ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জনকণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদক তোয়াব খানসহ ২৭ গুণীকে আমিন জুয়েলার্সের সম্মাননা

প্রকাশিত: ০৮:১৬, ৩ জানুয়ারি ২০১৬

জনকণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদক তোয়াব খানসহ ২৭ গুণীকে আমিন জুয়েলার্সের সম্মাননা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নিজ নিজ ক্ষেত্রে তাঁরা প্রত্যেকেই দিকপাল। মেধা ও কর্মগুণে নিজেদের নিয়ে গেছেন এমন অনন্য উচ্চতায়; যা বর্তমান তরুণ প্রজন্মকে করে অনুপ্রাণিত। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এমন ২৭ গুণীজনকে সম্মাননা দেয়ার মধ্য দিয়ে সুবর্ণজয়ন্তী (৫০ বছর) উদযাপন করেছে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান আমিন জুয়েলার্স। শনিবার রাতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সম্মাননা পাওয়া ২৭ গুণী হলেন- জনকণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদক তোয়াব খান, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা আশালতা বৈদ্য, প্রতœতত্ত্ববিদ আ ক ম যাকারিয়া, প্রযুক্তিবিদ এ এম হারুন অর রশিদ, চিকিৎসক অধ্যাপক এ কে আজাদ খান, মুক্তিযোদ্ধা কাঁকন বিবি, প্রকৌশলী ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী, রাজনীতিবিদ তোফায়েল আহমেদ, প্রকৃতিবিদ অধ্যাপক দ্বিজেন শর্মা, দেশের প্রথম নারী সাংবাদিক নূরজাহান বেগম, ভাষাসৈনিক প্রতিভা মুৎসুদ্দি, উন্নয়ন নেতৃত্বে ব্র্যাকের চেয়ারম্যান স্যার ফজলে হাসান আবেদ, কবি মহাদেব সাহা, চিত্রশিল্পী মুর্তজা বশীর, চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার, চিন্তাবিদ ও লেখক অধ্যাপক যতীন সরকার, প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক, অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক, সঙ্গীতশিল্পী রুনা লায়লা, ফটোসাংবাদিক সাইদা খানম, ছড়াকার সুকুমার বড়ুয়া, নজরুল সঙ্গীতশিল্পী সুধীন দাশ, সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক, কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক এবং নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ (মরণোত্তর)। সম্মাননা হিসেবে তাঁদের প্রত্যেককে ৩ লাখ টাকার চেক, ২ ভরি ওজনের স্বর্ণের মেডেল, সম্মাননা ক্রেস্ট এবং উত্তরীয় দেয়া হয়। অসুস্থতার জন্য আ ক ম যাকারিয়া ও নূরজাহান বেগমের পক্ষে তাদের পরিবারের সদস্যরা সম্মাননা গ্রহণ করেন। প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের পক্ষে সম্মাননা গ্রহণ করেন তাঁর স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন। আর নায়করাজ রাজ্জাকের সম্মাননা পরে তাঁর কাছে পৌঁছে দেয়ার কথা জানানো হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের জুরি বোর্ড ২৭ গুণীর মনোনয়ন দেন। জুরি বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন- বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর জুরি বোর্ডের তিন সদস্য এবং আমিন জুয়েলার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান কাজী সিরাজুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে গুণীজনদের হাতে সম্মাননা তুলে দেন। সম্মাননা দেয়ার সময় প্রত্যেক গুণীর জীবন ও কর্মের ওপর একটি সংক্ষিপ্ত অডিও ভিজুয়াল প্রদর্শন করা হয়। এর আগে স্বাগত বক্তব্যে কাজী সিরাজুল ইসলাম বলেন, এই গুণীজনরা তাঁদের কাজের স্বীকৃতি আগেই পেয়েছেন। আমরা আরও একবার কেবল তা মনে করিয়ে দিতে চাই। আমরা অনুপ্রাণিত করতে চাই দেশের আর সকল গুণী মানুষকে। প্রায় ১৬ কোটি মানুষের এই দেশে গুণী ও শ্রদ্ধাভাজনের সংখ্যা অনেক। জুরি বোর্ড মনোনীত ২৭ জনের বাইরেও সারাদেশে জানা- অজানা শত শত শ্রদ্ধাভাজন আছেন। তাঁদের প্রতিও আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। জুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, একটা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নানাভাবে তাদের ৫০ বছরপূর্তি উদযাপন করতে পারত। কিন্তু তারা বেছে নিয়েছে গুণীজন সংবর্ধনার মতো একটা অনুষ্ঠান আয়োজনকে। এটা অবশ্যই দৃষ্টান্ত স্থাপন করার মতো। তাছাড়া গুণীজনদের সম্মানিত হতে দেখলে তরুণরাও অনুপ্রাণিত হয়। সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, এই গুণীদের পদাঙ্ক, কর্ম, জীবন ও আদর্শ অনুসরণ করে আমরা সামনে এগিয়ে যেতে চাই। এমন সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে সন্ত্রাস থাকবে না; তা ধর্মের নামেই হোক কিংবা রাজনীতির নামে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। সংবর্ধনার প্রতিক্রিয়ায় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, যে কোন সম্মান আন্তরিকভাবে জানালে সম্মানিত ব্যক্তি আপ্লুত হন। আয়োজকদের আন্তরিকতায় আমি সম্মানিত বোধ করেছি। গুনীজনদের সংবর্ধনার ফাঁকে ফাঁকে হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। তাতে অংশ নেন ফাতেমা-তুজ-জোহরা, ইমরান, পড়শি, অপি করিম, চাঁদনী প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শেষ অংশে একক সঙ্গীতে রুনা লায়লা গেয়ে শোনান তাঁর কণ্ঠে জনপ্রিয় হওয়া আটটি গান। গোটা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন চিত্রনায়ক রিয়াজ ও মডেল-অভিনেত্রী নাবিলা।
×