ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশ ভারত সম্প্রীতির সৃষ্টি ॥ শিল্পমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৭:৪০, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশ ভারত সম্প্রীতির সৃষ্টি ॥ শিল্পমন্ত্রী

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্প্রীতির সৃষ্টি হয় ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ ও রণাঙ্গনের মধ্যদিয়ে। পাকিস্তানীদের ষড়যন্ত্রের কারণেই আমাদের দুই বাংলা ভাগ হয়েছিল। পাকিস্তানীরা চেয়েছিল এ বাংলার মানুষকে পায়ের নিচে রেখে আজীবন শাসন করবে। ভারতের প্রতিটি মানুষ দলমত নির্বিশেষে বাংলাদেশের পক্ষে যুদ্ধে সমর্থন দিয়েছিলেন। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী দুই-দুইবার করে বিশ^ভ্রমণ করে বাংলাদেশের পক্ষে জনসমর্থন গড়ে তুলেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে এদেশের ত্রিশ লাখ শহীদের সঙ্গে ভারতেরও প্রায় এগারো হাজার যোদ্ধা প্রাণ দিয়েছিলেন। আজকে মুক্তিযুদ্ধের সময় এর বিরোধিতাকারী রাজাকার, আল-বদর, আল-শামসদের বিচার হচ্ছে, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীরা বসে নেই। এখনও তারা বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বাংলাদেশ-ভারত সম্প্রীতি পরিষদের দ্বিবার্ষিক কেন্দ্রীয় সম্মেলনের বাংলাদেশ পর্বে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে সম্মেলন শুরু হয়। সারাদেশ থেকে ৩৪টি চ্যাপ্টার কমিটির প্রতিনিধি এই সম্মেলনে অংশ নেন। পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ বারির সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন ভারত পর্বের প্রধান অতিথি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যসভার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক প্রদীপ ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মন্ত্রী সরদার আমজাদ আলী, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ বিরূপাক্ষ পাল, বার কাউন্সিলের সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট আবুল বাসেত মজুমদার, এ কে এম রহমতুল্লাহ প্রমুখ। এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, এত অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের যে উন্নতি হয়েছে তা দেখে বিশ^বাসী এখন বিস্ময় প্রকাশ করে। আর তা সম্ভব হয়েছে একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য। শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে অন্যান্য সরকারের পার্থক্য হচ্ছে জিয়া-এরশাদ ক্ষমতায় এসেছিলেন বন্দুকের নলের মুখে আর শেখ হাসিনা এসেছেন বাংলাদেশের মানুষের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন হয়ে। তাঁর পিতার থেমে যাওয়া অগ্রগতিকে এগিয়ে নিতে। বাংলাদেশ-ভারত সম্প্রীতিকে এগিয়ে নিতে এবং বাংলাদেশী নাগরিকদের ভারতীয় ভিসা প্রাপ্তি সহজ করতে বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি শাখা খোলারও আহ্বান জানান তিনি। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক রক্তের সম্পর্ক। দু-দেশের মানুষের শরীরে একই রক্ত প্রবাহিত। মানুষের সঙ্গে মানুষের, জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক দৃঢ় করার জন্য দু-দেশের মাঝে আসা-যাওয়ার পথ আরও সুগম করা উচিত। দু-দেশের মানুষের আসা-যাওয়া যত বাড়বে তাদের সম্পর্ক আরও অহিংস হবে। বর্তমান প্রজন্ম ভারতের অবদানের কথা উপলব্ধি করার জন্য বর্তমান ইউরোপের অবস্থা দেখতে পারে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে যাওয়া দশ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দিতে পারছে না ইউরোপ। অথচ একাত্তরে এই ভারত এক কোটি বাংলাদেশী শরণার্থীকে আশ্রয় দিতেও দ্বিধাবোধ করেনি। অধ্যাপক প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, সম্প্রীতির বন্ধনে আমরা সব সময়ই বাংলাদেশের পাশে আছি।
×