ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সিরিয়ায় রুশ বিমান হামলা

কোণঠাসা ওবামা প্রশাসন

প্রকাশিত: ০৪:০২, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

কোণঠাসা ওবামা প্রশাসন

সিরিয়ায় রুশ বিমানের অবিরাম বোমাবর্ষণের ফলে ওবামা প্রশাসন ক্রমশ নিজেকে কোণঠাসা অবস্থায় দেখতে পাচ্ছে। কারণ প্রশাসনের কূটনীতি সেই অভিযান বন্ধ করতে এ পর্যন্ত ক্ষমতাহীনই প্রতিপন্ন হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন এফ কেরি রুশদের সঙ্গে সব সময়েই যোগাযোগ রাখছেন বলে শুক্রবার জানান। তিনি বলেন, কোন অস্ত্রবিরতি লড়াইয়ের অবরুদ্ধ এলাকাগুলোতে ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহ করতে দেয়ায় এবং চলতি সপ্তাহে স্থগিত রাখা শান্তি আলোচনা পুনরুদ্ধার করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষ আন্তরিক কিনা তা আগামী কয়েক দিনের মধ্যে জানা যাবে। এরই মধ্যে তিনি বলেন, যদিও নারী ও শিশুসহ বেসামরিক লোকজন বহু সংখ্যায় মারা যাচ্ছে এবং মানুষের জন্য ত্রাণসহায়তা পাঠানোর পথ বন্ধ রয়েছে, তবুও কেবল অভিযোগ করে বোমাবর্ষণ বন্ধ করানো যাবে না। চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ প্রকাশ্যে বলেন যে, তার সরকার বিমান হামলা বন্ধ করার কোন কারণ দেখছে না। রুশরা বলছে, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সরকারের পক্ষে লড়াইরত দলগুলোসহ সন্ত্রাসী দলগুলোকে লক্ষ্য করেই বিমান হামলা চালানো হচ্ছে। জাতিসংঘে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত ভিঅলি চুর কিন শুক্রবার বলেন, রাশিয়া বেসামরিক লোকজন ও সরকার বিরোধী শক্তিগুলোর ওপর বোমাবর্ষণ করছে এমন অভিযোগ নিম্ন রুচিরই পরিচায়ক। নিরাপত্তা পরিষদের সিরিয়া সম্পর্কিত এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে যোগ দেয়ার সময় চুরকিন বলেন, তাদের উচিত ছিল যারা সন্ত্রাসীদের সমর্থন করে তাদেরই দোষারোপ করা। এদিকে, সিরিয়ার সবচেয়ে বড় শহর আলেপ্পোর চারদিকে রুশ বিমান হামলা জোরদার হলে সেখান থেকে হাজার হাজার সিরীয় পালাতে থাকে। শহরটি সরকারী বাহিনীর পূর্ণ অবরোধের কবলে পড়তে পারে বলে ত্রাণকর্মীরা আশঙ্কা করছেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র জন কারবি বোমাবর্ষণ বন্ধ করাতে মার্কিন চেষ্টাকে “দৃঢ় কূটনীতি” বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, আরও রক্তক্ষয় এড়ানো এবং উত্তেজনার মাত্রা চড়ানোই-এর উদ্দেশ্য। তিনি জানান, পররাষ্ট্র দফতর অস্ত্র বিরতি ও শান্তি আলোচনার নির্দেশ সংবলিত এক জাতিসংঘ প্রস্তাবে সম্মত হয়েছিল এমন সব পক্ষই যাতে তাদের বাধ্যবাধকতা পালন করে তা নিশ্চিত করতে খুবই কঠোর চেষ্টা চালাচ্ছে। এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে কেরি কেবল রাশিয়াই দায়ী নয় বলে আভাস দেন। তিনি বলেন, রাশিয়া অস্ত্রবিরতি করতে প্রস্তুত বলে আমাকে সরাসরিই আভাস দিয়েছে। ইরানীরা এখন এক অস্ত্র বিরতি সমর্থন করবে বলে নিশ্চিত করেছে। আমরা এখন চাই যে, অন্য সব দলই টেবিলে এসে তারাও অস্ত্রবিরতি করতে প্রস্তুত বলে স্বীকার করুক। এক মুহূর্তের কথা বলতে গেলে, আমরা সবার কাছ থেকে স্বীকৃতি পাইনি। কেরির আগামী সপ্তাহের শেষ দিকে মিউনিখে লাভরভের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হওয়ার কথা। সেখানে ২০ সদস্যের ইন্টারন্যাশনাল সিরিয়া সাপোর্ট গ্রুপ সিরিয়ায় কোন অস্ত্রবিরতি এবং কোন রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটানোর চেষ্টায় চতুর্থবারের মতো বৈঠকে মিলিত হবে। রাশিয়া ও আসাদ সমর্থক ইরান এ গ্রুপে রয়েছে। সিরীয় সরকার বিরোধী নেতারা অভিযোগ করেছেন যে, আলোচনা আবার শুরু হবে বলে ধারণা করে রুশরা আসাদের দর কষাকষির অবস্থান শক্তিশালী করতে রুশ রণক্ষেত্রে নতুন অবস্থার সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তারা জাতিসংঘ-নির্দেশিত অস্ত্রবিরতি বলবৎ করার বাস্তব পদক্ষেপ নিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি অহ্বান জানান। কেরি বলেন, মানবিক ত্রাণসাহায্য পৌঁছানো এবং এক অস্ত্রবিরতি ঘটানোর কয়েকটি উপায় নিয়ে রুশদের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। যদি সেটি বোমাবর্ষণ চালিয়ে যাওয়ার জন্য কেবল আলোচনার খাতিরে আলোচনা হয়, তবে কেউই সেটি মেনে নেবে না। আর আমরা আগামী দিন কয়েকের মধ্যেই তা জানতে পারব। -ওয়াশিংটন পোস্ট অনলাইন।
×