ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ছায়ানটে ‘হারমনি’র প্রথম মজলিশ

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫

ছায়ানটে ‘হারমনি’র  প্রথম  মজলিশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ঐতিহ্যগত গঠন এবং কৌশলের প্রতি সকলের আগ্রহ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে পেশকার কালচারাল ফোরামের উদ্যোগে শুক্রবার সন্ধায় ধানমন্ডির ছায়ানট বিদ্যায়তনে আয়োজন করা হয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের নতুন আয়োজন ‘হারমনি’। আয়োজনের শুরুতেই এককভাবে তবলায় লহরা তোলেন বাংলার প্রখ্যাত শিল্পী ও ওস্তাদ সুরেশ তালওয়ালকারের শিষ্য চিন্ময় ভৌমিক। সহযোগী হিসেবে হারমোনিয়াম বাজান সঙ্গীত শিক্ষার্থী প্রশান্ত ভৌমিক। চিন্ময়ের পরিবেশনার পর জাদুকরী কণ্ঠে সঙ্গীত পরিবেশন করেন কিরানা ঘরানার শিল্পী, ওস্তাদ করিম শাহাবুদ্দীন। তাঁর সঙ্গে তবলায় সঙ্গত করেন এ সময়ের সুপরিচিত তবলাবাদক, মীর নাকিবুল ইসলাম। অনুষ্ঠানের শেষের দিকে সেতার বাজিয়ে মুগ্ধ করেন কলকাতার প্রসিদ্ধ সঙ্গীত গুরু পন্ডিত পার্থ প্রতিম রায়। এ সময় সহযোগী হিসেবে তবলায় ছিলেন মীর নকিবুল ইসলাম। উপস্থিত দর্শক-শ্রোতারা মন্ত্রমুগ্ধের মতো উপভোগ করেন শিল্পী ত্রয়ীর নান্দনিক পরিবেশনা। পার্থ প্রতিম রায় একজন দক্ষ সেতারবাদক। তিনি বাবা আলাউদ্দিন খানের স্মৃতিরক্ষায় প্রতিষ্ঠিত মইহার ঘরানায় সঙ্গীত শিক্ষা নেন। সেখানে তিনি পি ত রবি শঙ্কর, পি ত নিখিল ব্যানার্জীর মতো কিংবদন্তিতুল্য সাধকদের কাছে সঙ্গীত শিক্ষা লাভ করেন। শৈশব থেকেই সঙ্গীতের প্রতি অপরিমেয় ভালবাসা থেকেই তিনি ব্যানার্জীর উত্তরাধিকার, পি ত দেবীপ্রসাদ চক্রবর্তীর কাছে সেতারে তালিম গ্রহণে আগ্রহী হন। তিনি মাইহার ঘরানায় মৃত পি ত নিহারবিন্দু চৌধুরী এবং মৃত সঙ্গীতাচার্য অজয় সিংহ রায়ের সান্নিধ্য লাভ করেন। তিনি পি ত অনিল পাতিলের কাছে শাস্ত্রীয় তাল সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেন। পার্থ পি ত রবি শঙ্কর এবং পি ত নিখিল ব্যানার্জীর আদর্শে প্রভাব ছাড়াও তিনি ওস্তাদ বিলায়াত খানের সঙ্গীতশৈলী আত্মভূত করেন। তিনি নবীন তারকা হিসেবে ১৯৭৮ সালে কলকাতার রজনী স্টেডিয়ামে ইয়ুথ ফেস্টিভ্যালে তাঁর একক পরিবেশনার মাধ্যমে লক্ষাধিক দর্শককে অভিভূত করেন। ১৯৮০ সালে তিনি কলকাতায় জার্মান কনসোলেটের ম্যাক্স মুলার ভবনে টানা তিন ঘণ্টা সেতার বাজিয়ে সকলকে মুগ্ধ করেন। সম্প্রতি তিনি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রক্ষা এবং বিশ্বজুড়ে তা প্রচারের উদ্দেশ্যে নিজস্ব সঙ্গীত দল ফিউশন মিউজিক ট্রুপ গঠন করেছেন। অন্যদিকে, ফরুখাবাদ ঘরানার নবীন তবলাবাদক মীর নাকিবুল ইসলাম দেশ বিদেশের বহু স্থানে তাঁর একক পরিবেশনায় সকলের মন জয় করেছেন। ভারতে অনুষ্ঠিত ‘ন্যাশনাল তবলা ফেস্টিভ্যাল ২০০৮’ এ তিনি অশোক পালের সঙ্গে একটি ‘জুগলবন্দি’ পরিবেশনা করেন। তিনি গুরুজি অশোক পালের কাছে ১২ বছর তবলায় তালিম নেন। তিনি পি ত গোপাল মিশরার কাছেও সঙ্গীত শিক্ষা নিয়েছে। ছায়ানট সঙ্গীত বিদ্যায়াতনের এই শিক্ষক ত্রয়ী দত্ত, শ্রীঞ্জয় মুখার্জীসহ অনেক আন্তর্জাতিক পর্যায়ের শিল্পীদের সঙ্গে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। তিনি সব শেষ বেঙ্গল ক্লাসিক্যাল মিউজিক ফেস্ট ২০১৫’তে তবলার তালে সকলকে মোহিত করেন।
×