ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

নানা আনুষ্ঠানিকতায় সুভাষ দত্তের জন্মদিন উদ্্যাপন

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

নানা আনুষ্ঠানিকতায় সুভাষ দত্তের জন্মদিন উদ্্যাপন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অঙ্কনশিল্পী হিসেবে শুরু করেছিলেন পেশাজীবন। আঁকতেন সিনেমার পোস্টার। একসময় বন্দী হলেন সেলুলয়েডে। দক্ষতা দেখালেন অভিনয়ে। এরপর অভিনয় থেকে এলেন পরিচালনায়। ১৯৬৪ সালে নির্মাণ করলেন জীবনের প্রথম চলচ্চিত্র সুতরাং। এভাবেই নিজের জীবনের গতিপথটা বদলে নিয়েছিলেন বরেণ্য চলচ্চিত্রকার সুভাষ দত্ত। মঙ্গলবার ছিল তাঁর ৮৬তম জন্মবার্ষিকী। জন্মদিনে শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় স্মরণ করা বাংলা চলচ্চিত্রের এই গুণীজনকে। প্রকাশিত হলো তাঁকে নিবেদিত স্মারকগ্রন্থ। উদ্বোধন হলো তাঁর নামাঙ্কিত চলচ্চিত্র প্রশিক্ষণ কর্মশালা। তাঁর কীর্তি নিয়ে আলোচনা করলেন বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। সেই সঙ্গে ছিল সঙ্গীত পরিবেশনা। সুভাষ দত্তের জন্মদিন যৌথভাবে উদ্্যাপনের আয়োজন করে সুভাষ দত্ত স্মৃতি পরিষদ ও পরিবার এবং ভারমিলিয়ন ক্রিয়েটিভ আর্টস এ্যান্ড মিডিয়া ইনস্টিটিউট। বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে এ স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ‘সুতরাং তিনি অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী হয়ে রইলেন’ শীর্ষক সুভাষ দত্ত স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উšে§াচিত হয়। সুভাষ দত্ত-অনুশীলন শীর্ষক চলচ্চিত্র প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন করা হয়। স্মারকগ্রন্থটি প্রসঙ্গে সুভাষ দত্ত স্মৃতি পরিষদের আহ্বায়ক ও সুভাষ দত্তের বোন ড. ঝর্ণা দত্ত বলেন, প্রায় তিন বছর ধরে আমরা এই স্মারকগ্রন্থটি প্রকাশের চেষ্টা করছি। এ গ্রন্থে সুভাষকে নিয়ে চলচ্চিত্রবোদ্ধাদের মূল্যায়ন, স্মরণের পাশাপাশি রয়েছে কিছু চিত্রকর্ম। এগুলো সুভাষ দত্ত এঁকেছিলেন চলচ্চিত্রে যুক্ত হওয়ার আগে। সুভাষ দত্ত স্মৃতি পরিষদের সভাপতি ড. মোঃ আব্দুল মজিদের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার, চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ও নির্মাতা কবরী, চলচ্চিত্র গবেষক ও শিক্ষক অনুপম হায়াৎ এবং বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন। সুভাষ দত্তের চিত্রকলার প্রতিভা প্রসঙ্গে মুস্তাফা মনোয়ার বলেন, চমৎকার ছবি আঁকতে পারতেন তিনি। ছবি আঁকাকে পেশা হিসেবে নিলে হয়ত খুব ভাল করতেন। তবে চিত্রকলার জন্য নয়, চলচ্চিত্রের প্রয়োজনে ছবি এঁকেছেন সুভাষ দত্ত। তাঁর সব কাজেই ছিল মননশীল ও নান্দনিক বোধ। কবরী বলেন, সুভাষ দত্তের সঙ্গে যখন কাজ করতাম তখন শুধু মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তাঁর কথা শুনতাম। সব সময়ই নতুন কিছু জানতে পারতাম। আজ আমি জীবনের যে পর্যায়ে পৌঁছেছি সেখানে সুভাষ দত্তের অবদান চিরস্মরণীয়। এই চলচ্চিত্রকারের মাধ্যমেই আমার চলচ্চিত্র জীবনের যাত্রা শুরু হয়েছিল। আজীবন তিনি শিল্প সৃষ্টির জন্য কাজ করেছেন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সুবাতাস ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন। চলচ্চিত্র সমালোচক অনুপম হায়াৎ বলেন, সুভাষ দত্ত আমাদের অহংকার। তাঁর সাথে জড়িয়ে আছে আমার ব্যক্তিগত নানা স্মৃতি। তাঁর চলচ্চিত্র অত্যন্ত উঁচু মানের। ‘সুতরাং’ চলচ্চিত্র দিয়ে তিনি বিশ্ব জয় করেছেন। তিনি এশিয়ার একজন শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রকার। অতিথিরা ‘সুতরাং তিনি অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী হয়ে রইলেন’ গ্রন্থের মোড়ক উšে§াচনের পাশাপাশি ‘সুভাষ দত্ত অনুশীলন’ শীর্ষক চলচ্চিত্র শিক্ষা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। স্মারকগ্রন্থটি সম্পাদনা করেছেন অনুপম হায়াৎ, ড. মাসুম রেজা,র্ া দত্ত ও আহমাদ এ নবীন। সম্পাদনা পরিষদের সভাপতি ছিলেন ড. মোঃ আব্দুল মজিদ। প্রচ্ছদ করেছেন দেবাশিস দাস চন্দন। আলোচনা পর্ব শেষে দেখানো হয় সুভাষ দত্তের কয়েকটি চলচ্চিত্রের চুম্বকাংশ নিয়ে একটি নির্মিত ভিডিওচিত্র। গানের দল মনমৃত্তিকা পরিবেশন করে সুভাষ দত্তের চলচ্চিত্রের কয়েকটি গান। দলটি গেয়ে শোনায় ‘দিগন্তে দাঁড়িয়ে দু’বাহু বাড়িয়ে’, ‘এই যে আকাশ’, ‘তুমি আসবে বলে’, ‘কিছু বলা যায় না’, ‘ঐ মেঘলা বরণ কন্যা’, ‘বাসন্তী রঙ শাড়ি পড়ে’, ‘তুমি কখন এসে দাঁড়িয়ে আছো’, ‘ঘুরে এলাম কত দেখে এলাম’, ‘আমি রিকশাওয়ালা’ এবং ‘জানতাম যদি শুভঙ্করের ফাঁকি। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অর্জিতা দত্ত ইচ্ছা। শিল্পকলায় যুবরাজের জন্মসন্ধ্যা ॥ মঞ্চ থেকে টিভি নাটকে সমান দক্ষতায় অভিনয় করেছেন খালেদ খান। অভিনয়শৈলীর অনবদ্যতায় অনিবার্য হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন শিল্পসংসারে। আপন নামটি ছাপিয়ে সবার ভালবাসায় খ্যাত হয়েছিলেন যুবরাজ নামে। মঙ্গলবার ছিল এই যুবরাজের ৫৯তম জন্মবার্ষিকী ও ষাটতম জন্মদিন। প্রয়াত এই অভিনয়শিল্পীর জন্মদিনটি উদ্যাপিত হলো গান, কবিতা ও কথায়। তাঁকে নিবেদিত স্মৃতিচারণে অংশ নিলেন শিল্প ও সংস্কৃতি ভুবনে বিশিষ্টজনরা। শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে যুবরাজ সংঘ। জয়নুল গ্যালারিতে ‘কালারস অব থার্টিন ॥ এক সময় তাঁরা সবাই ছিলেন চারুকলার শিক্ষার্থী। চারুশিক্ষা নিতে সবাই পাঠ নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষে ১৯৮৯-৯০ ব্যাচের এই ১৩ শিক্ষার্থী ছড়িয়ে যান নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে। তবে শত ব্যস্ততার মাঝেও সৃষ্টিশীল প্রতিভা জাগিয়ে রেখেছে তাঁদের শৈল্পিক চেতনাকে। সেই সূত্রে দ্বিমাত্রিক ও ত্রিমাত্রিক শিল্পকর্ম তাঁরা হাজির হয়েছেন শিল্পানুরাগীদের মাঝে। মঙ্গলবার থেকে চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে শুরু হলো এই ১৩ শিল্পীর শিল্পকর্ম প্রদর্শনী। শিরোনাম কালারস অব থার্টিন। মঙ্গলবার বিকেলে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন খ্যাতিমান শিল্পী অধ্যাপক সমরজিৎ রায় চৌধুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন নন্দিত কার্টুনিস্ট শিশির ভট্টাচার্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শিল্প সমালোচক ড. সৈয়দ আজিজুল হক। সপ্তাহব্যাপী এ প্রদর্শনী চলবে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। যবিপ্রবি’তে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ॥ স্টাফ রিপোর্টার যশোর অফিস থেকে জানান, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ আয়োজিত দুই দিনব্যাপী আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার (বিতর্ক ও আবৃত্তি) উদ্বোধন করা হয়। প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড.আব্দুস সাত্তার। নেত্রকোনায় বসন্তকালীন সাহিত্য উৎসব ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা, নেত্রকোনা থেকে জানান, ‘হরফের নূপুরে নাচি আমরা সবাই’- স্লোগান নিয়ে পয়লা ফাল্গুন (১৩ ফেব্রুয়ারি) শনিবার নেত্রকোনায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিংশতম বসন্তকালীন সাহিত্য উৎসব ও খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান। বরাবরের মতো নেত্রকোনা সাহিত্য সমাজ এ উৎসবের আয়োজন করছে।
×