ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয়

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫

আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ২৩৪ পৌর নির্বাচনে রাত আড়াইটায় সর্বশেষ ফল অনুযায়ী আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছে। সারাদেশে ২৩১ পৌরসভার মধ্যে ১৭৮টিতে আওয়ামী লীগ, ১৮টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী এবং ২৪টিতে বিএনপি, বিএনপি বিদ্রোহী ১, জাতীয় পার্টি ২ পৌরসভায় মেয়র পদে জয়লাভ করেছে। এছাড়া জামায়াত ২ ও স্বতন্ত্র ৬ জন সব মিলিয়ে ২৩১ পৌরসভায় বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে নরসিংদীর মাধবদী পৌরসভার নির্বাচন বাতিল করেছে ইসি। অবশ্য ২৩৪ পৌরসভার মধ্যে সাতটিতে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা আগেই জয়লাভ করেন। এদিকে দু’-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সারাদেশে পৌর নির্বাচন উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে। সকাল থেকে ভোটারদের দলে দলে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে ভোট দিতে দেখা গেছে। মহিলা ভোটারদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। বেশিরভাগ পৌরসভায় সকাল ৮ টা থেকে ১২টার মধ্যে অর্ধেকের বেশি ভোটার ভোট প্রদান করেন। তবে কিছু কিছু কেন্দ্রে সকাল থেকে বিচ্ছিন্ন হামলা, ভাংচুর, সংঘর্ষ, কেন্দ্র দখল ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় প্রতিপক্ষের হামলায় নুরুল আমিন (৪৭) নামে একজন নিহত হন। দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকের সংঘর্ষের সময় প্রতিপক্ষের গুলিতে তার মৃত্যু হয়। এদিকে নানা অনিয়ম ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় নরসিংদীর মাধবদী পৌরসভার ভোট বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। একই সঙ্গে ১৩ পৌরসভার ৩৬ কেন্দ্রে গোলযোগ ও অনিয়মের কারণে ভোটগ্রহণ স্থগিত করে দেয়া হয়। ভোটে অনিয়মের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে দুই জেলায় পুলিশের পাঁচ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছে ইসি। এদিকে পৌর নির্বাচনে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও ভোটার উপস্থিতি নিয়েও সন্তুষ্ট তারা। তবে বিচ্ছিন্ন এসব ঘটনা বাদ দিলে সার্বিকভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে পৌর নির্বাচন্ন সম্পন্ন হয়েছে। এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও কেন্দ্র দখল, জাল ভোট প্রদান ও ভোট কারচুপির মতো ঘটনা খুব কমই ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তার মধ্যে সকাল ৮টা থেকেই ২৩৪ পৌরসভায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। শীতের সকালে ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে ভোটার ভোটকেন্দ্রে আসতে থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি অনেক বেড়ে যায়। তবে দুপুরের পর থেকে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম হতে থাকে। সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং অফিসার জানিয়েছে, বেলা ১২ টার মধ্যে বেশিরভাগ ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। কোন কোন এলাকায় পুরুষের চেয়ে নারী ভোটারের উপস্থিতি বেশি লক্ষ্য করা যায়। এ নির্বাচনে কিছু কিছু কেন্দ্রের বাইরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ইসি জানিয়েছে, যেসব ভোটকেন্দ্রে গোলযোগের খবর পাওয়া গেছে সঙ্গে সঙ্গে সেসব কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া যারা ভোট কারচুপি, জাল ভোট দেয়া এবং কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত অনেকের জেলজরিমানাও করেছে। নির্বাচন কমিশন সন্তুষ্ট ॥ এদিকে পৌর নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে ইসি। কমিশনার আবু হাফিজ সাংবাদিকদের বলেন, ভোটের ময়দানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ও পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্ট নির্বাচন কমিশন। এছাড়াও তিনি ভোটার উপস্থিতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, কমিশন কোন অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এবার দলীয় ভোট হচ্ছে, ভোটার উপস্থিতি একটু বেশিই থাকবে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ৭ মেয়র প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। এছাড়াও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৯৪ এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৪০ প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। ফলে এসব পদের জন্য বুধবার ভোট গ্রহণের প্রয়োজন পড়েনি।
×