ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সামাজিক প্রতিরোধ প্রয়োজন

কক্সবাজারে থামছে না ইয়াবা আগ্রাসন

প্রকাশিত: ০৭:৪৪, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

কক্সবাজারে থামছে না ইয়াবা আগ্রাসন

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ কক্সবাজারে কোনভাবেই থামানো যাচ্ছে না ইয়াবার ভয়াবহতা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হাতে প্রতিদিন ইয়াবা উদ্ধারসহ ধরাও পড়ছে ইয়াবা বিক্রেতারা। তারপরও টেকনাফ, উখিয়াসহ ইয়াবার এ আগ্রাসনের ভয়াবহতা থেমে নেই সাগরপথেও। বুধবার ভোরে সাগরে অভিযান চালিয়ে কক্সবাজার ক্যাম্পের র‌্যাব সদস্যরা সোয়া সাত লাখ ইয়াবাসহ আটক করেছে এক গডফাদারসহ ৭ ইয়াবা সিন্ডিকেটের সদস্যকে। এ ঘটনায় ব্যবহৃত ট্রলারটিও জব্দ করা হয়। বুধবার ভোর ৩টায় কলাতলী পয়েন্টের গভীর সমুদ্রে র‌্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। আটকরা হচ্ছে- ইয়াবা চালানের মালিক দক্ষিণ কলাতলীর ফজল হকের পুত্র রশিদ, বহনকারী মিয়ানমার মংডু সুতাহারা গ্রামের জোবায়ের, উখিয়া সোনারপাড়ার আব্দুর রহিম, একই এলাকার আশেক উল্যাহ, উখিয়ার পশ্চিম সোনাইছড়ির সামসুল আলম, সোনাইছড়ির হাসান ও ইউনুছ। র‌্যাব-৭ কক্সবাজার ক্যাম্পের অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন জানান, এফবি মায়ের দোয়া নামে একটি ফিশিং ট্রলারে করে সাগরপথে ইয়াবার একটি বড় চালান আসার খবর পেয়ে গভীর সমুদ্রে অভিযান চালানো হয়। এ সময় র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে চোরাচালানিরা পালানোর চেষ্টা করলে তাদের ধাওয়া দিয়ে ট্রলারটি জব্দ করা হয়। পরে তল্লাশি চালিয়ে ৭ লাখ ইয়াবাসহ বহনকারী ওই ট্রলারের ৬ জেলেকে আটক করা হয়েছে। এদের জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াবা চালানের মালিকের সন্ধান দেয় তারা। তাদের দেয়া তথ্যমতে, অভিযান চালিয়ে ইয়াবার গডফাদার রশিদকে কলাতলী থেকে আটক করা হয়েছে। এ সময় তার রুম থেকেও ৩০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অনেকে জানান, কক্সবাজারে বিভিন্ন স্থানে ইয়াবার বিস্তার সবচেয়ে বেশি। দীর্ঘদিনের এ ইয়াবার আগ্রাসন রোধে গত বছর কক্সবাজারে ইয়াবাবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু হয়। অভিযানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ৬ জন নিহত ও ৮ শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হয়। ইয়াবা পাচারে জড়িয়ে পড়ার তথ্য পেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পুলিশের কর্মকর্তা ও কনস্টেবল পর্যায়ে ব্যাপক বদলির ঘটনা ঘটে। ওইসময় চিহ্নিত গডফাদাররা পালিয়ে গেলেও ২০১৫ সালে নিজ নিজ এলাকায় ফিরে এসে ইয়াবা ব্যবসা ফের চাঙ্গা করে তুলেছে। কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে যানবাহনের পাশাপাশি নৌপথেও মিয়ানমার থেকে ইয়াবার চালান আসছে ব্যাপক হারে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম ঢাকাকেন্দ্রিক নৌপথে সরবরাহ হওয়া দেশের সর্ব বৃহৎ ইয়াবার চালান উদ্ধারও হয়েছে। পুলিশ বিজিবির পাশাপাশি র‌্যাব, কোস্টগার্ড ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা ইয়াবা উদ্ধারে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে নিয়মিত। তারপরও গডফাদারদের কারণে ইয়াবার চালান আসা বন্ধ হচ্ছে না মোটেও। সচেতন মহল জানিয়েছেন, ইয়াবা রোধে সামাজিক প্রতিরোধ তৈরি করতে না পারলে ইয়াবা চূড়ান্তভাবে বন্ধ করা মোটেও সম্ভব হবে না।
×