ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর মৃত্যুদণ্ড চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আপীল

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ১৩ জানুয়ারি ২০১৬

যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর মৃত্যুদণ্ড চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আপীল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদ- পাওয়া জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সাজা বৃদ্ধি অর্থাৎ মৃত্যুদ- চেয়ে রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। মঙ্গলবার দুপুরে রাষ্ট্রপক্ষের এ্যাডভোকেট অন রেকর্ড সৈয়দ মাহবুবুর রহমান সুপ্রিমকোর্টের আপীল বিভাগের চূড়ান্ত রায়ের বিরুদ্ধে এ রিভিউ আবেদন জানান (নং: ০৩/২০১৬)। ৩০ পৃষ্ঠার মূল আবেদনসহ ৬৫৩ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে ফাঁসি পুনর্বহালে পাঁচটি যুক্তি দেয়া হয়েছে। ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক টুটুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘এতে আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি চাওয়া হয়েছে।’ যুদ্ধাপরাধ মামলায় এই প্রথম রাষ্ট্রপক্ষ কোন আসামির সাজা বাড়ানোর জন্য পুনর্বিবেচনার আবেদন করল। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপীল বিভাগ ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে ফাঁসির দ-াদেশপ্রাপ্ত সাঈদীর সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদ- দেয়। দেড় বছর পর গত ৩১ ডিসেম্বর আপীল বিভাগ সেই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করে। আপীল বিভাগের নির্দেশনা অনুসারে, রায় প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে রিভিউ করতে পারবে রাষ্ট্র বা আসামিপক্ষ। সেই হিসাবে ১৫ জানুয়ারি পযন্ত এই আবেদন করার সুযোগ ছিল। মানবতাবিরোধী মামলায় প্রথম অভিযুক্ত ব্যক্তি হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সাঈদীর বিচার শুরু হয়েছিল ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর। হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, নির্যাতন ও ধর্মান্তরে বাধ্য করার অপরাধে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তাকে মৃত্যুদ- প্রদান করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এরপর সাঈদী আপীল করলে গতবছর ১৭ সেপ্টেম্বর পাঁচ বিচারকের বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে যে রায় দেয়, তাতে সাজা কমে আমৃত্যু কারাদ-ের আদেশ প্রদান করে। আপীলের ১০, ১৬ ও ১৯ নম্বর অভিযোগে হত্যা, নিপীড়ন, অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণ ও ধর্মান্তরে বাধ্য করায় সাঈদীকে ‘যাবজ্জীবন’ কারাদ- দেয়া হয়। যাবজ্জীবন বলতে ‘স্বাভাবিক মৃত্যুর সময় পর্যন্ত ’ কারাবাস বোঝাবে বলে ব্যাখ্যা দেয় আদালত। এছাড়া ৮ নম্বর অভিযোগের একাংশের জন্য সাঈদীকে ১২ বছরের সশ্রম কারাদ- এবং ৭ নম্বর অভিযোগে ১০ বছর কারাদ-ের আদেশ দিয়েছে আপীল বিভাগ। এর মধ্যে ৮ ও ১০ নম্বর অভিযোগে ইব্রাহিম কুট্টি ও বিসাবালীকে হত্যা এবং হিন্দু সসম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘরে আগুন দেয়ার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সাঈদীর ফাঁসির রায় দিয়েছিল। আপীল বিভাগ থেকে এ পর্যন্ত যুদ্ধাপরাধ মামলার যে পাঁচটি রায় এসেছে, তার মধ্যে কেবল সাঈদীর ক্ষেত্রেই রিভিউ বাকি রয়েছে। বাকি চার মামলায় জামায়াতে ইসলামীর দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা ও মোহাম্মদ কামারুজ্জামান, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর রিভিউ খারিজ হয়ে যাওয়ায় তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
×