ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কোটি টাকা নিয়ে উধাও প্রতারক ॥ গ্রাহকের মাথায় হাত

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

কোটি টাকা নিয়ে উধাও প্রতারক ॥ গ্রাহকের মাথায় হাত

নিজস্ব সংবাদদাতা, পটুয়াখালী, ১৬ ফেব্রুয়ারি ॥ দুমকিতে জয়েন্ট ইসলামী এমসিএস লিমিটেডের ক্রেডিট কার্যক্রমের নামে প্রতারণা করে সহস্রাধিক গ্রাহকের কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে কোম্পানির চেয়ারম্যান, পরিচালনা পর্ষদ, কর্মকর্তাসহ অসাধু চক্র। প্রতারিত গ্রাহকরা টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্রতারক চক্রের সদস্য পাতাবুনিয়া ইটভাঁটির ম্যানেজার বশির মৃধার নেতৃত্বে এখনও বহাল তবিয়তে চলছে কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম। এদিকে প্রতারণার অভিযোগে চেয়ারম্যান, পরিচালক, মাঠ কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা দায়ের করেছে প্রতারিত গ্রাহকরা। কোম্পানির দুমকি শাখার কলেবর ছোট করে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব গেট সংলগ্ন ছোট্ট একটি কক্ষে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা জানান, জয়েন্ট ইসলামী এমসিএস লিমিটেড কোম্পানি গত ৪-৫ বছরে বরিশালের রূপাতলী হাউজিংয়ের ৯/৪ এ ব্লকে হেড অফিসের মাধ্যমে বরিশাল সদর, ভোলা, বাবুগঞ্জ, উজিরপুর, বাকেরগঞ্জ, দুমকি, পটুয়াখালী, মির্জাগঞ্জ, বরগুনা, আমতলী, কলাপাড়া, গলাচিপা এবং বাউফলসহ বেশ কয়েকটি উপজেলায় ক্রেডিট কার্যক্রম শুরু করে। শুরু থেকে ক্রেডিট কার্যক্রম, রিয়েল এস্টেট, ডিপোজিট স্কিম, ঋণ কার্যক্রম, মাসিক সঞ্চয়সহ গ্রাহকের জমাকৃত টাকায় উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের পায়রা-পাতাবুনিয়া নদী তীরবর্তী এলাকার পাতাবুনিয়ায় জয়েন্ট ব্রিকস্, বাকেরগঞ্জের কলসকাঠীতে জয়েন্ট ব্রিকস এবং বাকেরগঞ্জে ডেইরি ফার্ম ক্রয় করে কোম্পানিটি। কয়েক বছর ওই কোম্পানির মালিকানাধীন এই তিনটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে ভালভাবেই ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দুমকি উপজেলার সহস্রাধিক এবং বিভিন্ন উপজেলার গ্রাহকদের কাছ থেকে নেয়া টাকা ফেরত দিতে টালবাহানা শুরু করে কোম্পানি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুমকি উপজেলার বাসিন্দা আফরোজা বেগমের ৭৯ হাজার, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ১২ হাজার, মুক্তিযোদ্ধা আনসার মল্লিক তিন হাজার, প্রতিবন্ধী হেমায়েত উদ্দিন তিন হাজার, প্রতিবন্ধী নারী সুষমা বেগম তিন হাজার, মিজানুর রহমান ২২ হাজার, মাহিনুর ও রওশন আরা ২২ হাজার, আজাদ ১৩ লাখ এবং আঃ রহিম হাওলাদারের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকাসহ সহস্রাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। এ ঘটনায় ১১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে উপজেলার পীরতলা বাজার এলাকায় কোম্পানির শেয়ার হোল্ডার এনায়েত হাওলাদারের মোটরসাইকেলটি আটক করে ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা। দুমকি থানার অফিসার ইনচার্জ আযম খান ফারুকী বলেন, কোম্পানির চেয়ারম্যান, পরিচালকসহ কয়েকজন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় পাঁচটি প্রতারণা মামলার অভিযোগ চলমান রয়েছে। দুটি মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। অভিযুক্তরা পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।
×