ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ক্রিকেটের বড় টুর্নামেন্ট আয়োজনে সক্ষম বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৭:১৮, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

ক্রিকেটের বড় টুর্নামেন্ট আয়োজনে সক্ষম বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দারুণ সফলভাবে এবং নির্বিঘেœই বাংলাদেশ আয়োজন করল অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেট। ১৯ দিনের এ টুর্নামেন্টে ৪৮ ম্যাচ আয়োজিত হয়েছে। যদিও তিনবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া তাদের যুব দলকে পাঠায়নি এবার নিরাপত্তার অজুহাত তুলে। আর সে বিষয়টি নিয়েই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানালেন যেকোন বড় ক্রিকেট আসর সফলভাবে আয়োজন করতে সক্ষম বাংলাদেশ সেটা আরেকবার প্রমাণ হয়েছে। অবশ্য সেটা স্বীকার করলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) সভাপতি জহির আব্বাসও। তিনি মনে করেন এ ধরনের বড় টুর্নামেন্টের জন্য বাংলাদেশই সবচেয়ে উপযুক্ত আয়োজক। তবে অস্ট্রেলিয়া খেলতে না আসায় আইসিসির কিছুই করার নেই বলে হতাশা ব্যক্ত করেছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ডেভিড রিচার্ডসন। তবে এরপরও বেশ উপভোগ্য ও জমজমাট একটি আয়োজন সম্পন্ন হওয়ায় বাংলাদেশকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তিনি। সোমবার রাজধানীর এক হোটেলে দুুপুরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তারা। এবার যুব বিশ্বকাপে দুর্দান্ত খেলেছে দুই সহযোগী সদস্য দেশ নেপাল ও নামিবিয়া। দু’দলই উঠে আসে সুপার লীগের কোয়ার্টার ফাইনালে। এটিকে ক্রিকেট প্রসারের এবং উন্নয়নের কারণ হিসেবে দেখছেন রিচার্ডসন। তিনি বলেন, ‘প্রথমে আমি ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অভিনন্দন জানাই। তাদের সাফল্য আইসিসির জন্য দারুণ অনুপ্রেরণাদায়ক। একই সঙ্গে আমি অংশগ্রহণ করা দেশগুলোকেও ধন্যবাদ দিতে চাই। বিশেষ করে সহযোগী যে দেশগুলো দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়েছে, যেমন নামিবিয়া সপ্তম হয়েছে, নেপাল অষ্টম হয়েছে প্লেট চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মাধ্যমে আফগানিস্তান নবম হয়েছে। সহযোগী দেশগুলোর পারফর্ম সত্যিই অনেক অনুপ্রেরণা দিচ্ছে।’ এ সময় রিচার্ডসন বিসিবিকেও দক্ষতার সঙ্গে টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, ‘যদিও এটি বড়দের বিশ্বকাপের মতো মর্যাদাপূর্ণ নয়। কিন্তু আয়োজনের ব্যাপকতা একই। অনেক সময় বরং এটাই একটু বেশি কঠিন। কারণ ১৬ দলকে আতিথেয়তা দিতে হয়। ৪৮ ম্যাচের এই টুর্নামেন্টটি আমাদের আয়োজন করা অন্যতম বড় টুর্নামেন্ট। শুধু বিসিবিকে না, ভেন্যু, অনুশীলন ভেন্যু এবং অন্যসব আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব স্বেচ্ছাসেবকদেরও আমি ধন্যবাদ জানাই।’ এবার সবচেয়ে আলোচনার বিষয় ছিল নিরাপত্তা শঙ্কা। অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় ক্রিকেট দল গত বছর অক্টোবরে বাংলাদেশ সফর বাতিল করেছে এবং বিশ্বকাপেও অনুর্ধ ১৯ দল পাঠায়নি নিরাপত্তা শঙ্কার কথা জানিয়ে। কিন্তু ফিফা ঠিকই বাধ্য করেছে অস্ট্রেলিয়া জাতীয় ফুটবল দলকে বাংলাদেশ সফরে। এ বিষয়ে রিচার্ডসন বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া তাদের নাম প্রত্যাহার করে নেয়ার সিদ্ধান্তের পরও আমরা টুর্নামেন্ট চালিয়ে যেতে চেয়েছি, এটা একটা ভাল সিদ্ধান্ত ছিল। ফিফা অস্ট্রেলিয়াকে বাংলাদেশে আসতে বাধ্য করেছে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে আইসিসি চাপ দেয়নি? যুক্তিসঙ্গত কথা হলো, একটা সদস্য দেশকে শুধু টুর্নামেন্ট থেকে নাম প্রত্যাহার করার জন্য রাখা হয়নি। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া কী করেছে, সে বিষয়ে উত্তর দেয়া হয়েছে। এটা মৌলিকভাবে একটা চুক্তিমূলক কার্যক্রম। আমরা কোন দেশকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে বাধ্য করতে পারি না। এটা তাদের নিজস্ব বিষয়। এতে হয়ত চুক্তি ভেঙ্গে যাওয়ার ব্যাপার থাকে।’ তবে এই নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘এর আগে আমরা ২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ, ২০১৪ সালে টি২০ বিশ্বকাপ এবং দুটি এশিয়া কাপ সফলভাবে ও নির্বিঘেœ সম্পন্ন করেছি। এজন্য আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও আইসিসি যে সহযোগিতা করেছে সেটা সবাই জানে। বিশ্বের কোথাও এ সময়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত নয়। ফ্রান্সে কি হয়েছে সবাই জানে। ইউএসএ, লন্ডন সবখানেই ঝুঁকি আছে। কিন্তু আমরা কত নিরাপত্তা দিয়েছি সেটা আইসিসি দেখেই আমাদের আয়োজক করেছে। অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপ আয়োজন আমাদের জন্য ছিল চ্যালেঞ্জ। সেটা আমরা ভালভাবে শেষ করতে পেরেছি। আমি মনে করি ভবিষ্যতেও যে কোন বড় ধরনের টুর্নামেন্ট সফলভাবে আয়োজন করতে সক্ষম বাংলাদেশ।’ দারুণ এক টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য আইসিসি সভাপতি জহির আব্বাসও বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘আবারও বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে যে তারা এ ধরনের টুর্নামেন্ট আয়োজনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে উপযুক্ত দেশ। সেরা অবস্থানে থাকা দলগুলো মাত্র একটি করে ম্যাচ হেরেছে। বাংলাদেশ দলও তৃতীয় স্থান দখল করে বিশ্বকে দেখিয়েছে তারা ক্রিকেটে কতটা এগিয়েছে।’
×