ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংসদে তোফায়েল

যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে না দিলে টিকফা কার্যকর হবে না

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে না দিলে টিকফা কার্যকর হবে না

সংসদ রিপোর্টার ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে না দিলে টিকফা কখনই কার্যকর হবে না। আমরা এত কিছু করার পরও কেন তারা জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দিচ্ছে না? আসলে বিষয়টি রাজনৈতিক। বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারী দলের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, আমরা বার বার বলেছি, আমাদের প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন। জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে না দিলে, টিকফা কখনই কার্যকর হবে না। পোশাক শিল্পের উন্নয়নের জন্য আমাদের যা যা করণীয় আমরা তা সবই করেছি। কিন্তু পোশাক শিল্প নিয়ে যত মিটিং হয়, তাদের জিজ্ঞেস করলে তারা বলে- আরও করো। আমরা আর কি করব তা খুঁজে পাচ্ছি না। আমরা এত কিছু করার পরও কেন তারা জিএসপি ফিরিয়ে দিচ্ছে না? আমার মনে হয় বিষয়টি রাজনৈতিক। সংসদ সদস্য আবদুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, ভারত থেকে বাংলাদেশ গত ৫ মাসে মোট পণ্য আমদানি করেছে ১৭ হাজার ১৫২ কোটি টাকা (দুই হাজার ১৯৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)। আর বাংলাদেশ ওই দেশে রফতানি করেছে ২ হাজার ৭৪ কোটি টাকা (২৬৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)। এই হিসাবে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রায় ৮ গুণ বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে অন্যান্য দেশের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ৭৩ হাজার ৮৬ কোটি টাকা (৯৩৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)। বাণিজ্যিক সম্প্রসারণের লক্ষ্যে মোট ৪৮টি দেশের সঙ্গে চুক্তি করেছে। এর মধ্যে ৩৮টি দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি আছে। এছাড়া তিন দেশের সঙ্গে চুক্তি করা হলেও তার কার্যকারিতা নেই। এছাড়া আরও ৭টি দেশের সঙ্গে চলমান বাণিজ্যের পাশাপাশি সম্প্রসারণের চুক্তি রয়েছে। ওয়ার্কার্স পার্টির সংসদ সদস্য হাজেরা খাতুনের প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল আহমেদ জানান, গত অর্থবছরে তৈরি পোশাক খাত থেকে রফতানি আয় হয়েছে ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশের মোট রফতানি আয়ের ৭৭ শতাংশ আসে এই পোশাক খাত থেকে। তিনি জানান, বর্তমান সরকার তৈরি পোশাকের বাজার সম্প্রসারণ ও সুসংহত করার লক্ষ্যে বিশ্বেও বিভিন্ন দেশে সরকারী ও বেসরকারী প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে বাণিজ্য মিশন পাঠিয়েছে। দেশে খাদ্যশস্যের চাহিদা ২৯৫ লাখ মেট্রিক টন ॥ সরকারী দলের সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদ কিরণের প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম জানান, বর্তমানে দেশে খাদ্যশস্যের (চাল ও গম) চাহিদা রয়েছে ২৯৫ দশমিক ৫ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে চাল ২৬৮ দশমিক ২৪ লাখ মেট্রিক টন এবং গম ২৬ দশমিক ৮১ লাখ মেট্রিক টন। মন্ত্রী জানান, চালের সম্পূর্ণ চাহিদা অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে মেটানো হয়। গমের চাহিদার ক্ষেত্রে গত বছর ১৩ দশমিক ৪৮ লাখ মেট্রিক টন দেশীয় উৎস থেকে এবং অবশিষ্ট পরিমাণ ভারত, রাশিয়া, ইউক্রেন, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক, রুমানিয়া, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ফ্রান্স, ইরান, জার্মানি, পাকিস্তান, বুলগেরিয়া ও কানাডা ইত্যাদি দেশ থেকে আমদানির মাধ্যমে মেটানো হয়েছে। ৩৯ বছরে প্রায় ৯৭ লাখ বাংলাদেশী বিদেশে ॥ সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সানজিদা খানমের প্রশ্নের জবাবে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি জানান, বিএমইটির ছাড়পত্র নিয়ে বাংলাদেশী কর্মীরা ১৬১ দেশে কাজে গেছেন। ১৯৭৬ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ৯৬ লাখ ৯৮ হাজার ৬৮৭ বাংলাদেশী কর্মী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিএমইটির ছাড়পত্র নিয়ে গেছে। সেলিনা বেগমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, সৌদি আরব বাংলাদেশের প্রধান শ্রম বাজার। ৩৯ বছরে ২৬ লাখ ৯৮ হাজার ৫০ জন বাংলাদেশী কর্মী বিএমইটির ছাড়পত্র নিয়ে সৌদি আরব গেছেন। ২০০৮ সাল থেকে বন্ধ থাকা সৌদি আরবের শ্রম বাজার বর্তমান সরকারের অব্যাহত কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় পুনরায় চালু হয়েছে। সৌদি আরব বাংলাদেশী শ্রমিক নেয়ার সব বিধি নিষেধ তুলে নিয়েছে। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে সৌদি আরবের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করে। সে সময় সৌদি আরবে গৃহকর্মের ১০টি পেশায় কর্মী পাঠানোর বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এ চুক্তি হওয়ার পর ২০১৫ সালে ২০ হাজার ৯৫২ জন নারী কর্মী সৌদি আরব গেছেন।
×