ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কেন্দ্রীয় অফিস নয়

আইডি কার্ড সংক্রান্ত সব সেবা পাওয়া যাবে সংশ্লিষ্ট থানা নির্বাচন অফিসে

প্রকাশিত: ০৫:২০, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

 আইডি কার্ড সংক্রান্ত  সব সেবা পাওয়া  যাবে সংশ্লিষ্ট থানা  নির্বাচন অফিসে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এখন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) সংক্রান্ত যাবতীয় সেবার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। ঢাকার আগারগাঁও জাতীয় নিবন্ধন অনুবিভাগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির পর এ জাতীয় আর কোন আবেদনপত্র গ্রহণ করা হবে না। ইতোমধ্যে নিবন্ধন অনুবিভাগের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগের জন্য বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে কেবল হারানো পরিচয়পত্রের ডুপ্লিকেট সংগ্রহের ক্ষেত্রে জরুরী সেবার আবেদনগুলোই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে করা যাবে। এনআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে গত সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল সংশোধন, ঠিকানা স্থানান্তর ও হারিয়ে যাওয়া পরিচয়পত্রের নকল কপি সংগ্রহসহ চার লাখের বেশি আবেদনপত্র জমা পড়েছে কেন্দ্রীয় এ অফিসে। ফলে উপজেলা পর্যায়ে থেকে যেসব আবেদন কেন্দ্রীয় অফিসে আসছে তা সংশোধনের কাজ আটকে আছে। এ কারণে অনেকেই উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসে না গিয়ে সরাসরি কেন্দ্রীয অফিসে এসে আবেদন করছে। এভাবে জাতীয় পরিচত্র সংশোধনে কাজে ব্যাপক জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। কম পরিমাণ জনবল নিয়ে এত অধিক পরিমাণ কাজ কতে সংস্থাটি হিমশিমও খাচ্ছে। সংস্থার মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মোঃ সালেহ উদ্দীন বলেন, ১৫ ফেব্রুয়ারি পর থেকে এ জাতীয় আবেদনপত্র কেন্দ্রীয় অফিসে গ্রহণ করা হবে না। ভুল সংশোধন, নবায়নের জন্য স্থানীয় নির্বাচন অফিসেই যোগাযোগ করতে হবে। এনআইডির পরিচালক (অপারেশন্স) সৈয়দ মুহাম্মদ মুসা বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে সরকারী চাকরিজীবীর এনআইডি সংশোধনের চাপে গত দুই মাসের বেশি সময় ধরে উপজেলা পর্যায়ের লাখ লাখ আবেদনের নিষ্পত্তি করা যাচ্ছে না। এখানে এভাবে কাজ করতে গেলে শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়বে। ঢাকার ১৫টি থানা নির্বাচন অফিসসহ দেশের ৫১৪টি উপজেলা ও থানা নির্বাচন অফিসে নাগরিকরা জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত সেবা পাবেন। এছাড়ার সেবা বিকেন্দ্রীকরণের জন্যই এ ব্যবস্থা করা হয়েছে। এনআডির কর্মকর্তারা জানান, গত ১৫ নবেম্বর সরকারী চাকরিজীবীদের নতুন বেতন কাঠামোর গেজেট প্রকাশের পর জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের হিড়িক পড়ে। কারণ নতুন স্কেলে বেতন নির্ধারণ করতে চাকরিজীবীদের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহারের নির্দেশনা দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে উল্লেখ করা হয় যাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্ম তারিখ, নামের বানান ও অন্যান্য তথ্য চাকরির রেকর্ড বুক থেকে ভিন্ন, তাদের বেতন নির্ধারণের আগে নিজ উদ্যোগে অবশ্যই এনআইডি সংশোধন করে নিতে হবে। এরপর থেকেই জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগে সংশোধনের আবেদনের হিড়িক পড়তে থাকে। সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিচয়পত্র সংশোধনে সংস্থাকে হিমশিম খেয়ে হয়। জানা গেছে, এ কারণেই গত দু’মাস ধরে উপজেলা পর্যায়ের লাখ লাখ আবেদনের নিষ্পত্তি করাও সম্ভব হচ্ছে না। এনআইডির কর্মকর্তারা জানান, গত সেপ্টেম্বর থেকেই উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে এনআইডি সেবা দেয়া শুরু হয়েছিল। পরে সরকারী কর্মকর্তাদের জন্য তা শিথিল করে আগারগাঁর কেন্দ্রীয় অফিসে আবেদনপত্র জমা নেয়া শুরু হয়। কিন্তু কাজে চাপ বেড়ে যাওয়া এখন বিকেন্দ্রীকরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তাই এখন প্রধান কার্যালয়ে আর আবেদন নেয়া সম্ভব হচ্ছে বিধায় স্ব স্ব উপজেলায় সংশোধনের আবেদন করতে বলা হয়েছে। জানা গেছে, কাজের অতিরিক্ত চাপের কারণে উপজেলা পর্যায়ে আটকে থাকা আবেদনগুলোর মধ্যে প্রতিদিন ৫ হাজার করে আবেদনের নিষ্পত্তি করা হচ্ছে ঢাকায়। এসব আবেদন যাচাই করে প্রয়োজনী এনআইডি প্রিন্ট করে ফের উপজেলায় পাঠানো হচ্ছে। ২০০৮ সালে সারাদেশে ভোটারদের প্রথম জাতীয় পরিচয়পত্রে আওতায় নিয়ে আসা হয়। এরপর থেকে সরকারী ও বেসরকারী গুরুত্বপূর্ণ সব কাজে জাতীয় পরিচয়পত্রের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এমনকি ব্যাংকের এ্যাকাউন্ট খোলা, পাসপোর্ট করা ও সিম নিবন্ধনের ক্ষেত্রেও এখন পরিচয়পত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। যদিও সম্প্রতি দুই দফায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হলেও তাদের এখন পর্যন্ত কোন পরিচয়পত্র দেয়া হয়নি। জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের কর্মকর্তরা বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রধারী সবাইকে স্মার্টকার্ড প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। এ কারণে পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধনের বারবার বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। স্মার্টকার্ড যেহেতু নির্ভুল তথ্য দিয়ে করা হবে এ কারণে যাদের পরিচয়পত্রে ভুলত্রুটি রয়েছে তাদের সংশোধন করে নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি যাদের নাম নিবন্ধন করা হয়েছে জরুরী প্রয়োজন ছাড়া তাদের আর কোন পরিচয়পত্র দেয়া হচ্ছে না। তাদের একবারে স্মার্টকার্ড তুলে দেয়া হবে। এর আগে সারাদেশে ৯ কোটি ২০ লাখ ভোটারকে লেমিনেটিং করা পরিচয়পত্র দেয়া হয়েছে। এখন চলছে স্মার্টকার্ড তৈরি কাজ।
×