ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এবার মুন্সীগঞ্জে যৌতুকের বলি হাফজা

প্রকাশিত: ২৩:৪৮, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫

এবার মুন্সীগঞ্জে যৌতুকের বলি হাফজা

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ যৌতুকের বলি হয়েছে এবার টঙ্গীবাড়ী উপজেলার গোপিনপুর গ্রামের আ. মতিন মোল্লার একমাত্র কন্যা হাফজা আক্তার। ঢাকার সাভার উপজেলার নবীনগর গণস্বাস্থ্য ক্লিনিকের সিড়ির নিচ হতে রবিবার রাতে পরিত্যাক্ত অবস্থায় পুলিশটি উদ্ধার করে। ঘটনার পর হতে নিহতের স্বামীর পরিবারের লোকজন পালাতক রয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে-স্বামী হাফেজাকে যৌতুকের কারণে হত্যার পর লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। ২০ লাখ টাকা হাওলাদ দেয়ার পরও স্বামীর দাবীকৃত আরও ১৫ লাখ টাকার যৌতুক নিয়ে বিবাদ চলছিল। পরে লাশের ময়নাতদন্তের পর সোমবার রাতে বাবার বাড়ি গোপিনপুর গ্রামে নামাজের জানাজা শেষে লাশ দাফন করা হয়। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, হাফজা আক্তারের (২৮) সাথে একই উপজেলার বড়াইল গ্রামের ইসলাম মাদবর খোকনের ছেলে হানিফ মাদবরের (৩২) চার বছর আগে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। তাদের দুই অবুঝ পুত্র জায়েদ (৩) ও জাবেদ (৫মাস) এখন নির্বাক। বিয়ের সময় ২১ভরি স্বর্ণালঙ্কারসহ ৫ লাখ টাকার ফর্নিচারসহ নানা সামগ্রী প্রদান করে কনের বাবা। পরে ঢাকা জেলার নবীনগর উপজেলার জালালাবাদ আশুলিয়ায় স্থানীয়ভাবে বসবাস করতে শুরু করে এই দম্মতি। বিয়ের দু’বছর পর হতেই বিভিন্ন সময় বাবার বাড়ি হতে টাকা পয়সা এনে দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে স্বামী হানিফ। পরে এনিয়ে বিভিন্ন সময় শালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। নিহতের বড় ভাই শফিকুল ইসলাম টেন্টু জানান, আমার একমাত্র বোন জামাই ও তার পরিবার আগে যৌতুকের জন্য বোনকে প্রায়ই নির্যাতন করতো। পরে সে আমার কাছে ধার হিসাবে ২০ লাখ টাকা চায়। প্রায় ৬ মাস আগে তাকে ধার হিসাবে ২০ লাল টাকা দেই। ২০ লক্ষ টাকা দেওয়ার পরে গত দু’ মাস আগে সে আরো ১৫ লাখ টাকা ধার চায়। এনিয়ে কয়েকবার গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের মাধ্যমে বিচার শালিশ হয়। বোন হাফজা নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে এক মাস আগে বাবার বাড়ি চলে আসে। পরে এনিয়ে আবারও শালিশ হয়। শালিশের পরে বোন জামাই আমার বোনকে তার বাসায় নিয়ে যায়। রবিবার রাতে প্রতিবেশীর মোবাইল ফোনে জানতে পারি বোন মারা গেছে। পরে স্বামী ও তার আতীœয়দের মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। রবিবার রাত ৩টায় নবীনগর গণস্বাস্থ্য ক্লিনিকের সিড়ির নিচ হতে আমার বোনের লাশ উদ্ধার করে নবীনগর থানায় নিয়ে যাই এবং ওই থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। পরে পুলিশ আমার বোনের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে প্রেরণ করলে ওইখানে ময়নাতদন্ত শেষে আমাদের গ্রামের বাড়ির নুরপুর কবরস্থানে লাশ দাফন করি। এ ব্যাপারে হানিফ মাদবর ও তার পিতা ইসলাম মাদবর এর মোবাইলে একাধিকবার ফোন করেও মোবাইল বন্ধ পাওয়া গেছে। ওই মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা নবীনগর থানার এসআই অভিজিৎ চৌধুরী জানান, নিহতের গলায় গভীর দাগ ছিলো। আপাতত অপমৃত্যূ মামলা হয়েছে। তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
×