ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সেমিফাইনাল বৃহস্পতিবার

বাংলাদেশের লক্ষ্য ফাইনাল

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বাংলাদেশের লক্ষ্য ফাইনাল

মিথুন আশরাফ ॥ সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে যে দলকে চেয়েছিল বাংলাদেশ, সেই দলটিকেই পেয়েছে। বৃহস্পতিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই ফাইনালে ওঠার ম্যাচে খেলবে মিরাজবাহিনী। ক্যারিবিয়ানদের হারিয়ে ফাইনালেও খেলতে চায় বাংলাদেশ যুবারা। দলের নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্তই যেমন বলেছেন, ‘ইচ্ছে আছে ফাইনাল খেলার।’ নেপালকে কোয়ার্টার ফাইনালে হারিয়ে সেমিফাইনালে খেলা নিশ্চিত করার পর উইকেটরক্ষক, ব্যাটসম্যান জাকির হাসান বলেছিলেন, ‘অবশ্যই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পেলে (সেমিফাইনালে) খুশি হব। ওদের আমরা ৩ ম্যাচে হারিয়েছি। শক্তিতে এগিয়ে আছি। অবশ্যই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পেলে বেশি খুশি হব।’ জাকিরের সেই আশা পূরণ হয়েছে। জাকিরের মনের কথাটিই বাংলাদেশ যুব দলের প্রত্যেক ক্রিকেটারের মনের কথা ছিল। তা পূরণ হয়েছে। এখন সেমিফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে ফাইনালে খেলার পালা। যে স্বপ্ন দেখছেন শান্ত। অবশ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জানুয়ারিতে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করা গেলেও, সেমিফাইনালে জেতা যাবে, সেই নিশ্চয়তা মিলছে না। ভাল খেলেই জিততে হবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ যতই গ্রুপ পর্বের গ-ি কষ্ট করে অতিক্রম করে আসুক, কোয়ার্টার ফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষেই বুঝিয়ে দিয়েছে কতটা শক্তিশালী দল তারা। পাকিস্তান ২২৭ রানের বেশি করতেই পারেনি। এ রান অনায়াসেই ১০ ওভার বাকি থাকতেই করে ফেলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাতেই বোঝা যাচ্ছে, কোনভাবেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এখন দুর্বল ভাবার উপায় নেই। শান্ত তাই মনে করছেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অনুশীলন করা শেষে বলেছেন, ‘রিল্যাক্সের কোন কিছু নেই এখানে। আমি আগেও বলেছি, যার সঙ্গে ম্যাচ খেলি আমাদের প্রসেস এক রকম থাকবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ হোক, ভারত হোক আর নেপালই হোক। রিল্যাক্সের কিছু নেই। আর আত্মবিশ্বাস বেশিও নেই, কমও নেই। আগে যে রকম ছিল ওরকমই আছে। আমরা ম্যাচ জিতছি প্রথম থেকে, এ কারণে আমরা সবাই ফুরফুরে মেজাজে আছি।’ আগে উইকেট পড়ুক কিংবা না পড়ুক, বাংলাদেশ যুব দলের ড্রেসিংরুমে ভাল অবস্থাই থাকে। সেটি যেন আবারও মনে করিয়ে দিলেন এবার যুব বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে একমাত্র শতক করা ব্যাটসম্যান শান্ত, ‘ড্রেসিং রুমে খেলোয়াড়রা সব সময় ভাল মুডে থাকি। যে রকম সিচুয়েশন থাকুক না কেন। ওই (জেতার) বিশ্বাস আমাদের সব খেলোয়াড়ের মধ্যে আছে। শুরুতেই যদি উইকেট পরে যায়, উইকেট যদি না পরে, ড্রেসিং রুমের পরিবেশ সব সময় একই থাকে।’সেমিফাইনালে ভাল করার প্রত্যয় আছে সব ক্রিকেটারের মনেই। যুব ক্রিকেটারদের একদিনের ফরমেটে সবচেয়ে বেশি ৩৮.৪৫ গড়ে ১৭৬৯ রান করা শান্ত যেমন বললেন, ‘ভাল করার তো শেষ নেই। একটা দুইটা ম্যাচ হতে পারে। ক্রিকেট খেলায় ভাল সময়, খারাপ সময় আসে। তবে আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি ভালই হবে।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘আমাদের ইচ্ছে আছে ফাইনাল খেলার। সবারই আছে। আমরা ফাইনাল নিয়ে চিন্তা করছি না। এখন হয়তবা কেউ বলছে, কেউ বলেনি। আমরা ১১ তারিখের ম্যাচটি নিয়ে চিন্তা করছি। ফাইনালে কে আসবে না আসবে; কি হবে না হবে, এগুলো নিয়ে চিন্তা করছি না।’ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নিজেদের চেয়ে দুর্বলও ভাবছেন না শান্ত, ‘ওরা আমাদের সঙ্গে এর আগে একটা সিরিজ খেলছে। ওরা কিন্তু অনেক দিন ধরেই আমাদের দেশে আছে। এ্যাডজাস্ট করছে ভাল; ওরা ভাল ক্রিকেট খেলছে। স্ট্রং বলব না। যে ভাল ক্রিকেট খেলবে, সেই জিতবে। ওভাবে দেখছি না যে খুব ভাল, স্ট্রং; কিংবা আমরা অনেক বেশি চিন্তিত। আবার এটাও চিন্তা করছি না যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিছু না; আমরা সহজেই জিতব। আমরা আমাদের স্বাভাবিক চিন্তাটাই করছি।’ গ্রুপ পর্বে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৭৩ রান করার পর স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে অপরাজিত ১১৩ রান করেন শান্ত। কিন্তু এরপর গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে নামিবিয়ার সঙ্গে অপরাজিত ১৪ রান করেন। খুব বেশি ব্যাটিং করার সুযোগ পাননি। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে নেপালের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এসে ৮ রান করে আউট হয়ে যান শান্ত। নিজের ব্যক্তিগত নৈপুণ্য নিয়ে শান্ত বলেন, ‘আমার চেষ্টা থাকে প্রতিদিনই রান করার। এখন হতে পারে একটি দিন খারাপ যায়। আমাদের শেষ ম্যাচে যেটা হয়েছে আমি রান করিনি, শেষদিকে (মেহেদী হাসান) মিরাজ-জাকির (হাসান) ভাল সাপোর্ট করেছে। টিমে এমন কিছু নেই যে আমি রান করিনি বলে টিম হেরে যাবে। কিংবা উপরের দুটি ব্যাটসম্যান রান করেনি বলে টিম হেরে যাবে। এ রকম কিছু না। আমি রান করলে অবশ্যই টিমের জন্য ভাল হবে।’ শেষে শান্ত বলেন, ‘যে ভাল করবে, সেই জিতবে। ওরা ওই সময়ে (জানুয়ারিতে) যেটা খেলেছে, সেটা অতীত। ওরা পেস বোলিং শেষ কয়েকদিন ধরে খুব ভাল করছে। অন্যদিকে আমরা শেষ কয়েকদিন বেশ ভাল ব্যাটিং করছি পেস বোলিংয়ে। সেমিফাইনালের মতো একটি জায়গায় যে ভাল করবে, মানসিকভাবে শক্ত থাকবে, তারাই জিতবে ইনশাআল্লাহ। পরিকল্পনা করা সহজ হচ্ছে। কারণ, আমরা ওদের সঙ্গে ম্যাচ খেলেছি। এর আগে ওদের ভিডিও দেখেছি। ওদের আমরা বেশিরভাগই চিনি। এটা আমাদের জন্য এ্যাডভানটেজ।’ এখন দেখা যাক, ফাইনালে খেলার যে আশা শান্তর, তা পূরণ হয় কি না।
×