ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

তৃতীয় ওয়ানডেতে নিউজিল্যান্ড পরাজিত ৮ উইকেটে

বিশাল জয়ে সিরিজে টিকে থাকল শ্রীলঙ্কা

প্রকাশিত: ০৫:০০, ১ জানুয়ারি ২০১৬

বিশাল জয়ে সিরিজে টিকে থাকল শ্রীলঙ্কা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টানা দুই ম্যাচে বিন্দুমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেনি সফরকারী শ্রীলঙ্কা। হেরে গেছে খুব বাজেভাবে। বৃহস্পতিবার ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াই ছিল তাদের জন্য। কারণ হারলেই সিরিজ জিতে যেত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। সে লড়াইয়ে দুর্দান্ত এক জয় তুলে নিয়েছে তারা। বলা যেতে পারে অন্তত একটি উপযুক্ত প্রতিশোাধ নিতে পেরেছে লঙ্কানরা। সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে ৮ উইকেটে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ব্যবধান ২-১ করেছে তারা। প্রথম ব্যাট করে ৮ উইকেটে ২৭৬ রান তোলে কিউইরা। জবাবে ৪৬.২ ওভারে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ২৭৭ রান তোলে সফরকারীরা। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে ব্যাটিং-বোলিং কোনটাই যুতসই হয়নি লঙ্কানদের। ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হওয়ার পর আর বোলাররা পাত্তা পায়নি স্বাগতিক দলের ব্যাটসম্যানদের আক্রমণাত্মক মেজাজের কাছে। একেবারেই অসহায় আত্মসমর্পণ করে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে সফরকারীরা। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছিল তৃতীয় ওয়ানডেতে। হারলেই ৫ ম্যাচের সিরিজে আগেভাগে পরাজয়। জ্বলে ওঠার বিকল্প নেই। নেলসনের স্যাক্সটন ওভালে সফরকারী লঙ্কানদের সেটাই হলো। ব্যাটে-বলে জ্বলে উঠল তারা। টস জিতে এদিন অবশ্য কিউইরা ব্যাট হাতে তুলে নিয়েছিল। আগের দুই ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের সাফল্য ও বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের জন্যই হয় তো অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন এমন সিদ্ধান্ত নেন তাদের আরও সুযোগ করে দিতে। শুরুটা বেশ গতিময়ই হয়েছিল। তবে ওপেনার মার্টিন গাপটিল বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। তিনি ২৮ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৩০ রান করে বিদায় নেন। কিন্তু দ্বিতীয় উইকেটে ৬০ রান যোগ করে টম লাথাম ও উইলিয়ামসন ভাল একটি ভিত গড়ে দিয়েছিলেন। সে সময়ই দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে লঙ্কান বোলাররা। দ্রুতই কয়েকটা উইকেট তুলে নেয় তারা। ১ উইকেটে ১০২ থেকে মাত্র ৬১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ৫ উইকেটে ১৬৩ রানে পরিণত হয় নিউজিল্যান্ড। রানের গতি রাখতে গিয়েই মূলত এত দ্রুত উইকেট খুইয়ে ফেলে বিপদে পড়ে কিউইরা। উইলিয়ামসন ৭৩ বলে ৭ চারে ৫৯ রান করে বিদায় নেন। এরপর নিউজিল্যান্ড লড়াকু এক সংগ্রহ পেয়েছে মূলত মিচেল স্যান্টনারের ৪৬ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ৩৮ ও ডগ ব্রেসওয়েলের ৩৪ বলে ২ চারে ৩০ রানের দুটি মাঝারি মানের ইনিংসের সুবাদে। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৭৬ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পায় কিউইরা। জবাব দিতে নেমে শুরু থেকেই কিউই বোলারদের ওপর চড়াও হন লঙ্কান ওপেনাররা। দারুণ আক্রমণাত্মক ছিলেন দানুস্কা গুনাথিলাকা। তরুণ এ বাঁহাতি মাত্র ৪৫ বলে ৭ চার ও ৪ ছক্কায় ৬৫ রানের একটি ঝড়ো ইনিংস খেলে বিদায় নেন। ততক্ষণে উদ্বোধনী জুটিতে অভিজ্ঞ তিলকারতেœর সঙ্গে তিনি যোগ করেছেন ৯৮ রান। আগের দুই ম্যাচে রান পাননি দিলশান। তবে এদিন দিনিও ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠেন। এগিয়ে যাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির পথে। কিন্তু মাত্র ৯ রান দূরে থাকতে দুর্ভাগ্যজনকভাবে রানআউটের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। দিলশান ৯২ বলে ৯ চারে করেছিল ৯১ রান। লাহিরু থিরিমান্নের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে তিনি গড়েন ১১১ রানের বড় জুটি। এ জুটির কল্যাণেই জয়ের পথ পেয়ে যায় লঙ্কানরা। থিরিমান্নেও দারুণ ব্যাট করেছেন। তিনি ১০৩ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় ৮৭ রান করে অপরাজিত থাকেন। শেষ পর্যন্ত তার সঙ্গে ছিলেন দিনেশ চান্দিমাল। তিনি ৩৯ বলে ১ চারে ২৭ রান তুলে অপরাজিত থাকেন। তবে শুরুতেই ৬৫ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে দলকে ভাল সূচনা দেয়ার জন্য ম্যাচসেরা হন তরুণ গুনাথিলাকা। ৩ ওভার ৪ বল বাকি থাকতেই মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ২৭৭ রান তুলে বড় জয় পেয়ে যায় লঙ্কানরা। দারুণ এ জয়ের পর সন্তুষ্ট অধিনায়ক এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস বলেন, ‘সিরিজে টিকে থাকার জন্য এটা আমাদের অবশ্যই জিততে হতো। আমরা ভাল বোলিং করে তাদের একটি তাড়া করার মতো সংগ্রহে আটকে রাখতে পেরেছি। এরপর ব্যাটসম্যানরাও ভাল করেছেন। আমরা আগের দুই ওয়ানডের চেয়ে অনেক ভাল করেছি। এটাই ধরে রাখার চেষ্টা করব।’
×