ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তবু বাড়ছে ডাকাতি

নারায়ণগঞ্জে দুই মাসে গণপিটুনিতে ১১ ডাকাত নিহত

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

নারায়ণগঞ্জে দুই মাসে গণপিটুনিতে ১১ ডাকাত নিহত

মোঃ খলিলুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ ॥ নারায়ণগঞ্জে গত ৬৩ দিনে দুটি ঘটনায় গণপিটুনিতে ১১ ডাকাত নিহত হয়েছে। তবুও থেমে নেই ডাকাতির ঘটনা। দিন দিন বাড়ছে ডাকাতির মতো জঘন্যতম অপরাধটি। ডাকাতদের হামলায় আহতও হচ্ছে অনেকেই। এতে দিন দিন আরও ক্ষুব্ধ হচ্ছে এলাকাবাসী। সর্বশেষ গত শনিবার রূপগঞ্জে গণপিটুনিতে নিহত হয়েছে ৩ ডাকাত। ফলে দিন দিন গ্রামবাসী ডাকাত প্রতিরোধে ফুসে উঠছে। জানা গেছে, জেলার ৫টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ডাকাতির ঘটনা ঘটছে আড়াইহাজার উপজেলায়। খোদ পুলিশ প্রশাসনও বলছে, আড়াইহাজার হচ্ছে ডাকাতপ্রবণ এলাকা। ২০১৫ সালের ১০ ডিসেম্বর ভোরে আড়াইহাজার উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের পুরিন্দা বাজারে একটি চালের আড়তে ডাকাতির সময় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর গণপিটুনিতে নিহত হয় সোহাগ, রাজিব ওরফে রনি, জুয়েল ওরফে টিটু, রুবেল, ছোটন, একাব্বর আলী, আবু তাহের ও দুলাল মিয়া নামে আট ডাকাত। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, আড়াইহাজারে গণপিটুনিতে ৮ ডাকাত নিহত হওয়ার পরও থেমে নেই ডাকাতির ঘটনা। প্রায় রাতেই বাসাবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সড়কে ডাকাতির ঘটনা ঘটেই চলেছে। গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে আড়াইহাজারের খাগকান্দা ইউনিয়নের শম্ভুপুরা গ্রামের সোদিপ্রবাসী জহিরের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতরা ওই বাড়ি থেকে স্বর্ণালঙ্কারসহ তিন লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। গত ১৬ জানুয়ারি রাতে আড়াইহাজারের খাগকান্দা ইউনিয়নের হোগলাকান্দা গ্রামের আঃ মান্নানের বাড়িতে একদল ডাকাত হানা দেয়। ডাকাত দল গৃহকর্তা আঃ মান্নানকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। একই রাত ২টার দিকে উপজেলার উচিতপুরা ইউনিয়নের কাদিরদিয়া গ্রামের মৃত কাজী আঃ খালেকের বাড়িতে ডাকাত দল হানা দেয়। এখানেও ঘটতে পারত গণপিটুনির ঘটনা। এভাবেই আড়াইহাজারে ডাকাতির ঘটনা ঘটেই চলেছে। এদিকে সর্বশেষ শনিবার ভোরে রূপগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের জিন্দা উত্তরপাড়ায় রাজ্জাক শিকদারের বাড়িতে একদল ডাকাত হানা দেয়। এ সময় গ্রামবাসী ডাকাতির খবর পেয়ে একত্রিত হয়ে এজাজুল ইসলাম ও নাসির উদ্দিনসহ তিনজনকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে। অনেকেই বলছেন, আড়াইহাজারে ৮ ডাকাত গণপিটুনিতে নিহত হওয়ার পর ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী প্রতিরোধে ডাকাতদের ওপর হামলে পড়ছে। এখনই যদি ডাকাতির ঘটনা প্রতিরোধ না করা যায়, তবে আবারও ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী আইন হাতে তুলে নিয়ে ডাকাতদের গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করতে পারে বলে অভিজ্ঞমহল মনে করছেন। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার সহকারী পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) এ কে এম জহিরুল ইসলাম জানান, আড়াইহাজারসহ ওই এলাকাটি ডাকাতপ্রবণ এলাকা হওয়ায় ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। তবে প্রতিরাতেই ডাকাত প্রতিরোধে কোন কোন থানায় ১০-১২টি কিংবা ১৫-১৬টি পুলিশে রাতভর টহল দিচ্ছে। আমরা প্রতিনিয়তই ডাকাতদের গ্রেফতার করছি। মালামালও উদ্ধার করছি। তবে আগের তুলনায় এখন ডাকাতির ঘটনা কমেছে।
×