ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শিশু আবদুল্লাহ হত্যা

প্রধান আসামি মোতাহার বন্দুকযুদ্ধে নিহত

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

প্রধান আসামি মোতাহার বন্দুকযুদ্ধে নিহত

নিজস্ব সংবাদদাতা, কেরানীগঞ্জ, ৮ ফেব্রুয়ারি ॥ কেরানীগঞ্জে চাঞ্চল্যকর শিশু আবদুল্লাহ হত্যা মামলার সন্দেহভাজন প্রধান আসামি মোতাহার হোসেন র‌্যাবের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। সোমবার ভোরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চিতাখোলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। র‌্যাব-১০ কেরানীগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার আহমেদ হোসেন মহিউদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। র‌্যাব-১০-এর সিও অতিরিক্ত ডিআইজি জাহাঙ্গীর হোসেন মাতব্বর জানান, কেরানীগঞ্জের চিতাখোলা এলাকায় ভোর ৪টার দিকে র‌্যাব ১০ এর একটি টহলদল দুটি মোটরসাইকেল দেখতে পান। এ সময় র‌্যাব সদস্যরা মোটরসাইকেল দুটি থামাতে সিগন্যাল দেন। কিন্তু মোটরসাইকেল দুটি না থামিয়ে সামনের মোটরসাইকেল থেকে র‌্যাব সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। র‌্যাবও আত্মরক্ষায় পাল্টা গুলি চালায়। গুলিবিনিময়কালে পেছনে থাকা মোটরসাইকেলটি পালিয়ে যায়। আর সামনের মোটরসাইকেলের দু’জনের মধ্যে একজন মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে যায়। আরেকজনকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে র‌্যাব সদস্যরা। এ সময় তাকে উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভোর ৫টায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি আরও জানান, নিহত ব্যক্তির পকেটে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্রে দেখা যায় তার নাম মোতাহার। পরে র‌্যাব অনুসন্ধানে জানতে পারে এই মোতাহার কেরানীগঞ্জে শিশু আবদুল্লাহ হত্যা মামলার প্রাধান আসামি। যার বাড়ির ছাদে আবদুল্লাহর লাশ পাওয়া গিয়েছিল। র‌্যাব সূত্রে জানাগেছে, ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল ও এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও রেজিস্ট্রেশনবিহীন কালো রঙের ১৫০ সিসি একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক সালাউদ্দিন জানান, র‌্যাবের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে মিটফোর্ড হাসপাতালে থেকে মোতাহারের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। মোতাহারের মাথায় ও বুকে দুটি গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এদিকে বন্দুকযুদ্ধে মোতাহারের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে মুগারচরবাসী দফায় দফায় মিষ্টি বিতরণ করেন। এছাড়াও তারা আনন্দ মিছিল বের করে মোতাহারের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন। নিহত আব্দুল্লাহর বাবা বাদল মিয়া বলেন, ‘মোতাহারের লাশ মিটফোর্ড হাসপাতালে গিয়ে দেখে এসেছি। আমি খুশি। বাকি আসামিদের ফাঁসি চাই।’ ২৯ জানুয়ারি শুক্রবার দুপুরে কেরানীগঞ্জের রুহিতপুর মুগারচর বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয় আবদুল্লাহ। রাতে নানা মারফত আলী কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে শিশুটিকে অপহরণ করা হয়েছে জানিয়ে একটি নম্বর থেকে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ বাবদ সাড়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়। পরিবারের দাবি, অপহরণকারীদের কথামতো তারা দুই দফায় কয়েকটি নম্বরে ২ লাখ টাকা বিকাশের মাধ্যমে দিয়েছেন। অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর ৩১ জানুয়ারি রবিবার রাতে নানা মারফত আলী বাদী হয়ে অপহরণ মামলা করেন। পরে ২ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে প্রতিবেশী মোতাহার হোসেনের বাড়ির ছাদে রাখা একটি ড্রামের ভেতর থেকে শিশু আবদুল্লাহর লাশ পাওয়া যায়।
×