ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আরডিএর কোটি টাকার সুপার মার্কেটে বস্তিবাসীর বসবাস!

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

আরডিএর কোটি টাকার সুপার মার্কেটে বস্তিবাসীর বসবাস!

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ রাজশাহী মহানগরীর অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত পদ্মা আবাসিক এলাকা। আধুনিক নাগরিকসেবা নিশ্চিত করতে এ অভিজাত এলাকা গড়ে তোলা হয়। নগরের অভিজাত মানুষের বাসস্থানও গড়ে উঠেছে সেখানে। তবে সেখানে নাগরিক সুবিধার জন্য রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) কোটি টাকার সুপার মার্কেটের অবকাঠামো গড়ে উঠলেও আলোর মুখ দেখেনি। কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা এসব সুপার মার্কেট এখন মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। সেখানে গড়ে উঠেছে রীতিমতো বস্তি। অভিজাত পদ্মা আবাসিক এলাকা হয়ে পাশেই চন্দ্রিমা আবাসিক এলাকার দিকে যেতে রাস্তার পাশের একটি ভবন দেখে মনে হতে পারে এটি একটি বস্তি। কিন্তু বস্তি নয়। পদ্মা আবাসিক এলাকার মানুষের সুবিধার জন্য তৈরি করা হয়েছিল এই মার্কেটটি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে অব্যবস্থাপনায় এখন বেহাল দশা। যেন দেখার কেউ নেই। মূলত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সুপার মার্কেটে এখন গড়ে উঠেছে বস্তি। রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) উদ্যোগে আবাসিক এলাকার মার্কেটগুলো ব্যবহার না হওয়ায় অরক্ষিত অবস্থায় দিনের পর দিন ধসে পড়ার উপক্রম। অভিযোগ উঠেছে, ডেভেলপার ও আরডিএর কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশেই কোন পরিকল্পনা ও সম্ভাব্যতা যাচাই না করে তৈরি করা হয়েছে এসব মার্কেট। ফলে টাকা বিনিয়োগ করেও কোন লাভ তুলতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি। আরডিএর উদ্যোগে নগরীতে আছে আরও ৬টি সুপার মার্কেট। যেগুলোর মধ্যে কোনটির কাজ শেষ হয়েছে, আবার কোনটির কাজ শেষ না হতেই যে যার মতো দখলে নিয়েছেন। তবে আরডিএ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ বজলুর রহমান জানান, তিনি দায়িত্ব নেয়ার আগেই এই মার্কেটগুলোর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। তবে মার্কেটগুলো কোন পরিকল্পনা ছাড়াই করা হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। যে কারণে এগুলো এখন কোন কাজে আসছে না বলেও দাবি করেন তিনি। অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে তৈরি নগরীর পদ্মা আবাসিক এলাকার পদ্মা সুপার মার্কেট নির্মাণ কাজ শেষে দোকানও বরাদ্দ হয়েছে। তবে তাতে নেই কোন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। এক যুগ আগে কোটি টাকা ব্যয়ে মার্কেটটি নির্মাণ হলেও এখন সেখানে ছিন্নমূল মানুষরা বসবাস করছে। পদ্মা আবাসিকের পাশেই আরও একটি আবাসিক এলাকার মহানন্দা সুপার মার্কেটিও আরডিএর উদ্যোগে তৈরি হয়েছে বছর পাঁচেক আগে। কিন্তু এখানকার চিত্রও সেই একই। সন্ধ্যা নামলেই মাদকসেবীদের আখরায় পরিণত হয় অরক্ষিত দোকান ঘরগুলো। পদ্মা আবাসিক এলাকায় বসবাসকারী অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা ফজলুল হক জানান, পদ্মা আবাসিকের এই মার্কেটটি কোন কাজে আসে না বরং মার্কেটটির কারণে এলাকার সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে। মার্কেটিতে বস্তি গড়ে তোলায় রাতের বেলা চুরি-ছিনতাইও বেড়েছে। সেটি এখন মাদকাসক্তদের আখড়া। সন্ধ্যা নামলেই ভিড় বাড়ে মাদকসেবী আর অপরাধীদের। বছরের পর বছর মার্কেটগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকলেও এ নিয়ে নতুন কোন পরিকল্পনা নেই আরডিএর। আরডিএ চেয়ারম্যান বজলুর রহমান জানান, পরিকল্পনা ছাড়াই নির্মাণ করা ওই মার্কেটগুলো নিয়ে তারা আপাতত নতুন করে কিছু ভাবছেন না।
×