ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জীবনযুদ্ধে জয়ী পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা আফসার উদ্দিন

প্রকাশিত: ০৪:৩৪, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫

জীবনযুদ্ধে জয়ী পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা আফসার উদ্দিন

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ মাত্র চার বছর বয়সে টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের গোয়েন্দা সৈনিক আফসার উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী পঙ্গুত্বের কাছে হার মানেন। ১৯৫০ সালের ৩১ ডিসেম্বর ফটিকছড়ির দৌলতপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতামাতাহারা হলেও পঙ্গুত্ব নিয়ে দীর্ঘ জীবন পাড়ি দিয়ে চলেছেন এই গোয়েন্দা সৈনিক। টাইফয়েডে তিনি গ্রাম্য ডাক্তারের অপচিকিৎসায় পঙ্গুত্বের কাছে হার মানেন। তবে জ্ঞানের প্রতি তার আকর্ষণ ছিল সীমাহীন। ১৯৭০ সালে ফটিকছড়ির কাঠিরহাট চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগ থেকে ফার্স্ট ডিভিশনে উত্তীর্ণ হন। ১৯৭১ সালে দেশমাতৃকার টানে পাকি হানাদারদের কাছ থেকে মাতৃভূমিকে রক্ষায় তিনিও পঙ্গুত্বের অভিশাপ কোলে নিয়ে গোয়েন্দাগিরিতে যুক্ত হন। তার কাজ ছিল পাকিদের গোপন তথ্য মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পৌঁছে দেয়া। পঙ্গু হওয়ার কারণে তখন তাকে পাকিরাও সন্দেহের চোখে দেখত না। তিনি তখন হুইলচেয়ারে নয়, হাতে কাঠের জুতো ও হাঁটুতে রাবারের টুকরা লাগিয়ে চলাচল করতেন। গ্রামের পর গ্রাম পেরিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের গোপন স্থানে পৌঁছে দিতেন খবর। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট পেলেও শেষ পর্যন্ত তা হারিয়ে ফেলেছেন। ব্যাচেলর ডিগ্রীও লাভ করে। চাকরির চেষ্টা করলেও পঙ্গুত্বের অভিশাপে তাও জোটেনি। মাতৃভূমি দৌলতপুরেই গড়ে তোলেন শাপলা কোচিং সেন্টার নামে একটি শিক্ষাকেন্দ্র। এ থেকে আয়ের পথটি খুললেও অভিশপ্ত জীবনে আর আশার আলো দেখার সুযোগ ছিল না। ১৯৮০ সালের মাঝামাঝি সময়ে এক দানবীরের সহায়তায় ঢাকার মোহাম্মদপুর জাকির হোসেন সড়কে বিহারীদের একটি জরাজীর্ণ বাড়িতে কোচিং সেন্টার খোলেন। সেখানে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ানো হতো। এ অবস্থায় পার করেছেন চার বছর। এদিকে, ’৮৫ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ঢাকায় একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। তিনি এ পর্যন্ত ১৭টিরও বেশি বই, প্রবন্ধ, উপন্যাস, কবিতা, ছড়া, গল্প লিখে ফটিকছড়ির মানুষের কাছে চিরচেনা হয়েছেন। ২০১১ সালে সাহিত্য ও গবেষণায় মহাকবি নবীন চন্দ্র সেন স্মৃতিপদক লাভ করেছেন তিনি। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষার ওপর লেখা ছাড়াও তার রয়েছে অনেক গবেষণা ও চর্চার পা-ুলিপি। আর্থিক অনটনের কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তার লেখা অনেক কবিতা-ছড়ার পাতা। তার এ জ্ঞানচর্চা তুলে ধরতে আকুতি জানিয়েছেন বাংলা একাডেমির প্রতি। পঙ্গুত্বের কোলে বসে জ্ঞানচর্চার যে অবিরত মজুদ রয়েছে সেজন্য তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার অথবা একুশে পদক নির্ধারণের বিচারকম-লীর দৃষ্টিও আকর্ষণ করেছেন। এলাকায় প্রতিবন্ধিতার অভিশাপ যেন অন্যের ঘাড়ে আর না চাপে সেজন্য তিনি ‘ব্রাইট ডিজএ্যাবল ফাউন্ডেশন’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। এ প্রতিষ্ঠানে প্রতিবন্ধীর সংখ্যা প্রায় ৫০। দেশী-বিদেশী কোন অনুদান না থাকলেও স্থানীয়দের সহায়তায় চলছে প্রতিষ্ঠানটি। এ পর্যন্ত তিনি অনেককে পঙ্গুত্বের অভিশাপ মুক্ত করতে মোহরার একে খান গ্রুপের মালিকানাধীন সিপিএ হাসপাতাল থেকে অনেককেই কাঠের তৈরি পা লাগিয়ে দেয়ার সুযোগও করে দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ভার্সিটিতে সভা দেশের প্রথম এবং বিশেষায়িত মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের সিন্ডিকেটের ষষ্ঠ সভা সোমবার মিরপুর পল্লবীর বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর রিয়ার এ্যাডমিরাল এএসএম আব্দুল বাতেন বিএসপি, এনডিসি সভাপতিত্ব করেন। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করা হয়। -বিজ্ঞপ্তি
×