ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার

জামালপুরের ৮ রাজাকারের বিরুদ্ধে নাসিরউদ্দিন ইউসুফের জবানবন্দী

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

জামালপুরের ৮ রাজাকারের বিরুদ্ধে নাসিরউদ্দিন ইউসুফের জবানবন্দী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত জামালপুরের আলবদর বাহিনীর উদ্যোক্তা আশরাফ হোসেনসহ ৮ রাজাকারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ২২তম সাক্ষী নাসিরউদ্দিন ইউসুফ জবানবন্দী প্রদান করেছেন। জবানবন্দীতে তিনি বলেন মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার আলবদর আলশামসদের গণহত্যা হত্যা ধর্ষণ অগ্নিসংযোগ লুণ্ঠন ও ধর্মান্তরিত করার সাক্ষ্য-প্রমাণ জাতির সামনে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি। ‘মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিন’ শীর্ষক একটি ধারাবাহিক অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের শৌর্যবীর্য তুলে ধরি এবং বীরাঙ্গনা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাতকার গ্রহণ করি। জবানবন্দী শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবী সাক্ষীকে জেরা করেন। পরবর্তী সাক্ষীর জন্য ২৪ ফেব্রুয়ারি দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ বৃহস্পতিবার এ আদেশগুলো প্রদান করেছেন। এ সময় সাক্ষীকে সাক্ষ্যদানে সহযোগিতা করেন প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল, প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন। আসামি পক্ষে ছিলেন এ্যাডভোকেট আব্দুস সোবহান তরফদার ও এ্যাডভোকেট এসএম মিজানুর রহমান। সাক্ষী তার জবানবন্দীতে বলেন, আমার নাম নাসিরউদ্দিন ইউসুফ। আমার বর্তমান বয়স আনুমানিক ৬৫ বছর। আমার বর্তমান ঠিকানা ১১/১/খ পুরানা পল্টন লাইন, ঢাকা। আমি ১৯৬৬ সালে নবাবপুর গবর্নমেন্ট হাইস্কুল থেকে এসএসসি, ১৯৬৮ সালে জগন্নাথ কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ১৯৭০ সালে তিতুমীর কলেজ থেকে বিএ পাস করি। আমি ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতা ও গণসংযোগ বিষয়ে এমএ পাস করি। আমি নাটক ও চলচ্চিত্রের সঙ্গে জড়িত এবং টেলিভিশনে উপস্থাপন করে থাকি। আমি ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশের বর্তমান সভাপতি। আমি আমার নির্মিত চলচ্চিত্র ‘গেরিলা’ ও একাত্তরের যীশুর জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার পাই। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার আনুমানিক বয়স ছিল ২০ বছর। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ তারিখে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র হিসেবে প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং নেয়ার জন্য আমি ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে ভারতে যাই। ভারতে মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং গ্রহণ করার পর মুক্তিযোদ্ধা মানিককে কমান্ডার এবং আমাকে সেকেন্ড ইন কমান্ড করে ঢাকা উত্তর এবং ঢাকা শহরে গেরিলা অপারেশন করার জন্য প্রেরণ করা হয়। আমরা ১৯৭১ সালের জুলাই মাসে ঢাকায় আসার পর আমরা প্রথমে সাভারে বেজ ক্যাম্প স্থাপন করে ঢাকা শহর, ধামরাই ও সাভারে অপারেশন পরিচালনা করি। তিনি জবানবন্দীতে বলেন, আমি চ্যানেল আই টেলিভিশনে ২০০৭ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিন শীর্ষক প্রামাণ্য অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করি। উক্ত প্রামাণ্য অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান হানাদার বাহিনী হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার আলবদর আল-শামসদের গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন ও ধর্মান্তরিত করার সাক্ষ্য-প্রমাণ জাতির সামনে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি। আমি উক্ত অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের শৌর্য-বীর্য তুলে ধরি এবং বীরাঙ্গনা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাতকার গ্রহণ করি। ২০০৯ সালের ২৭ জুলাই আমি চ্যানেল আই টেলিভিশনে সম্প্রচার উক্ত ধারাবাহিক প্রামাণ্য অনুষ্ঠানে একটি পর্বে জামালপুরের গণহত্যার বিষয়ে উপস্থাপন করি।
×