ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপির সন্ত্রাসী ও চার্জশীটভুক্ত আসামিদের দমন করুন ॥ ইসিকে আওয়ামী লীগ

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৫

বিএনপির সন্ত্রাসী ও চার্জশীটভুক্ত আসামিদের দমন করুন ॥ ইসিকে আওয়ামী লীগ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আসন্ন পৌরসভার নির্বাচনী প্রচারে বিভিন্ন মামলায় বিএনপির চার্জশীটভুক্ত আসামি ও সন্ত্রাসীদের বিরত রাখতে নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে আওয়ামী লীগ। দলটির অভিযোগ- বিএনপির পক্ষে অতিমাত্রায় সদয় হয়ে নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের প্রতি নির্দয় আচরণ করছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের নাম করে বিএনপি নির্বাচনে সব সময় বাড়তি সুবিধা নেবে- এটা কখনও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। শুক্রবার ধানম-িতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ। তিনি বলেন, নির্বাচনে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামি ও সন্ত্রাসীরা প্রচারে নেমেছে। আমরা বারবারই ইসিকে বলে এসেছিÑ যাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকা-ের অভিযোগ রয়েছে, যারা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেছে। এরকম চার্জশীটভুক্ত সন্ত্রাসীদের নির্বাচনী প্রচারের দোহাই দিয়ে প্রচারের সুযোগ দেয়ার কোন কারণ নেই। এ সুযোগ দেয়া উচিতও হবে না। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, নির্বাচন কমিশন এসব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা সাংবাদিকদের মাধ্যমে ইসিকে অনুরোধ করছি, বিএনপির এই সন্ত্রাসী ও চার্জশীটভুক্ত আসামি কিংবা যারা বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে পলাতক ছিল তাদের ভোটের অজুহাতে আবার মাঠে নেমে সন্ত্রাসী আচরণ চালাতে দেবেন না। কঠোরহস্তে এদের দমন করুন। ইসি যদি এটা না করে তবে প্রমাণ হবে- বিএনপির পক্ষে অতিমাত্রায় সদয় হয়ে আওয়ামী লীগের প্রতি নির্দয় আচরণ করছে নির্বাচন কমিশন। হানিফ বলেন, বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম, মওদুদ আহমদ সাহেবরা পৌর নির্বাচনে সরাসরি প্রচারে অংশ নিয়েছেন। বিএনপির এই র্শীষ নেতারা কেউ প্রাক্তন মন্ত্রী ছিলেন, কেউ উপ-প্রধানমন্ত্রী আবার কেউ প্রধানমন্ত্রীও ছিলেন। এই নেতারা ভোটযুদ্ধে প্রচারে নেমেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচার করতে পারছেন শুধু জেলা বা থানা পর্যায়ের দলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদকরা। আমাদের কোন মন্ত্রী-এমপিরা নির্বাচনী প্রচারে যেতে পারছেন না। এই অসম পরিবেশকে কি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলা যায়? এমন প্রশ্ন তুলে আওয়ামী লীগের এই নেতা আরও বলেন, এরপরও নির্বাচন কমিশন বারবার বিএনপির প্রতি সদয় হয়ে আমাদের প্রতি নির্দয় আচরণ করে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবারও এজন্য আমরা ইসিতে অভিযোগ করেছি। এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, ইসি সম্পূর্ণ স্বাধীন ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। তাদের সম্পূর্ণ এখতিয়ার আছে এ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করার। এজন্য যা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া দরকার তা তারা নিতে পারেন। আমরা একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে শুধু দাবি করতে পারি। তাই আমরা আশা করি নির্বাচন কমিশন এসকল সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। পৌরসভা নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনে বিএনপির দাবির কড়া সমালোচনা করে মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, তাদের সকল নেতা সুযোগ পেলেই বলছেন, সেনাবাহিনী মোতায়েন ছাড়া নাকি নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। তাদের ভাবখানা এমন যে বাংলাদেশে সেনাবাহিনী ছাড়া কোন নির্বাচন হতে দেখেন নাই। কিন্তু তারা যখন রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল তাদের সময়ে কোন্ নির্বাচনে তারা সেনাবাহিনী নামিয়েছিল- সেই বক্তব্যটা একটু তাদের কাছ থেকে জানতে চাই। বিএনপির প্রতি অনুরোধ জানিয়ে হানিফ বলেন, এ সরকারের অধীনেই আপনারা অনেক স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। আপনারা জয়লাভও করেছেন। সেখানে কিন্তু নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীই ছিল। জনগণ ভোটের মালিক, জনগণ যদি আপনাদের পছন্দ করে রায় দেয় তাহলে জয়লাভ করতে পারবেন। জনগণ রায় না দিলে কোন বাহিনী দিয়েই আপনাদের কাক্সিক্ষত ফল আসবে না। দেশে সম্প্রতি বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলার ঘটনা বিএনপি-জামায়াতের মদদেই হচ্ছে- দাবি করে হানিফ বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করার জন্যই দেশে চোরাগোপ্তা হামলা করা হচ্ছে। বিএনপি শুধু এই দেশে নয়, আন্তর্জাতিকভাবেও যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করার জন্য লবিস্ট নিয়োগ করেছে। তাই আজকে দেশে যে চোরাগোপ্তা হামলা হচ্ছে তার সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক না থাকার তো কোন কারণ নাই। তবে এসব চোরাগোপ্তা হামলা করে নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করা যাবে না। সরকার এবং ইসি শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতা ডাঃ দীপু মনি এমপি, বিএম মোজাম্মেল হক এমপি, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, এ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, এনামুল হক শামিম, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদার প্রমুখ।
×