ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচকদের দৃষ্টিতে আমির অনেকের চেয়ে ভাল

প্রকাশিত: ০৫:০১, ১ জানুয়ারি ২০১৬

নির্বাচকদের দৃষ্টিতে আমির অনেকের চেয়ে ভাল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফিক্সিং কলঙ্ক তার নামের সঙ্গে মিশে আছে। কারাভোগ এবং নিষেধাজ্ঞা দুটোরই সম্মুখীন হতে হয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানী পেসার মোহাম্মদ আমির আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে আসার যে লড়াইয়ে আছেন সেটা ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এমনকি আগামী মাসে নিউজিল্যান্ড সফরের জন্য ঘোষিত প্রাথমিক দলে তার ঠাঁই পাওয়াকে চ্যালেঞ্জ করে লাহোরের উচ্চ আদালতে রিটও হয়েছে। সবকিছুই পেছনে ফেলে এখন নতুন করে শুরুর অপেক্ষায় আমির। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) শুরু থেকেই ২৩ বছর বয়সী এ তরুণের পক্ষে আছে। আর এবার জাতীয় দলের নির্বাচকরা জানালেন অন্য অনেক ক্রিকেটারের চেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে ভাল আমির। অনেক ধরনের বিপত্তির মুখে পড়তে হয়েছে আমিরকে। ২০১০ সালে ইংল্যান্ড সফরে যে স্পট ফিক্সিং বিতর্ক তাতে ফেঁসে যান তখন মাত্র ১৮ বছর বয়সী এ পেসার। স্পট ফিক্সিংয়ে যুক্ত হওয়ার কারণে ক্ষমা প্রার্থনা করা ছাড়াও পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার অধীনে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রমে অংশ নিয়েছেন আমির। সে কারণে তার ওপর সন্তুষ্ট পিসিবি। আর ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার পথ উন্মুক্ত হওয়া আমির ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজের যোগ্যতা ও সামর্থ্যও প্রমাণ করেছেন। সে কারণে তিনি দ্রুতই জাতীয় দলে ফিরবেন এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু প্রথমবার জাতীয় দলের ক্যাম্পে ডাক পেয়েই বিতর্ক জন্ম দিয়েছেন আমির। কেউ তাকে আবারও ফিরে চায়, আবার কেউ তাকে না ফেরানোর পক্ষে। আর বর্তমান জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে অধিনায়ক আজহার আলী ও মোহাম্মদ হাফিজ তো পুরোপুরিই আমিরকে মেনে নিতে পারছেন না। এ কারণে দলের ফিটনেস ক্যাম্প বয়কটও করেছিলেন দু’জন। যদিও পিসিবির চেয়ারম্যান শাহরিয়ার খান এ দুই ক্রিকেটারের সঙ্গে কথা বলে রাজি করিয়েছেন পুনরায় ক্যাম্পে যোগ দেয়ার এবং আজহার-হাফিজও সম্মত হয়েছেন। আর এক আইনজীবী তো পাক জাতীয় দলে আমিরের স্থান পাওয়ার বিষয়টির ওপর স্থগিতাদেশ ও কতটা যৌক্তিক তা জানতে চেয়ে রিটও করেন। তবে আদালতও সেটা খারিজ করে দিয়েছে। সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই আবার জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চড়ানোর অপেক্ষায় আছেন আমির। আইসিসির ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার অনেক আগেই তার জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায় ঘরোয়া ক্রিকেট। তারপর থেকে বেশ ছন্দেই আছেন আমির। এ কারণে পিসিবি যেভাবেই হোক তাকে ফেরাতে চাইছে। ২০১০ সালে আমির নিষিদ্ধ হওয়ার পর তিন ফরমেটে পাকিস্তান ১৪ ফাস্ট বোলারকে খেলিয়েছে। এর মধ্যে শুধু ওয়াহাব রিয়াজই নিজের জায়গাটা দীর্ঘদিন ধরে রাখতে পেরেছেন এবং মোটামুটি স্থায়ী তিনি। উমর গুল এ সময়টাতে ইনজুরির সঙ্গে পাল্লা দিতেই পার করেছেন। জুনাইদ খান খুব ভাল শুরু করলেও ধারাবাহিকতা রাখতে ব্যর্থ হয়ে গত জুন থেকেই দলের বাইরে। রাহাত আলী যথেষ্ট ভাল হলেও অপরিহার্য হয়ে উঠতে পারেননি। ইমরান খান ও মোহাম্মদ ইরফানের ফিটনেস সমস্যা আছে। কিন্তু আমির বর্তমানে দারুণ ফিট এবং ঘরোয়া আসরগুলোয় বেশ ফর্মে আছেন। এ জন্য নির্বাচকরা তার প্রতি দারুণ মনোযোগী। প্রধান নির্বাচক হারুন রশিদ বলেন, ‘আমরা অন্য কোন খেলোয়াড়কে ছোট করছি না। কিন্তু অবশ্যই সাধারণ খেলোয়াড় ও অসাধারণ খেলোয়াড়ের মধ্যে একটা পার্থক্য আছে। আমিরকে ফেরাতে অন্য কাউকে আমরা ছুড়ে ফেলব না। শুধু তিনি বোলিংই করেন বিষয়টা এমন নয় অলরাউন্ডার হিসেবেও সে অনেক ভাল। আমরা এমন খেলোয়াড়ই চাই। সেদিক থেকে চিন্তা করলে আমির অনেকের চেয়ে ভাল।’
×