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান সিঙ্গল ইঞ্জিনের জেএফ-১৭ থান্ডারের চেয়ে অনেক বেশি বিধ্বংসী। ভারতের হাতে মিগ-২৯ ফাইটারের বিশাল স্কোয়াড্রন রয়েছে। পাকিস্তানের শেষ আধুনিক অস্ত্র হল এফ-৭পি। ১৯৯০ সালে পাক বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত হওয়া এই এফ-৭পি ফাইটারও চীনেও তৈরি। প্রথমে এই বিমানের প্রযুক্তির ব্যাপারেও আসল কথা প্রকাশ করেনি চীন বা পাকিস্তান। পরে জানা যায় রাশিয়ার মিগ-২১ ফাইটার নিজেদের দেশে তৈরির লাইসেন্ন পায় চীন। সেই প্রযুক্তিতেই পাকিস্তানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তৈরি করে এফ-৭পি। মিগ-২১ বিমান বহু পুরনো প্রযুক্তি। স্বাভাবিকভাবেই এফ-৭পি-ও তাই। এই মিগ-২১ ভারতের হাতে প্রচুর রয়েছে। কিন্তু, পুরনো এই বিমানকে ধাপে ধাপে বাতিল করে দিচ্ছে ভারত। কারণ তার চেয়ে অনেক আধুনিক চতুর্থ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তেজস, জাগুয়ার, মিরাজ-২০০০ এবং সুখোই-৩০ রয়েছে ভারতের হাতে। মিরাজ-২০০০ এবং সুখোই-৩০ এই মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী এবং অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানগুলির অন্যতম। বলেছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। একাধিক ইঞ্জিন সম্বলিত এই সব ফাইটার অত্যন্ত ক্ষিপ্র আক্রমণ চালাতে পারে, নির্ভুল লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে। যে কোনও আবহাওয়াতেই হামলা চালানোর উপযুক্ত এই দুই যুদ্ধবিমান। ভারতীয় বিমানবাহিনীর হাতে সুখোই-৩০ এবং মিরাজ-২০০০ ফাইটারের একাধিক স্কোয়াড্রন রয়েছে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন পাক বিমানবাহিনীর হাতে থাকা মিগ গোত্রের দুর্বল যুদ্ধবিমান এবং ১৯৬৮ সালের সাধারণ মিরাজ, ১৯৬২ সালের টি-৩৭ এবং ১৯৪৭ সালের মুশাশক ফাইটারগুলি আধুনিক যুদ্ধে খুব একটা সুবিধা করতে পারবে না। ভারতীয় বিমানবাহিনীর সুখোই-৩০ এবং মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমানের একটি স্কোয়াড্রনই গোটা পাকিস্তান এয়ার ফোর্সকে চুরমার করে সক্ষম। বলছেন বিশেষজ্ঞরা। সূত্র: আনন্দবাজার
×