ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

স্পীকারকে স্মারকলিপি দেয়ার পূর্ব সমাবেশে গণবিচার আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ

পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধী দুই হাজার হলেও তাদের বিচার করতে হবে

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধী দুই হাজার হলেও তাদের বিচার করতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চিহ্নিত পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীর সংখ্যা দুই হাজার হলেও তাদের সকলের বিচারের দাবি জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলনের নেতারা। বুধবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে যুদ্ধাপরাধ, জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে গঠিত সংগঠনটির জাতীয় সংসদের স্পীকার বরাবর স্মারকলিপি পেশ পূর্ব সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়। স্মারকলিপিতে ১০ দফা দাবি উল্লেখ করা হয়। সংগঠনের আহ্বায়ক ও নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, পাকিস্তানের আত্মসমর্পণ চুক্তি অনুযায়ী চিহ্নিত ১৯৫ পাকিস্তানী সেনার বিচার, বাংলাদেশের জনগণের কাছে সেদেশের রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রার্থনা ও আর্থিক হিসাব-নিকাশ মেটানোর কথা থাকলেও তারা সে চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। তারা যেহেতু চুক্তি ভঙ্গ করেছে, সেক্ষেত্রে তাদের বিচারে আর কোন বাধা নেই। এখন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত অনুযায়ী যতজন যুদ্ধাপরাধীর নাম আসবে, সবার বিচার করতে হবে। ইতোমধ্যে নতুন করে আরও বেশকিছু পাকিস্তানী সেনার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তথ্য পাওয়া গেছে উল্লেখ করে নৌমন্ত্রী আরও বলেন, একশ পঁচানব্বই বা দুইশ’ চিহ্নিত পাকিস্তানী সেনা নয়, এ সংখ্যা যদি দুই হাজারও হয় তাদের সকলের বিচার করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে, শহীদদের সংখ্যা, জাতির জনক, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীতের বিপক্ষে যারা কথা বলবে, তাদের বিচারের জন্যও একটি আইন করার দাবি জানান তিনি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারসহ মুক্তিযুদ্ধের ইস্যুতে পাকিস্তানের গা জ্বালা শুরু হয়ে গেছে উল্লেখ করে শাজাহান খান বলেন, তারা সবকিছুতেই আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। জঙ্গিবাদীদের মদদ দিচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধে চালানো গণহত্যাকে অস্বীকারের চেষ্টা করছে। স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচীতে অংশ নিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে কয়েক হাজার নেতাকর্মী ব্যানার নিয়ে উপস্থিত হন। এ সময় তারা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সেøাগান দেন। পাশাপাশি পাকিস্তানের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে দাবি জানান। এরপর মিছিলসহ স্পীকার কার্যালয়ের দিকে রওনা হলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে পুলিশ কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে তাদের আটকে দেয়। পরে নৌপরিবহনমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল জাতীয় সংসদের স্পীকারের কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দিয়ে আসেন। সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আব্দুল মান্নান চৌধুরী, ইসমত কাদির গামা, ওসমান আলী, কামরুল আলম সবুজ, রোকেয়া প্রাচী, আব্দুল মালেক মিয়া, বদরুদ্দোজা নিজাম, এম ফরিদুজ্জামান খান প্রমুখ। রবিবার মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের ২০০ যুদ্ধাপরাধীর নাম ঠিকানাসহ তালিকা প্রকাশ করা হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে। তালিকায় জেনেভা কনভেনশনসহ আন্তর্জাতিক সব যুদ্ধনীতি লঙ্ঘন করে সরাসরি গণহত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগে অংশ নেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে ১১৮ জনের বিরুদ্ধে। ১৪ জনের বিরুদ্ধে ব্যাপক হারে গণহত্যায় অংশ নেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। এ তালিকার একজন লেফটেন্যান্ট জেনারেল, পাঁচজন মেজর জেনারেল, পাঁচজন কর্নেল, ২০ জন ব্রিগেডিয়ার, ৩৯ জন লেফটেন্যান্ট কর্নেল, ৪৫ জন ক্যাপ্টেন, ৮১ জন মেজর, দুজন লেফটেন্যান্ট, তিনজন বিমানবাহিনীর ও তিনজন নৌবাহিনীর কর্মকর্তা রয়েছেন।
×