ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ১০ উইকেটের জয় নিউজিল্যান্ডের

গাপটিল ঝড়ে উড়ে গেল শ্রীলঙ্কা

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫

গাপটিল ঝড়ে উড়ে গেল শ্রীলঙ্কা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মার্টিন গাপটিলের ব্যাটিং-ঝড়ে দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও উড়ে গেল শ্রীলঙ্কা। স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের কাছে এবার ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারল এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের দল। টেস্ট ভরাডুবির পর প্রথম ওয়ানডেতেও লজ্জার হারে ব্যাটসম্যানদের দিকে তাকিয়ে ছিল সফরকারীরা। কিন্তু এই ম্যাচেও পুরোপুরি ব্যর্থ তিলকারতেœ দিলশান-লাহিরু থিরিমান্নেরা। কিউই-বোলিং তোপে ২৭.৪ ওভারে মাত্র ১১৭ রানে গুটিয়ে যায় টস জিতে ব্যাটিং নেয়া লঙ্কানরা। জবাবে গাপটিল-তা-বে ৮.২ ওভারে কোন উইকেট না হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় নিউজিল্যান্ড। ৩০ বলে অপরাজিত ৯৩ রানের ‘অতিমানবীয়’ ইনিংস উপহার দিয়ে ‘নায়ক’ যথারীতি গাপটিলই। এ জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ২-০তে এগিয়ে গেল ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম বাহিনী। নেলসনে তৃতীয় ওয়ানডে বৃহস্পতিবার। ক্রাইস্টচার্চের স্কোর কার্ড দেখলে যে কেউ ধন্দে পড়ে যাবেন। মনে সন্দেহ তৈরি হবে খেলাটা আসলে কোন ফরমেটের, ওয়ানডে না টি২০; দৈর্ঘ্য নিয়েও নিশ্চিত প্রশ্ন আসবে! দুটি শক্তিধর দলের মধ্যকার ১শ’ ওভারের একটা ম্যাচ এত অল্প সময়ে শেষ হতে পারে? যেখানে শ্রীলঙ্কার নিদারুণ ব্যর্থতায় ফলের চেয়েও ম্যাচে মূর্ত হয়ে থাকবে নিউজিল্যান্ডের ধুম-ধাড়াক্কা ব্যাটিং। টস জিতে ব্যাটিং নেয়া লঙ্কানদের কোন রকম সুযোগই দেয়নি কিউই বোলাররা। মাত্র ২৭.৪ ওভারে ১১৭ রানে শ্রীলঙ্কাকে ‘শেষ’ করে দেন ম্যাট হেনরি-মিচেল ম্যাকক্লেনঘানরা। হেনরি সর্বাধিক ৪ উইকেট নিয়েছেন ৩৩ রান দিয়ে। পেস আক্রমণে তার সঙ্গী ৩২ রান দিয়ে ৩ শিকারের পথে অতিথিদের একেবারে দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছেন। এই দু-জনের পাশাপাশি ১টি করে উইকেট ডগ ব্রেসওয়েল ও ইস সোধির। ৫৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধ্বংসস্তূপে পতিত ম্যাথুসরা আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। সর্বোচ্চ ১৯ রান এসেছে নুয়ান কুলাসেকারার ব্যাট থেকে। ১৭ রান করে অধিনায়ক ম্যাথুস ও ওপেনার ধানুষ্কা গুণাতিলকার। ৬ ব্যাটসম্যান ফিরেছেন দুই অঙ্কের কোটা না ছুঁয়েই। তবে নিউজিল্যান্ডের রান তাড়াই ম্যাচের মূল আকর্ষণ। ১১৮ রানের জন্য বিশ্বকাপের রানার্সআপদের যে খুব একটা সময় ব্যয় করতে হতো না, সেটি অনুমিতই ছিল। কিন্তু কিউই ওপেনার গাপটিল পুরো বিষয়টাকে এমন ছেলেখেলায় পরিণত করবেন, সেটি আর কে ভেবেছিল? শ্রীলঙ্কার রানটা তিনি একাই তাড়া করলেন। ইনিংসের আয়ু ৮.২ ওভার বা ৫০ বল, যেখানে ৩০ বল মোকাবেলয়ায় ৯৩ রানে অপরাজিত গাপটিল! ২০ বলে ১৭ রানের পথে সঙ্গী টম লাথাম কেবল দর্শক হয়ে ছিলেন। এই ওপেনার যেন আনন্দ-ঝড়ে পড়া বক হয়ে তা-বটা উপভোগ করেছেন! ৩০ বলে অপরাজিত ৯৩Ñএর পথে হাফসেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন ১৭ বলে, এতটুকু জানার পর নিশ্চয়ই রেকর্ড নিয়েও জানতে ইচ্ছে হবে। না, দুর্ভাগ্য গাপটিলের একটি রেকর্ডও গড়া হয়নি। ১২ বলে যখন ৪৬ রান তুলে নেন তখন মনে হচ্ছিল দ্রুততম হাফসেঞ্চুরির নতুন রেকর্ড গড়াটা সময়ের বিষয় মাত্র। কিন্তু নুয়ান কুলাসেকারার ক্রমাগত ইয়র্কারে পরের ৪ রানের জন্য ৫ বল নষ্ট করতে হয়। হাফসেঞ্চুরি পেয়েছেন ১৭ বলে। ওয়নডে ইতিহাসের দ্রুততম হাফসেঞ্চুরির তালিকায় সনাথ জয়সুরিয়ার সঙ্গে যা তাকে বসিয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। তবে নিউজিল্যান্ডের হয়ে রেকর্ডটাকে ঠিকই নিজের করে নিয়েছেন। ওয়ানডে ইতিহাসের দ্রুততম হাফসেঞ্চুরির রেকর্ড এবি ডি ভিলিয়ার্সের দখলে। বছরের শুরুতে জোহানেসবার্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাত্র ১৬ বলে হাফসেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন প্রোটিয়া ‘ডেঞ্জারম্যান’। ৩০ বলে অপরাজিত ৯৩ রানের করতে ৯ চার ও ৮ আকাশা ছোঁয়া ছক্কা হাঁকান গাপটিল। ততক্ষণে দলের জয় নিশ্চিত, নইলে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডটা হয়ত হয়েই যেত! স্ট্রাইকরেট ৩১০। পঞ্চাশোর্ধ রানের ইনিংস খেলা ব্যাটসম্যানের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটের নজির এটি। রেকর্ডগড়া ইনিংসে ডি ভিলিয়ার্সেল স্ট্রাইক রেট ছিল ৩৩৮.৬৩।
×