ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মনোয়ারুল হক মনি

একজন নির্মাতার গল্প

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

একজন নির্মাতার গল্প

দৈনন্দিন জীবনের নানা ঘাত-প্রতিঘাত, জীবনযাত্রার নিম্নমান, অভাব অনটন বা ব্যক্তিগত-পারিবারিক নানান চাপে মানুষ যেন হাসতে ভুলে যাচ্ছে। নির্মল আনন্দ কাকে বলে তা যেন আমরা মাঝে মাঝে ভুলেই যাই। কথা হচ্ছিল- এ সময়ের একজন ব্যস্ত নির্মাতা এম আর মিজানের সঙ্গে। তিনি হাসতে ভুলে যাওয়া মানুষকে বিনোদন দেয়ার জন্যই যেন একের পর এক হাসির নাটক তৈরি করে আসছেন। আজকে দেশের অন্যতম একজন ডিওপি (ডিরেক্টর অব ফটোগ্রাফি) ও নির্মাতা এম আর মিজানের কিছু কথা ডি-প্রজন্মের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হচ্ছে। এতকিছু থাকতে হাসির নাটক কেন? এ জাতীয় কথার পরিপ্রেক্ষিতেই জানা যায় এম আর মিজানের এই কমেডি ধাঁচ নিয়ে আগ্রহের কারণ। মানুষ নানান প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়ে হয়ত বিমর্ষ হয়ে টেলিভিশন খুলে বসল, সেখানেও নানান মন খারাপ করা বা ভীতিকর খবরাখবরই থাকে। এর মাঝে যদি কোন ভাল মানের কমেডি নাটক দেখতে পারে তাহলে তো অন্তত কিছুটা মন খুলে হাসতে পারবে। হাসি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। হাসির নাটক বানানোর পেছনের কারণ শুনে ভালই লাগল। দিন দিন যন্ত্রে রূপ নেয়া মানুষ প্রাণ খুলে হাসতে পারলেই তিনি যেন আনন্দ পান। এম আর মিজান এ সময়ের একজন ব্যস্ত নির্মাতা। কিন্তু তার কর্মজীবন শুরু হয়েছিল ক্যামেরা সহকারী হিসেবে। ১৯৯৩ সালে এফডিসিতে তিনি মরহুম আজমুল হকের ক্যামেরা সহকারী হিসেবে। তার কাছ থেকেই এম আর মিজান অনেক সহযোগিতা ও অনুপ্রেরণাও পান। এছাড়া আনোয়ার হোসেন বুলু ছিলেন তার একজন আদর্শ। তাকে তিনি অনুসরণ করতেন বলে স্বীকার করে নিলেন। এম আর মিজান চলচ্চিত্রশিল্পী সোহেল আরমান এর সহপাঠী ও বন্ধু। সোহেল আরমানের বাবা চলচ্চিত্র নির্মাতা আমজাদ হোসেন ও তাকে স্নেহ করতেন। তাদের দুজনের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েই নাকি তার প্রথমবারের মতন ডিওপি হিসেবে টেলিভিশিনের জন্য নাটক এর কাজ শুরু হয়েছিল। তখন চ্যানেল আইয়ের প্রথম দিককার প্যাকেজ নাটক প্রচারের জোয়ারের সময়। জনপ্রিয় হাসির নাটক ‘জব্বর আলী’ ছিল ডিওপি হিসেবে তার প্রথম কাজ। চ্যানেল আইতেই তা প্রচারিত হয় এবং বেশ দর্শকপ্রিয় হয়। ক্যামেরার নিয়ে প্রায় বিশ বছর পার করার পর এম আর মিজানের মনে হলো তার নিজের নির্দেশনায় কিছু কাজ করার সময় হয়েছে। মানুষকে দিনে দিনে যন্ত্র হতে দেখেই যেন এই ভাবনা এসেছিল। মানুষের জীবনে কিছু সময়ের জন্য হাসির খোরাক যোগাতেই যেন তার সব চেষ্টা। এভাবেই ২০১৩ সালে আর-টিভিতে তার নির্দেশনায় প্রথম ধারাবাহিক নাটক ‘রান’ প্রচারিত হওয়া শুরু“হয়। এরপর ২০১৪ সাল থেকে গাজী টিভিতে ধারাবাহিক নাটক ‘নায়িকা সংবাদ’, টেলিফিল্ম ‘চোরের ভবিষ্যত’ ও ‘অতিথি’, মাছরাঙা টিভিতে ঈদের ধারাবাহিক ‘মানিকজোড়’, এশিয়ান টিভিতে ধারাবাহিক নাটক ‘প্রেম ভাইরাস’, মাই টিভিতে ধারাবাহিক নাটক ‘দ্য বীচ ক্লাব’ প্রচারিত হয়। আর এখন তার বর্তমান সময়ের ধারাবাহিক নাটক ‘নগর আলো’ প্রচারিত হচ্ছে মাছরাঙ্গা টেলিভিশনে। তার প্রতি নাটকেই প্রতিষ্ঠিত অভিনয়শিল্পীর পাশাপাশি নবীনরাও কাজের সুযোগ পান। তবে নবাগতদের ক্ষেত্রে যারা মঞ্চে অভিনয় করে এসেছে তারাই প্রাধান্য পায়। এম আর মিজানের স্বপ্ন চলচ্চিত্র নির্মাণ করার। সেখানে হাসি-কান্না সবই থাকবে। তবে ঠিক কবে নাগাদ কাজ শুরু হবে তা এখনও তিনি জানালেন না। শীঘ্রই কাজ শুরুর লক্ষ্যে তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন।
×