ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নামিবিয়াকে নাকাল করে সেমিতে ভারত

প্রকাশিত: ০৭:১৯, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

নামিবিয়াকে নাকাল করে সেমিতে ভারত

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নামিবিয়ার কোন ‘হাঁক-ডাক’ই আর কাজে লাগছে না। ভারতের কাছেও ১৯৭ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে নামিবিয়া। শনিবার ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে সুপার লীগের কোয়ার্টার ফাইনালে রিশাভ পেন্টের ১১১ রানের দুর্দান্ত ইনিংয়ে নামিবিয়াকে উড়িয়ে দিয়ে সেমিফাইনালে খেলা নিশ্চিত করেছে ভারত। ম্যাচে টস জিতে ভারত আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। ৯৬ বলে ১৪ চার ও ২ ছক্কায় ১১১ রান করা পেন্টের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৪৯ রান করে ভারত। ফ্রিটজ কোটেজি ৩ উইকেট নেন। জবাবে ৩ উইকেট করে নেয়া মায়াঙ্ক ডাগার ও আনমল প্রিত সিংয়ের বোলিংয়ে ৩৯ ওভারে ১৫২ রান করতেই গুটিয়ে যায় নামিবিয়া। এখন মঙ্গলবার প্রথম সেমিফাইনালে খেলবে ভারত। আজ ইংল্যান্ড-শ্রীলঙ্কার মধ্যকার কোয়ার্টার ফাইনালে যে দল জিতবে ভারতের তাদের বিপক্ষে লড়াই করবে। শক্তির ব্যবধানে ছিল ব্যাপক তারতম্য। ভারত যৌথভাবে সর্বাধিক তিনবারের চ্যাম্পিয়ন। সেখানে নামিবিয়া এই প্রথমবারের মতো উঠে এসেছে কোয়ার্টার ফাইনালে। তার আগে যুব বিশ্বকাপে নামিবিয়ার সেরা সাফল্য ছিল ২০০৮ বিশ্বকাপে, এগারতম অবস্থান। এমন শক্তিমত্তার দু’টি দলের মধ্যকার ম্যাচটি যে একপেশে হবে তা ছিল অনুমেয়। যদিও গ্রুপ পর্বে গতবারের চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা ও স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে চমক দেখিয়েছিল নামিবিয়া। কিন্তু শনিবার দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে ভারতের কাছে পাত্তাই পায়নি নামিবিয়া। প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দাপটের সঙ্গে বাংলাদেশের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে সেমিফাইনালের খেলা নিশ্চিত করল ভারত। অথচ বড় টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালই করেছিল নামিবিয়া। উদ্বোধনী জুটিতে ইটন-ডেভিন তোলেন ৫৯ রান। ৩০ বলে ৩৩ রান করে বোথামের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন ডেভিন। এরপর গ্রিনের সঙ্গে বড় জুটি গড়ার আভাস দিচ্ছিলেন ওপেনার ইটন। কিন্তু দলীয় ৮০ রানে এই জুটি বিচ্ছিন্ন করেন ভারতের ওয়াশিংটন সুন্দর। ৪২ বলে ২২ রান করা ইটনকে বোল্ড করেন তিনি। এরপর আর বড় কোন জুটিই হয়নি। অধিনায়ক গ্রিন ২৭ ও লিন্ডে ২৫ রান করেন। বাকিরা ছিলেন যাওয়া আসার মিছিলে। কেউই ছুঁতে পারেনি দুই অঙ্কের রান। এর আগে ব্যাট করতে নেমে ১৮ রানেই বিদায় নেন ভারত অধিনায়ক। মাত্র ৬ রানে কোয়েটজির বলে কট এ্যান্ড বোল্ড হন ইশান কিশান। তবে খুব দ্রুতই ধাক্কা সামলে রানের চাকা ঘুরাতে থাকে ভারত। একপ্রান্ত রিশব প-িত অপরপ্রান্তে অমলপিত সিং আগলে রাখেন। ব্যক্তিগত ৪১ রানে ডেভিনের বলে রাউটেনবাচের হাতে ধরা পড়েন অমলপিত। এরপর সরফরাজ খানকে নিয়ে রিশব ৬২ রানের একটি জুটি গড়েন। দলীয় ১৮৩ রানে লিঙ্গেনকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান রিশব প-িত। যাবার আগে করে যান দারুণ এক সেঞ্চুরি। ১১১ রানের ইনিংসে তিনি ১৪টি চার ও ২টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন। রিশব ফিরে গেলেও ভারতীয় ইনিংসে ব্যাটিং ঝড় অব্যাহত রাখেন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। সুনীল খান ও আরমান জাফের করেন হাফ সেঞ্চুরি। ৭৬ বলে ছয় চার ও এক ছক্কায় ৭৬ রান করেন সুনীল। আর ৫৫ বলে চারটি চার ও একটি ছক্কার মারে ৬৪ রান করেন আরমানের। শেষ বেলায় ব্যাটে ঝড় তোলেন মহীপাল লমরর। ২১ বল থেকে এক চার ও তিন ছক্কার মারে করেন ৪১ রান। সেই সুবাদে নামিবিয়াকে ৩৫০ রানের পাহাড়সম টার্গেট ছুঁড়ে দেয় ইশান-কিশানের দল। তাতে জয়ও মিলে বড় ব্যবধানে। প্রথমবারের মতো ভারতের বিপক্ষে খেলে নামিবিয়া। ২০০০, ২০০৮ ও ২০১২ সালে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। এবার চতুর্থ শিরোপার আরও কাছাকাছি চলে গেল ভারত। ভারতের অধিনায়ক ইশান কিশান আগেই বলেছিলেন, ‘প্রতিপক্ষ যেই হোক, আমাদের লক্ষ্য থাকবে যেরকম খেলছি সেরকম খেলা। আমাদের পরিকল্পনাগুলো ঠিকমত বাস্তবায়ন করা।’ নামিবিয়া অধিনায়ক জেন গ্রিন বলেছিলেন, ‘আমাদের টিম স্পিরিটই আমাদের শক্তি। টিম হিসেবে আমরা দারুণ। এখন পর্যন্ত যে নৈপুণ্য তাতে আমি খুশি। ভারতের বিপক্ষে খেলা নতুন অভিজ্ঞতা হবে।’ নামিবিয়ার জন্য অভিজ্ঞতাটাই সম্বল হয়ে রইল। তবে সেই অভিজ্ঞতা তিক্তই থাকল। সুখকর হতে পারল না। আর ভারত সব পরিকল্পনাই সফল করে সেমিফাইনালে সহজেই উঠে গেল। স্কোর ॥ ভারত-নামিবিয়া অনুর্ধ-১৯ ক্রিকেট ভারত ইনিংস ৩৪৯/৬ ৫০ ওভার (পেন্ট ১১১, সরফরাজ ৭৬, জাফর ৬৪, মাহীপাল ৪১*, আনমলপ্রিত ৪১; কোয়েটজি ৩/৭৮)। নামিবিয়া ইনিংস ১৫২/১০ ৩৯ ওভার (ডেভিন ৩৩, গ্রিন ২৭, লিনডে ২৫, লোফটি ২২; ডাগার ৩/২৫, আনমলপ্রিত ৩/২৭, সুন্দার ২/২৭)। ফল ॥ ভারত অনুর্ধ-১৯ দল ১৯৭ রানে জয়ী। ম্যাচ সেরা ॥ রিশাভ পেন্ট (ভারত)।
×