ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পোশাকে বসন্তের আমেজ ও একুশের আবহ

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

পোশাকে বসন্তের আমেজ ও একুশের আবহ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবসাজে সজ্জিত প্রকৃতির বসন্তের রূপটি এসে ভর করেছে পোশাকে। লাল, হলুদ বাসন্তী, সবুজসহ রকমারি রঙের কাপড়ে যুক্ত ঋতুরাজের নানা অনুষঙ্গ। একইসঙ্গে ফাগুন মাসের অমর একুশের আবহটি জুড়ে গেছে বাহারি সব বস্ত্রে। ছেলেদেশের টি-শার্ট কিংবা পাঞ্জাবি থেকে শুরু করে মেয়েদের সালোয়ার-কামিজ ও শাড়িতে ধরা দিয়েছে ভাষা আন্দোলনের সাক্ষ্যবহ অমর একুশ ও ফাগুনের রঙমাখা বসন্ত। এমন পোশাকের দেখা মিলল শাহবাগের আজিজ কো-অপারেটিভ সুপার মার্কেট প্রাঙ্গণে। শুক্রবার থেকে এখানে শুরু হলো বাংলাদেশ টি-শার্ট উৎসব। বিকেলে প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে চার দিনের এ উৎসবের সূচনা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ফ্যাশন বিষয়ক পরামর্শক চন্দ্রশেখর সাহা, চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও অভিনেত্রী আফসানা মিমি। বক্তব্য রাখেন পোশাক হাউস নিত্য উপহারের স্বত্বাধিকারী বাহার রহমান। উদ্বোধনী আনুষ্ঠাকিতা শেষে ছিল লালন বার্তাবাহক দলের লালনসঙ্গীত পরিবেশনা ও ব্যান্ড শো দিয়ে সাজানো সাংস্কৃতিক পর্ব। সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, এ উৎসবের মাধ্যমে মূলত দেশীয় পোশাকের উপস্থাপনাটি তুলে ধরা হচ্ছে। টি-শার্টের মধ্যে কবিতার লাইন কিংবা কোন বড় শিল্পীর আঁকা ছবির প্রতিচ্ছবিটি যেন বলে যায় স্বদেশেরই কথা। খুঁজে পাওয়া যায় বাংলাদেশকে। আজিজ সুপার মার্কেটের ২৫২টি দেশীয় পোশাক প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই টি-শার্ট উৎসব ও পোশাক মেলা। ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলমান উৎসব প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে। প্রতিদিন বিকেলে থাকবে সাংস্কৃতিক আয়োজন। জাদুঘরে ঋত্বিক ঘটক রেট্রোস্পেক্টিভ শুরু ॥ বাংলা চলচ্চিত্রের প্রবাদ পুরুষ ঋত্বিক কুমার ঘটক। ঢাকায় জন্ম নিয়েও সাতচল্লিশের দেশভাগের পরিণামে পাড়ি জমিয়েছিলেন ভারতে। সেখানেই থিতু হয়ে নির্মাণ করেছিলেন ধ্রুপদী ধারার বাংলা ছবি। বাংলা সিনেমায় যেন যুক্ত হয়েছিল নতুন সংবেদÑযার ওপরিতলটি প্রাচ্যদেশীয়, কিন্তু গভীরে তা বিশ্ব মানবের। সমাজের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ প্রবাদপ্রতিম এই চলচ্চিত্র নির্মাতার ৯০তম জন্মবার্ষিকী ও ৪০তম প্রয়াণবার্ষিকী উপলক্ষে শুরু হলো ‘ঋত্বিক ঘটক রেট্রোস্পেক্টিভ’। শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে ছয় দিনব্যাপী ছবি দেখার এ আয়োজনের সূচনা হয়। ছবিপ্রেমীদের জন্য উন্মুক্ত আয়োজনটিতে প্রদর্শিত হবে ঋত্বিক ঘটক নির্মিত ৮টি ছবি। যৌথভাবে এ রেট্রোম্পেক্টিভের আয়োজন করেছে চলচ্চিত্রম ফিল্ম সোসাইটি ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর। অতিথিদের প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ও ঋত্বিক ঘটকের মেয়ে সংহিতা ঘটক। স্বাগত ভাষণ দেন চলচ্চিত্রম ফিল্ম সোসাইটির নির্বাহী সভাপতি মোরশেদুল ইসলাম। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। আলোচনায় অংশ নেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়। সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সোসাইটির সাধারণ মুনিরা মোরশেদ মুন্নী। প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ঋত্বিক ঘটকের চলচ্চিত্রে বাঙালীর জীবন গাঁথার স্বার্থক রূপায়ন ঘটেছে। সেলুলয়ডের ফিতায় বন্দী এসব চলচ্চিত্র কাহিনী বিন্যাস, চরিত্রায়ন ও অভিনয় দক্ষতায় বাঙালীর আত্মপরিচয়ের বহুমাত্রিক দিক উন্মোচন করেছে। এই রেট্রোস্পেক্টিভে বাংলা সাহিত্যের কালজয়ী সাহিত্যিকদের কাহিনীর চলচ্চিত্র ধারণে ঋত্বিক ঘটকের নিপুণ কুশলতার পরিচয় পাওয়া যাবে। ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বলেন, ঋত্বিক ঘটক বাংলা ও বাঙালীর গর্বিত চলচ্চিত্রকার। ধ্রুপদী ধারার সাহিত্যকে তিনি তাঁর পর্যবেক্ষণে অসাধারণ নিদের্শনায় প্রাণবন্ত করে তুলেছেন। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রদর্শিত ঋত্বিক ঘটক নির্মিত ছবি নাগরিক। ৬ দিনের এ ছবি দেখার আয়োজনে প্রদর্শিত হবে ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত ছবি নাগরিক, অযান্ত্রিক, বাড়ি থেকে পালিয়ে, মেঘে ঢাকা তারা, কোমল গান্ধার, সুবর্ণরেখা, তিতাস একটি নদীর নাম এবং যুক্তি, তক্কো আর গপ্পো। উত্তরায় থিয়েটার অঙ্গন পথনাট্যোৎসব ॥ গীতাঞ্জলি ললিতকলা একাডেমির আয়োজনে রাজধানীর উত্তরার রবীন্দ্র স্মরণীর বটমূলে শুরু হলো থিয়েটার অঙ্গন পথনাট্যোৎসব। উৎসবের সেøাগান ‘মুক্ত করো ভয়, আপনা মাঝে শক্তি ধরো, নিজেরে করো জয়’। শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রধান অতিথি হিসেবে উৎসব উদ্বোধন করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট তারানা হালিম। উদ্বোধনী সভায় সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক ইমেরিটাস রফিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন আইটিআই সম্মানিত সভাপতি রামেন্দু মজুমদার, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী ও বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সভাপতি মান্নান হীরা। আখতারুজ্জামান ইলিয়াস কথাসাহিত্য পুরস্কার ॥ শুক্রবার ছিল বরেণ্য কথাসাহিত্যিক আখতারুজ্জামান ইালিয়াসের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী। এ উপলক্ষে প্রদান করা হলো বাঙলার পাঠশালার আখতারুজ্জামান ইলিয়াস ইলিয়াস কথাসাহিত্য পুরস্কার ২০১৫। পুরস্কারটি পেয়েছেন লেখক ওয়াসি আহমেদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাঙলার পাঠশালা।
×