ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সাফ ফুটবল, শিরোপা পুনরুদ্ধার আর অক্ষুণœ রাখার লড়াই

ফাইনালে আজ মুখোমুখি ভারত-আফগানিস্তান

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ৩ জানুয়ারি ২০১৬

ফাইনালে আজ মুখোমুখি ভারত-আফগানিস্তান

রুমেল খান ॥ এক দলের সামনে শিরোপা পুনরুদ্ধার আর প্রতিশোধ নেয়ার চ্যালেঞ্জ। আরেক দলের সামনে শিরোপা ধরে রাখার কঠিন লক্ষ্যমাত্রা। জিতবে কোন্ দল? ‘দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপ ফুটবল’ খ্যাত একাদশ ‘সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ’ (সাফ সুজুকি কাপ)-এর ফাইনাল আজ। কেরলের ত্রিবান্দ্রাম আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে (গ্রিনফেল্ড স্টেডিয়াম) আজ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হবে খেলাটি। ফাইনালে মুখোমুখি হবে স্বাগতিক ভারত বনাম আফগানিস্তান। প্রবাদ আছে, ‘মুকুট পরার চেয়ে তা ধরে রাখা কঠিন।’ চলমান ‘সাফ সুজুকি কাপ’-এ আফগানিস্তানের পালা এখন তা ভুল প্রমাণ করার। সাফের বর্তমান শিরোপাধারী তারা। এবারই সাফে শেষবারের মতো খেলছে ১৫০ ফিফা র‌্যাঙ্কিংধারী ‘দ্য লায়ন্স অব খোরাসান’ খ্যাত আফগানিস্তান। আগামী বছর থেকে তারা আর সাফ অঞ্চলে নয়, খেলবে আসিয়ান অঞ্চলের টুর্নামেন্টগুলোতে। তাই তারা শেষবার সাফে খেলাটা স্মরণীয় করে রাখতে চায় শিরোপাটা অক্ষুণœ রেখে। এ জন্য তাদের টপকাতে হবে আর একটি বাধা। সে বাধার নাম ১৬৬ ফিফা র‌্যাঙ্কিংধারী এবং ‘দ্য ব্লু টাইগার্স’ খ্যাত সাফ অঞ্চলের ফুটবল পরাক্রম ভারত। দক্ষিণ এশিয়ার এই ফুটবল টুর্নামেন্টে আধিপত্য ভারতেরই। ১৯৯৩ সাল থেকে শুরু হওয়া সাফ ফুটবলে তারা সর্বোচ্চ ছয়বারের (১৯৯৩, ৯৭, ৯৯, ২০০৫, ০৯, ১১) চ্যাম্পিয়ন। সর্বাধিক রানার্সআপ দলটিও ভারত। তিনবার ফাইনালে হেরেছে তারা (১৯৯৫, ২০০৮ ও ১৩)। তার মানে দশবারের মধ্যে নয়বারই ফাইনাল খেলেছে তারা! সেই পরাক্রম ভারতকে হারিয়েই ২০১৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফুটবলবিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয় আফগানরা। যদিও ২০১১ সাফেই চ্যাম্পিয়ন হতে পারতো আফগানস্তিান। সেবারও ফাইনালে খেলেছিল তারা। কিন্তু হেরে যায় ভারতের কাছে। রানার্সআপ হলেও সেবারই তাদের উদ্ভাসিত আগমনী বার্তা পৌঁছে যায় সাফ অঞ্চলে। এবারের আসরে ভারত গ্রুপ ম্যাচে ২-০ গোলে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে শুভসূচনা করে। এরপর দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে নেপালকে ৪-১ গোলের বড় ব্যবধানে হারিয়ে গ্রুপসেরা হয়ে নাম লেখায় শেষ চারে। সেমিতে মালদ্বীপকে হারায় অনেক ঘাম ঝরিয়ে ৩-২ গোলে। পক্ষান্তরে গ্রুপ ‘বি’র ম্যাচগুলোতে আফগানিস্তান তাদের শুরুটা করে দারুণভাবে। ৪-০ গোলে বাংলাদেশকে রীতিমতো বিধ্বস্ত করে তারা। দ্বিতীয় ম্যাচেও স্বচ্ছন্দে জেতে আফগানিস্তান। এবার তারা ৩-০ গোলে হারায় ভুটানকে। গ্রুপের শেষ ম্যাচে আফগানরা ছিল আরও দুর্বার। এবার তাদের শিকার মালদ্বীপ। খেলার স্কোর ছিল ৪-১। আর সেমিতে শ্রীলঙ্কাকে তো দাঁড়াতেই দেয়নি (৫-০)। এ আসরে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি গোল করেছে আফগানিস্তান ১৬টি। টুর্নামেন্টে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি গোল করেছেন আফগানিস্তানেরই খাইবার আমিনি ৪টি। ভারত এ নিয়ে টানা ষষ্ঠবারের মতো ফাইনাল খেলতে যাচ্ছে। আর ভারত-আফগানিস্তান টানা ফাইনাল অনুষ্ঠিত হচ্ছে টানা তৃতীয় বার! এর আগে ভারত-শ্রীলঙ্কা (১৯৯৩ ও ১৯৯৫) এবং ভারত-মালদ্বীপ (২০০৮ ও ২০০৯) টানা দুবার ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়। এবারের ভারত-আফগানিস্তান ফাইনাল ছাড়িয়ে যাচ্ছে আগের সব ফাইনালের পরিসংখ্যানকেই। ২০১১ সালের ফাইনালে স্বাগতিক ভারত ৪-০ গোলে হারিয়েছিল আফগানিস্তানকে। কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত ২০১৩ সালের ফাইনালে ভারতকে ২-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা ও বদলাÑ দুটোই নিয়েছিল আফগানরা। এবার প্রতিশোধ নেয়ার পালা ভারতের। যদিও স্বাগতিক বলে তারাই ফেবারিট, কিন্তু এটাই তাদের হারের অন্যতম কারণ হতে পারে। র‌্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকলেও দুইদলের মুখোমুখি লড়াইয়ে পরিসংখ্যানে অবশ্য অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে ভারত। ৭ ম্যাচের মধ্যে ভারতের জয় ৪টিতে। একটিতে জিতেছে আফগানিস্তান। আর বাকি ২টি ম্যাচ ড্র হয়। ভারতের গোল ১৪টি, আফগানিস্তানের ৪টি।
×