ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পাকিস্তান ও খালেদার ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদে ১৪ কিমি মানববন্ধন, গগনবিদারী স্লোগান

গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী এক আওয়াজ- বাংলায় রাজাকারের ঠাঁই নেই

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী এক আওয়াজ- বাংলায় রাজাকারের ঠাঁই নেই

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী। দীর্ঘ ১৪ কিলোমিটার পথ। প্রখর রৌদ্র উপেক্ষা করে এই দীর্ঘ পথে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী লাখো মানুষ হাতে হাত ধরে গড়ে তোলে মানবপ্রাচীর। সর্বত্রই মানুষের ঢল। তাদের কণ্ঠে একাত্তরের পরাজিত শত্রু পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন আর তাদের এদেশীয় দোসরদের রাজনীতি নিষিদ্ধের প্রচ- দাবি। ছিল গগণবিদারী একই আওয়াজ- ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় রাজাকারদের ঠাঁই নাই, পাকিস্তানের দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান।’ ঢাকাজুড়ে মানববন্ধন কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে ১৪ দলের নেতারা মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার বিরুদ্ধে পাকিস্তান ও খালেদা জিয়াসহ বিএনপি-জামায়াতের চক্রান্ত বন্ধের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। এই দীর্ঘ পথের ১৪ স্পটে মানববন্ধন কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে ১৪ দলের শীর্ষ নেতারা বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে ‘পাকিস্তানের এজেন্ট ও দোসর’ আখ্যায়িত করে বলেছেন, যারা ত্রিশ লাখ শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধের ষড়যন্ত্র করে- তারা রাষ্ট্রদ্রোহী ও দেশের শত্রু। পাকিস্তানী এজেন্ট ও দোসরদের স্থান বাংলাদেশের মাটিতে হতে পারে না। খালেদা জিয়া পাকিপ্রেম ছেড়ে সুস্থ রাজনৈতিক ধারায় ফিরে না এলে দেশের মানুষই তাকে প্রতিহত করবে। আর স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তানের কোন ধরনের হস্তক্ষেপ কিংবা মন্তব্য বিজয়ী বাঙালী জাতি মুখ বুঝে সহ্য করবে না। এমন ঘৃণ্য অবস্থান পরিবর্তন না করলে পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকবে কি-না, সেটিও এদেশের মানুষ নতুন করে ভেবে দেখবে। বক্তারা অবিলম্বে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন, জামায়াতসহ রাজাকার-আলবদর ও তাদের দোসরদের রাজনীতি নিষিদ্ধ, ভোটাধিকার হরণ ও সরকারী চাকরিতে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য দ্রুত আইন প্রণয়নের দাবি জানান। এমনিভাবে রাজধানীতে মানববন্ধন কর্মসূচীতে লাখো মানুষের স্রোত নামিয়ে সোমবার বড় ধরনের শো-ডাউন করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রাম সম্পর্কে পাকিস্তান ও বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার কটূক্তি এবং ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদে ১৪ দলের উদ্যোগে গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত দীর্ঘ ১৪ কিলোমিটার রাস্তায় এই মানবন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়। জাতীয় সংসদ থেকেও ১৪ দলের নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা বেরিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচীতে অংশ নিতে দেখা যায়। তবে এ মানববন্ধন কর্মসূচীকে ঘিরে রাজধানীতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। বিকেল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার মানববন্ধন কর্মসূচী শেষে ১৪ দলের পরবর্তী নতুন কর্মসূচী ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, পাকিস্তান ও বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার দেশের স্বাধীনতা ও মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি দেশের সকল জেলা শহরে ১৪ দলের উদ্যোগে বিকেল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত মানবন্ধন কর্মসূচী পালন করা হবে। বেলা ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার এই মানবপ্রাচীর কর্মসূচীতে সর্বত্রই ছিল মানুষের ঢল। প্রতিটি থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন থেকে অজস্র মিছিল নিয়ে এই মানবপ্রাচীরে অংশ নেন চৌদ্দ দলের নেতাকর্মী-সমর্থক ছাড়াও স্বাধীনতার পক্ষের অসংখ্য মানুষ। আর প্রতিটি স্থানেই ছিল পাকিস্তান ও তাদের এদেশীয় দোসরদের প্রতি প্রচ- ধিক্কার আর ঘৃণার বহির্প্রকাশ। বিভিন্ন পয়েন্টে রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অংশগ্রহণ এক অন্যরকম পরিবেশের সৃষ্টি করে। গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে এই মানবপ্রাচীরের সূচনা। সেখান থেকে শ্যামলী, আসাদগেট, কলাবাগান, রাসেল স্কোয়ার, গ্রীন রোড, বসুন্ধরা মার্কেট, সোনারগাঁও হোটেল মোড় হয়ে শাহবাগ, সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানের সামনে হয়ে মৎস্য ভবন, প্রেসক্লাব, পল্টন মোড় হয়ে নূর হোসেন স্কোয়ার, গুলিস্তান বঙ্গবন্ধু স্কোয়ার থেকে পার্কের ভেতর হয়ে ইত্তেফাক মোড়, রাজধানী সুপার মার্কেট হয়ে সায়েদাবাদ হয়ে যাত্রাবাড়ী গিয়ে এই মানবপ্রাচীর শেষ হয়। আর এ দীর্ঘ পথের বিভিন্ন পয়েন্টে আওয়ামী লীগসহ চৌদ্দ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা এই মানবপ্রাচীর কর্মসূচীতে নেতৃত্ব দেন। ঢাকা মহানগরীর প্রায় একশ’টি থানা থেকে পাকিস্তান ও খালেদা জিয়ার বিচারের দাবিতে বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন ও প্লাকার্ড নিয়ে অজস্র মিছিল নির্দিষ্ট করে দেয়া স্থানে এসে গড়ে তোলে এই মানবপ্রাচীর। কর্মসূচীতে অংশ নেয়া হাজার হাজার মানুষের গগণবিদারী সেøাগানে প্রকম্পিত ছিল রাজপথ। সর্বত্রই সেøাগান ছিল প্রায় একই- ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, রাজাকার-যুদ্ধাপরাধীদের ঠাঁই নাই’, পাকিস্তানী খালেদা, পাকিস্তানে ফিরে যা, বীর বাঙালী ঐক্য গড়, পাকি এজেন্টদের বিচার করো, ‘যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমা নাই, এক দড়িতে ফাঁসি চাই’ ইত্যাদি। কর্মসূচীতে অংশ নেয়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হাজার হাজার মানুষ হাতে হাত ধরে স্বাধীনতাবিরোধীদের নির্মূল না করা পর্যন্ত রাজপথ ছেড়ে না যাওয়ার দীপ্ত শপথ গ্রহণ করেন। পাকিস্তানের কোন ধরনের হস্তক্ষেপ সহ্য করা হবে না- নাসিম ॥ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউর বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সামনে ১৪ দলের বিশাল মানববন্ধন কর্মসূচীতে সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, পাকিস্তান এখনও পরাজয়ের গ্লানি ভুলতে পারেনি। তাই তাদের দোসর খালেদা জিয়াকে দিয়ে তারা নানা ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ সম্পর্কে পরাজিত ও ব্যর্থ রাষ্ট্র পাকিস্তানের কোন ধরনের হস্তক্ষেপ বাঙালী জাতি মুখ বুঝে সহ্য করবে না। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল মানুষকে ইস্পাতকঠিন ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যখন কুখ্যাত রাজাকারদের বিচার কার্যকর হচ্ছে তখন পরাজিতরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চায়। বিএনপি তাদের জন্য মায়াকান্না করে বাঁচাতে না পেরে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র শুরু করে দিয়েছে। তাদের এই ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতেই সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আজ আমরা রাজপথে নেমেছি। সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, এটাই আমাদের প্রতিবাদের ভাষা, শান্তির ভাষা। আমরা কোনদিন জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি করিনি, এখনও করব না। বিএনপির উদ্দেশে নাসিম বলেন, আপনারা পাকিস্তান প্রেম বন্ধ করুন। আপনাদের নির্বাচনে পরাজিত করেছি, ভবিষ্যতেও কোন নির্বাচনে আপনারা জয়ী হতে পারবেন না। ২০১৯ সালের নির্বাচনে আসুন, দেখি কে জয়ী হয়। আমার দেশের পতাকাকে অপমান করা হলে তা মেনে নেয়া হবে না। খালেদা জিয়াকে বলব- আপনি অনেক ষড়যন্ত্র করেছেন, মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছেন। এখনও সময় আছে পাকিস্তানের প্রেম ভুলে না গেলে দেশের জনগণ আপনাকে ক্ষমা করবে না। আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে কোন কথা বলেননি। এখন গদী হারানোর যন্ত্রণা আর ক্ষমতায় যাওয়ার লোভে উনি পাকিস্তানের শিখিয়ে দেয়া বুলি আওড়াচ্ছেন। রাজনীতিতে পরাজিত খালেদা জিয়াকে আরেক পরাজিত পাকিস্তান লাইফ জ্যাকেট পরিয়ে রক্ষা করার চেষ্টা করছে। কিন্তু পারবে না। খালেদা জিয়া ৯২ দিন ধরে যত মানুষকে হত্যা করেছে, দেশের সম্পদ ধ্বংস করেছে, তার প্রতিটি পয়সার হিসাব জনগণ তাঁর কাছ থেকে নেবে। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, খালেদা জিয়া পাকিস্তানের এজেন্ট ও চর হয়ে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার স্বামী জিয়াউর রহমানও পাকিস্তানের চর হয়ে কাজ করেছেন। কিন্তু দেশের মানুষ এসব মুখ বুঝে সহ্য করবে না। পাকিস্তানী এজেন্টদের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করেই দেশের উন্নয়নের জয়রথ আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক অবিলম্বে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ, তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত, স্বাধীনতাবিরোধীদের ভোটাধিকারহরণ এবং সরকারী চাকরিতে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য নতুন আইন প্রণয়নের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান। মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে ও মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রমের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়া, ন্যাপের এ্যাডভোকেট এনামুল হক, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ডাঃ ওয়াজেদুল ইসলাম খান, হাজী মোহাম্মদ সেলিম এমপি, শাহে আলম মুরাদ, ডাঃ দিলীপ রায়সহ ১৪ দল নেতারা। এ স্পটে ওমর ফারুক চৌধুরী ও হারনুর রশীদের নেতৃত্বে যুবলীগের বিশাল শোডাউন সবার নজর কাড়ে। খালেদা জিয়া ও পাকিস্তানের কণ্ঠ অভিন্ন- তোফায়েল ॥ রাজধানীর ধানম-িতে রাসেল স্কয়ারে ১৪ দলের মানববন্ধন কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, যারা ত্রিশ লাখ শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলে ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধে ষড়যন্ত্র করে- তারা রাষ্ট্রদ্রোহী ও দেশের শত্রু। আজ খালেদা জিয়া আর পাকিস্তানের কণ্ঠ অভিন্ন। তিনি বলেন, পাকিস্তানীরা বঙ্গবন্ধুর কাছে পরাজিত হয়েছে। আর পাকিস্তানীদের দোসর খালেদা জিয়া পরাজিত হয়েছেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার কাছে। তিনি বার বার পরাজিত হয়েছেন। আগামী দিনেও শেখ হাসিনারা কাছে পরাজিত হবেন খালেদা জিয়া। তোফায়েল আহমেদ বলেন, খালেদা জিয়া ও পাকিস্তান বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার ধারাকে বন্ধ করতে চায়। তারা অগ্রগতির এই ধারা বন্ধ করে বঙ্গবন্ধুর বাংলাকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। দেশের জনগণকে সম্মিলিতভাবে এসব ষড়যন্ত্র মোকাবেলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ যখন পাকিস্তানের চেয়ে সব দিক থেকে এগিয়ে ও স্থিতিশীল, তখন নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। তাদের ষড়যন্ত্রের সঙ্গী পেয়েছে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে। পাকিস্তান যে ভাষায় কথা বলে, খালেদা জিয়াও তাদের প্রতিনিধি হয়ে সেই ভাষাতেই কথা বলেন। পাকিস্তান তাদের পার্লামেন্টে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে, আর খালেদা জিয়া দেশে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক তোলেন। পাকিস্তান একটি অকার্যকর রাষ্ট্র। তাই বাংলাদেশকেও অকার্যকর বানানোর ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে তারা। কিন্তু দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ থাকলে তারা কিছুই করতে পারবে না। তোফায়েল আহমেদ ছাড়াও এখানে মানববন্ধন কর্মসূচীতে অংশ নেন মুকুল বোস, ড. আবদুর রাজ্জাক এমপি, আহমদ হোসেন, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, খায়রুজ্জামান লিটন, এম এ মান্নান, এস এম কামাল হোসেন, হুইপ আতিউর রহমান আতিক, সাগুফতা ইয়াসমীন এমিলি এমপি, কেয়া চৌধুরী এমপি, তাজুল ইসলাম এমপি, শফিকুল ইসলাম শিমুল এমপি, নাভানা আক্তার এমপি, উম্মে রাজিয়া কাজল এমপি, হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া এমপি, যুব মহিলা লীগের অপু উকিল, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ প্রমুখ। এদিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজার মোড়ে মানববন্ধন কর্মসূচীতে নেতৃত্ব দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন এমপি। কেন্দ্রীয় নেতা এ কে এম রহমতুল্লাহ এমপি, শফিউল্লাহ শফিসহ উত্তরা, খিলক্ষেত, বাড্ডা ও তেজগাঁও এলাকার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু বিরোধী শক্তি টিকবে না- ওবায়দুল কাদের ॥ রাজধানীর আসাদগেট সংলগ্ন আড়ংয়ের সামনে ১৪ দলের মানববন্ধন কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যতই কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য ও বিষোদগার করুক, খালেদা জিয়াসহ এই অপশক্তিরা কোনদিনই টিকবে না। কারণ বাংলাদেশের মাটিতে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী কোন শক্তিকে হজম করবে না। তিনি বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা দেশকে স্বাধীন করেছি। স্বাধীনতার ৪৫ বছরে আজ বাংলাদেশে পাকিস্তানের চেয়ে সকল সূচকে এগিয়ে রয়েছে। আমরা আর্থ-সামাজিক থেকে সকল সূচকে পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছি। শুধু পরমাণু বোমার সূচকে তাদের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছি। আমরা এই ‘ধ্বংসের বোমা’ পরমাণু বোমা চাই না। আর পাকিস্তানের কোন নেতাই এখন শেখ হাসিনার ধারে কাছেও নেই। আজকে তিনি সারাবিশ্বে বাংলাদেশকে উন্নয়নের বিস্ময়ে পরিণত করেছেন। কাজেই মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যতই কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য ও যত বিষোদগার করুক না কেন বাংলাদেশের মাটিতে ‘মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধু’র বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বেগম জিয়া শুধু নয়; দেশের কোন শক্তিই ঠিকবে না। বাংলাদেশের মাটি কোনদিনই তাদের আস্ফালনের কাছে নতিস্বীকার করবে না। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আজকে গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত সারিবদ্ধভাবে মানুষ দাঁড়িয়েছে একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও তাদের দোসর খালেদা জিয়ার মুক্তিযুদ্ধেও চেতনা ধ্বংসের প্রতিবাদে। খালেদা জিয়া ও তার দল বিএনপি পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের যোগানদাতা হিসেবে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তার প্রতিবাদেও আজকে ১৪ দলের আহ্বানে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধকামী মানুষ মানববন্ধন কর্মসূচীতে রাস্তার দাঁড়িয়েছে।
×