ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাজারে এলো ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ ভিটা চাল

প্রকাশিত: ২২:২৬, ২ জানুয়ারি ২০১৬

বাজারে এলো ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ ভিটা চাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মাসাফি এগ্রো গ্রুপ ইন্ডাষ্ট্রিজ বাজারে নিয়ে এলো ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ ভিটা চাল। শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ভিটা চাল বাজারজাতকরণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, সহস্রাবদ্ধ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় কেবল একটি খাতে আমরা পিছিয়ে আছি। তা হচ্ছে পুষ্টি। ভিটা চাল যদি পুষ্টগুণ সমৃদ্ধ হয় তাহলে দেশে পুষ্টিহীনতার হার কমবে। আমি বিশ্বাস করি ভিটা চাল বাজারজাত করণের মধ্য দিয়ে বাজারে আলোড়ন সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বংসম্পূর্ণ। উত্তরাঞ্চলে এখন আর মঙ্গা নেই, মানুষ খেয়ে-পরে মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারছে। দেশে কৃষি শ্রমিকেরও মজুরি বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদেরকেও দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা দিতে হয়। ফলে তারাও খারাপ চাল খায় না। ভিজিএফ বা ওমএস এর জন্য বিশাল লাইন আর নেই। খাদ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ভারত ও শ্রীলঙ্কার আদলে নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ কার্যকর করার পরিকল্পনা চলছে। ইতোমধ্যে লোকবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই তা বাস্তাবায়ন হবে। মানুষের পুষ্টির জন্য যা যা দরকার আমরা তাই করছি। বেসরকারী কোম্পানীসহ যারা এ সেক্টরে এগিয়ে আসবে সরকার তাদের সর্বত্মক সহযোগিতা করবে। অনুষ্ঠানে মাসাফি এগ্রো ফুড ইন্ডাষ্ট্রিজের সিনিয়র এ্যাডভাইজার ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির পুষ্টি শাখার সাবেক প্রধান মুহা: আবদুল কুদ্দুস মূল প্রবন্ধ উপস্থান করেন। এতে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচীর গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে জানানো হয়, চালকে অতি মাত্রায় কলে ছাটাই করার কারণে এতে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানসমূহের শতকরা ১৫ থেকে ৯০ ভাগ কমে যায়। গম ও ভুট্টার তুলনায় চালে আমিষ এবং কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও খনিজ লবণের মাত্রা বেশ কম থাকে। পুষ্টি উপাদান কম থাকার সমস্য সমাধানের জন্য চালকে প্রয়োজন অনুযায়ী ভিটামিন ও খনিজ লবণে সমৃদ্ধ করার একটি সাশ্রয়ী ও কার্যকর উপায় বের করা হয়েছে। বেসরকারি উদ্যোগে প্রথমবারের মতো এ কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, কলে ছাটাইয়ের কারণে চালে পুষ্টি উপাদান ৯০ ভাগ পর্যন্ত কমে যায়। এছাড়া চালে পুষ্টির পরিমাণ কম থাকে। ছাটাইয়ের কারণে এগুলোর পরিমাণ আরো কমে গিয়ে অপুষ্টি সহায়ক হিসাবে কাজ করে না। ফলে সুস্বাস্থ্য গঠনে অধিকতর উপকারী ভূমিকা পালন করতে পারে সেজন্যই সাধারণ চালকে ভিট-চালে রুপান্তর করা হয়। ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ এসব উপাদান যোগ করার কারণে ভিটা-চালের রং, গন্ধ, স্বাদ বা আকৃতির কােন পরির্বতন হয় না। আরও বলা হয়, চাল সমৃদ্ধকরণ বা ভিটা-চালে রুপান্তর হলো এমন একটি ব্যয়-সাশ্রয়ী প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে চালের সঙ্গে ভিটামিন ও খনিজ লবণ মিশিয়ে ভোক্তাকে প্রয়োজনীয় উপাদানসমূহ ভোগ করানো, যাতে ভোক্তার সুস্বাস্থ্য উৎপাদনশীলতা ও মেধা বিকাশ সম্ভব করা যায়। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির কারিগরি সহায়তা ও নেদারল্যান্ডস সরকারের আর্থিক অনুদানে পরিচালিত পরীক্ষা-নীরিক্ষার আলোকে বাংলাদেশে সমৃদ্ধ চাল উৎপাদনে সরকারি অনুমোদন অনুযায়ী মাসফি এগ্রো ফুড ইন্ডাষ্ট্রিজ অগ্রণী ভূমিকা নেওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন অনেকেই। মাসাফি এগ্রো ফুড ইন্ডাষ্ট্রিজের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী চৌধুরির সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বিকাশ কিশোর দাশ, দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: জাকির হোসেন আকন্দ, মাসাফি ফুডের সাইফুল হুদা চৌধুরী প্রমুখ।
×