ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাংক কর্মকর্তার ঋণ প্রতারণা ॥ বিপাকে বিধবা কিষানি

প্রকাশিত: ০৪:৩৩, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫

ব্যাংক কর্মকর্তার ঋণ প্রতারণা ॥ বিপাকে বিধবা কিষানি

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ মোল্লাহাটে অক্ষরজ্ঞানহীন এক কৃষাণীকে কৃষি ব্যাংকের লোন দেয়ার নামে চাঞ্চল্যকর প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক মোল্লাহাট শাখার দুর্নীতিবাজ এক কর্মকর্তার অভিনব লোন প্রতারণার শিকার হয়ে অক্ষরজ্ঞানহীন বিধবা ওই ভূমিহীন কৃষাণী এখন সন্তানদের নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। ওই ঘটনায় দুর্নীতিবাজ ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে তাকে রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। উপজেলার গাংনী গ্রামের মৃত বাদল বিশ্বাসের স্ত্রী ক্ষেতমজুর রেখা বিশ্বাস জানান, প্রায় দুই বছর আগে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি তার আশ্রয়স্থলে (অন্যের জমিতে বসতঘর) গিয়ে তাকে বলেন, কৃষি ব্যাংক মোল্লাহাট শাখার আইও নেছার উদ্দিনের সঙ্গে দেখা করলে তিনি তাকে আর্থিক সাহায্য করতে পারেন। সে মোতাবেক দেখা করলে আইও নেছার সাহেব বলেন, ছবি এবং সন্তানদের তালিকা দিলে দু-একদিনের মধ্যে কিছু টাকা অনুদান দিতে পারবেন। ওই দিনই কৃষি ব্যাংক মোল্লাহাট শাখার অদূরে হাসপাতাল মোড়ের এক দোকান থেকে ছবি তুলে নেছারের নিকট দিলে তিনি বলেন, অনুদানের টাকা রেডি করতে একটু সময় লাগবে এবং কিছু খরচাপাতি লাগে। তখন অভাব-অনটনের কথা বলতেই তিনি তার মোবাইল নম্বর দিয়ে বলেন, ঠিক আছে তুমি ফোন করে আসবা, আমি রেডি করি। পরে মোবাইলে যোগাযোগ করলে ৫-৬ দিন পর অক্ষরজ্ঞানহীন ওই কৃষাণীকে ব্যাংকে ডেকে নিয়ে কয়েকটি টিপ রেখে ব্যাংকের বাইরে অপেক্ষা করতে বলেন। পরে আইও নেছার সেখানে গিয়ে তার হাতে পাঁচ হাজার টাকা দেন এবং বলেন, খরচের টাকা রেখে এই টাকা দিলাম। বর্তমানে ওই ব্যাংকের আইও মিরাজুল ইসলাম তার স্থলে বদলি হয়ে আসার পর রেখা বিশ্বাসকে লোন পরিশোধের জন্য চাপ দেন। রেখা বিশ্বাসকে বলছেন, তিনি নিজের পরিচয় গোপন রেখে কেবল ছবি এবং আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে চিনিয়ারা নামের অন্য এক নারীর পরিচয়ে ৮০ হাজার টাকা লোন নিয়েছেন। এমনকি ওই মুসলিম নারীর নিজস্ব জমিও লোন হিসেবে বন্ধক দেখানো হয়েছে। ব্যাংক কর্মকর্তার লোন প্রতারণা থেকে মুক্তির দাবিতে অক্ষরজ্ঞানহীন রেখা বিশ্বাস আরও বলেন, নিজস্ব কোন জমি/বসতবাড়ি না থাকায় অন্যের আশ্রয়ে থেকে তিনি ও তার এক মেয়ে এবং এক ছেলে বিভিন্ন লোকের জমিতে (ক্ষেত-খামারে) শ্রম বিক্রি করে সংসার চালানোসহ অতিকষ্টে এক মেয়েকে পড়ালেখা করাচ্ছেন। অভিযুক্ত ব্যাংক কর্মকর্তা নেছার উদ্দিন মোবাইল ফোনে জানান, গাংনী এলাকার জনৈক দালালকে বিশ্বাস করে তিনি বেকায়দায় পড়েছেন, কেবল রেখা বিশ্বাস ও চিনিয়ারাই নয়, তার সরলতার সুযোগে ওই দালাল মোট ১৩টি লোন তাকে দিয়ে করিয়েছেন, যার সবই হেড অফিসের মাধ্যমে তদন্ত চলছে। বর্তমান শাখা ব্যবস্থাপক বলেন, যেহেতু রেখা বিশ্বাসের সংশ্লিষ্টতা আছে, সেহেতু বর্তমান আইও তার কাছে গেছেন। এছাড়া নেছারের বেশকিছু লোনে সমাস্যা রয়েছে। চরফ্যাশনে আরও প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা কো-আইডির অস্ট্রেলীয় সাহায্য সংস্থা কো-অপারেশন ইন ডেভেলপমেন্ট (কো-আইডি) ভোলা জেলার উপকূলীয় উপজেলা চরফ্যাশনে তার প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নেটওয়ার্ক আরও বৃদ্ধি করছে। ২৯ ডিসেম্বর এই উপজেলার দক্ষিণ জাহানপুর গ্রামে একটি নতুন প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের কাজ শুরু করা হয়েছে। এটি হবে এ উপজেলায় কো-আইডি প্রতিষ্ঠিত ৮ম প্রাক-প্রাথমিক স্কুল। কো-আইডির চেয়ারম্যান ড. ওলাভ মুরলিঙ্ক জানান, আগামী দু’বছরে এ ধরনের আরও কয়েকটি স্কুল এ উপজেলায় প্রতিষ্ঠা করা হবে। প্রাক-প্রাথমিক স্কুলে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের শিক্ষা দেয়া হয়। নতুন এসব প্রাক-প্রাথমিক স্কুল কো-আইডি প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত ৪১টি প্রাথমিক স্কুল সংলগ্ন স্থানে তৈরি করা হচ্ছে। কো-আইডির এসব প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্কুল বাংলাদেশের উপকূল এলাকায় শিক্ষা বিস্তারে প্রভূত অবদান রাখছে। উল্লেখ্য, ফ্রেড হাইড নামের একজন অস্ট্রেলীয় নাগরিক বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ১৯৭০ সালের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের পর এসব স্কুল প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দেন। সেই ঘূর্ণিঝড়ে চরফ্যাশন উপজেলাতেই কয়েক হাজার লোক প্রাণ হারিয়েছিলেন। বাজেটের দিক দিয়ে কো-অপারেশন ইন ডেভেলপমেন্ট (ইনক) অস্ট্রেলিয়া, অপেক্ষাকৃত একটি ছোট সাহায্য সংস্থা হলেও সহযোগিতার মাত্রা বিচার করলে এর অবদান অনেক। বর্তমানে ১৩ হাজার ৬শ’ শিশু এসব স্কুলে লেখাপড়া করছে। অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন স্কুলের ছেলেমেয়েদের দানের অর্থে এসব স্কুল পরিচালিত হয়। শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলিয়ে বাংলাদেশে কো-আইডির স্টাফ ১৭৭ জন। অস্ট্রেলিয়ায় কো-আইডির পরিচালনা বোর্ডে রয়েছেন ১৬ জন স্বেচ্ছাসেবী সদস্য। এর মধ্যে তিনজন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত। -বিজ্ঞপ্তি।
×