ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অর্ধবার্ষিকীতে ৫১ ভাগ কোম্পানির আয় বেড়েছে

প্রকাশিত: ২৩:৪৪, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

অর্ধবার্ষিকীতে ৫১ ভাগ কোম্পানির আয় বেড়েছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর অর্ধবার্ষিক বা প্রথম ছয় মাসে (গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর সময়ে মুনাফা আগের তুলনায় বেড়েছে। মোট ৫১ শতাংশ কোম্পানির আগের বছরের তুলনায় শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) বৃদ্ধি পাইলেও শেয়ার দরে তেমন কোন প্রভাব নেই। জানুয়ারি মাসের শেষ এবং ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহের লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, যেসব কোম্পানির ইপিএস উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেড়েছে, সেগুলোর দর বেড়েছে। ইপিএস গত বছরের তুলনায় কমেছে এমন কোম্পানির পাশাপাশি ইপিএস সামান্য বেড়েছে এমন কোম্পানিরও শেয়ার দর গত দুই সপ্তাহ ধরে কমছে। প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৩০ জুন হিসাব বছর সমাপ্ত হয় তালিকাভুক্ত এমন ৯৯ কোম্পানি এখন পর্যন্ত অর্ধবার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে ৫১টির ইপিএস বেড়েছে। কমেছে ৩৩টির। তবে আগের বছরের মতো এ বছরও ১৫ কোম্পানির লোকসান অব্যাহত রয়েছে। ডিএসই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, প্রকৌশল, সেবা ও নির্মাণ, পাট, সিমেন্ট এবং সিরামিক্স খাতের কোম্পানিগুলোর মুনাফা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে। সর্বশেষ প্রান্তিকে অর্থাৎ অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর সময়ে বেশিরভাগ বস্ত্র খাতের কোম্পানির ইপিএস বাড়লেও অর্ধবার্ষিক প্রতিবেদনে মিশ্র প্রবণতা দেখা গেছে। বিপরীতে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির ইপিএস কমেছে। এর মধ্যে সর্বাধিক প্রায় সাড়ে নয় গুণ ইপিএস বেড়েছে ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টসের। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ সমাপ্ত অর্ধবার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী তাদের ইপিএস দাঁড়িয়েছে ১০ টাকা ৯৯ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ১ টাকা ৪ পয়সা। এ ছাড়া ইফাদ অটোসের ইপিএস প্রায় চার গুণ বেড়ে ২ টাকা ৯৬ পয়সায় উঠেছে। দেশ গার্মেন্টসের ইপিএস বেড়েছে প্রায় আড়াই গুণ। আগের বছরের তুলনায় ইপিএস প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে অ্যাপোলো ইস্পাত কমপ্লেক্সের। এ ছাড়া উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ইপিএস বেড়েছে মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ, প্রিমিয়ার সিমেন্ট, সাইফ পাওয়ারটেক, ফু-ওয়াং সিরামিক্স, অ্যামারেল্ড অয়েল, ড্যাফোডিলস কম্পিউটার্স, ওরিয়ন ইনফিউশন, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, জাহিন টেক্স, আলহাজ টেক্সটাইল, লিবরা ইনফিউশন, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, আমান ফিড, ফার কেমিক্যাল, স্কয়ার ফার্মা, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ ও মিথুন নিটিং কোম্পানির। বিপরীতে সর্বাধিক লোকসান বেড়েছে এটলাস বাংলাদেশের। চলতি হিসাব বছরের প্রথম ছয় মাসে কোম্পানির শেয়ার প্রতি লোকসান হয় ৯৬ পয়সা। আগের বছরে তাদের ইপিএস ছিল ২ পয়সা। ইপিএস কমায় এর পরের অবস্থানে থাকা উল্লেখযোগ্য কোম্পানি হলোথ ঢাকা ডায়িং, দেশবন্ধু পলিমার, ইউনাইটেড এয়ার, আমারা টেকনোলোজিস, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, সায়হাম টেক্সটাইল, বঙ্গজ ও তিতাস গ্যাস। তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রকৌশল খাতের ৩২ কোম্পানির মধ্যে ১২টি অর্ধবার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে হিসাব বছরের প্রথম ছয় মাসে ৯ কোম্পানির ইপিএস বেড়েছে। সর্বাধিক ইপিএস বেড়েছে ইফাদ অটোস কোম্পানির। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ সমাপ্ত অর্ধবার্ষিক প্রতিবেদনে কোম্পানির ইপিএস দাঁড়ায় ২ টাকা ৯৬ পয়সা, যা আগের বছর ছিল মাত্র ৬১ পয়সা। ইপিএস বৃদ্ধিতে এর পরের অবস্থানে ছিল অ্যাপোলো ইস্পাত, বিডি অটোকার, কাশেম ড্রাইসেল, অলিম্পিক এক্সেসরিজ ও বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমস। এখন পর্যন্ত বস্ত্র খাতের সর্বাধিক ২৫ কোম্পানি অর্ধবার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে ১০টির ইপিএস কমেছে, বেড়েছে ১১টির এবং ৪টি লোকসান করেছে। সর্বাধিক ২৩৯ শতাংশ ইপিএস বেড়েছে দেশ গার্মেন্টস কোম্পানির। ৫০ শতাংশের ওপর ইপিএস বেড়েছে জাহিনটেক্স, আলহাজ টেক্সটাইল ও মডার্ন ডায়িংয়ের। বিপরীতে ইপিএস অর্ধেকে নেমেছে মেট্রো স্পিনিং, সিএনএ টেক্সটাইল ও ঢাকা ডায়িংয়ের। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের ৯ কোম্পানির মধ্যে ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস, বারাকা পাওয়ার ও পাওয়ার গ্রিডের ইপিএস আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে। পাওয়ার গ্রিড লোকসান কাটিয়ে মুনাফায় এসেছে। চলতি হিসাব বছরের প্রথম ছয় মাসে তাদের ইপিএস ১ টাকা ৩০ পয়সা। গত বছর শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছিল ৮৩ পয়সা। এ খাতের সর্বাধিক সাড়ে ৫৫ শতাংশ ইপিএস কমেছে তিতাস গ্যাসের। ইপিএস কমায় এর পরের অবস্থানে ছিল শাহজিবাজার পাওয়ার, ডেসকো, যমুনা অয়েল, পদ্মা অয়েল ও মেঘনা পেট্রোলিয়াম। আগের বছরের তুলনায় এসব কোম্পানির ইপিএস কমার হার ১৫ থেকে ৪৭ শতাংশ।
×