ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মাহমুদা সুবর্ণা

জোকোভিচ-সেরেনার জয় জয়কার

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৫

জোকোভিচ-সেরেনার জয় জয়কার

এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই যে, গত কয়েক মৌসুমে টেনিস বিশ্বে পুরুষ এককে রাজত্ব করেছেন রজার ফেদেরার, রাফায়েল নাদাল আর নোভাক জোকোভিচ। কিন্তু ত্রিমূর্তির সেই ধারাবাহিক পারফর্মেন্সের যেন সমাপ্তি ঘটেছে এই বছরে। এই মৌসুমের সব আলোই এককভাবে কেড়ে নিলেন নোভাক জোকোভিচ। ১১টি শিরোপা জিতে এই মৌসুম শেষ করেন সার্বিয়ার এই টেনিস তারকা। যার মধ্যে রয়েছে তিনটি গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্ট। ফ্রেঞ্চ ওপেন ছাড়া বাকি তিন মেজর টুর্নামেন্টের সবক’টিতেই শিরোপা জয়ের উল্লাসে মেতেছেন তিনি। সবমিলিয়ে ৮২টি ম্যাচ জেতা জোকোভিচ এই বছরে হেরেছেন মাত্র ছয়টিতে। মৌসুমের দ্বিতীয় গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্ট ইউএস ওপেনে না হারলে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ‘ক্যালেন্ডার সøাম’ জয়ের রেকর্ডটাও গড়ে ফেলতেন তিনি। কিন্তু তা আর হতে দিলেন না স্টানিসøাস ওয়ারিঙ্কা। বছরের পুরোটা সময়জুড়েই এককভাবে নিজের শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ করা সার্বিয়ান তারকা শেষ চমকটা দেখিয়েছেন এটিপি ট্যুর ফাইনালসে। ফাইনালে পুরনো ‘শত্রু’ রজার ফেদেরারকে হারিয়ে। বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের নাম্বার ওয়ান তারকা জোকোভিচ শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে ফেদেরারকে হারিয়ে রেকর্ড বইয়ে নিজের নামটিকে তুলে নেন। ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে টানা চারবার এটিপি ওয়ার্ল্ড ট্যুর ফাইনালসের শিরোপা জিতে। আর এই ট্যুর ফাইনালস জিতেই ২০১৫ সালটা শেষ করেন তিনি। যে কারণে জোকোভিচও স্বীকার করেন যে এটাই তার ‘ক্যারিয়ার সেরা বছর’। এ বছরই ক্যালেন্ডার সøাম জয়ের হাতছানি ছিল জোকোভিচের সামনে। চারটি গ্র্যান্ডসøামের তিনটিই (অস্ট্রেলিয়ান, উইম্বলডন ও ইউএস ওপেন) জেতেন তিনি। শুধু ফ্রেঞ্চ ওপেনের ট্রফিটা উচিয়ে ধরতে পারেননি শীর্ষ তারকা। তবে দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিলেন ঠিকই। সেই টুর্নামেন্টের ফাইনালে সুইস তারকা স্টানিসøাস ওয়ারিঙ্কার কাছে শিরোপা হাতছাড়া হয়ে যায় তার। কিন্তু তাতে মোটেও আফসোস নেই তার। তবে এটিপি ট্যুর ফাইনালসে খেলার স্বপ্নটা শৈশব থেকেই দেখতেন জোকোভিচ। যে কারণে এই টুর্নামেন্টের শিরোপা ধরে রেখে বছর শেষে করতে পেরেই দারুণ রোমাঞ্চিত জোকোভিচ। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কোর্টের প্রতিটি মুহূর্তই উপভোগ করেছি। এখানে খেলার ইচ্ছেটা শৈশব থেকেই ছিল। আমার দলের সঙ্গে এই ট্রফিটা জিততে পেরে আমি গর্বিত। প্রকৃতপক্ষে এটাই আমার ক্যারিয়ারের সেরা বছর।’ নোভাক জোকোভিচের মতো সেরেনা উইলিয়ামসের গল্পটাও এক। স্বপ্নের খুব কাছাকাছি পৌঁছার পরই হাতছাড়া হয়ে গেল প্রথমবারের মতো ‘ক্যালেন্ডার সøাম’ জয়ের বিরল কীর্তিটা। তারপরও রোমাঞ্চ ছুঁয়ে গেছে সেরেনাকে। এই মৌসুমেই যে তিনটি গ্র্যান্ডসøাম জিতে নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। এ বছরে ৫৩ জয়ের বিপরীতে আমেরিকান কিংবদন্তির পরাজয় মাত্র তিনটিতে। তবে সেরেনা উইলিয়ামস চোট আর ক্লান্তির কারণে শেষ মুহূর্তে সরে দাঁড়ান। তবে কোর্টে ফেরার ঘোষণাটাও ইতোমধ্যে দিয়ে দিয়েছেন তিনি। নতুন বছরে পার্থে অনুষ্ঠিতব্য প্রথম টুর্নামেন্ট হপম্যান কাপ দিয়েই কোর্টে ফিরবেন আমেরিকান টেনিসের এই জীবন্ত কিংবদন্তি। সেরেনাকে অনেকেই তুলনা করে থাকেন পুরুষ খেলোয়াড়দের সঙ্গে। এ বছর ফ্রেঞ্চ ওপেন, অস্ট্রেলিয়ান ওপেন এবং সর্বশেষ উইম্বলডনের শিরোপা দিয়ে থেমে যায় তার জয়রথ। এই যাত্রাপথে ‘ছোট-খাটো’ ট্রফি তো ছিলই, মার্কিন কৃষ্ণকলি চলেছেন রেকর্ডের ফুলঝুরি ছুটিয়ে। প্রকৃতপক্ষে এমনটা বোধহয় শুধু সেরেনা উইলিয়ামসই পেরেছেন! গত বছরের ইউএস ওপেন থেকে শুরু করে এবার ফরাসী, অস্ট্রেলিয়ান ও শেষে উইম্বলডনের ট্রফি ঘরে তুলেছেন বিশ্বের এক নাম্বার মার্কিন মহিলা টেনিস তারকা।
×