ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

খাদ্য মন্ত্রণালয় দুর্নীতিমুক্ত করতে ক্রাশ প্রোগ্রামে কামরুল

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

খাদ্য মন্ত্রণালয় দুর্নীতিমুক্ত করতে ক্রাশ প্রোগ্রামে কামরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন সকল সেক্টর দুর্নীতিমুক্ত করতে অভিযানে নেমেছেন মন্ত্রী কামরুল ইসলাম। পাশাপাশি কাজের গতি বাড়ানোর ওপরও জোর দিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার ঢাকার শ্যামপুরের পোস্তগোলা সরকারী আধুনিক ময়দা মিলের উৎপাদন কার্যক্রম সরেজমিন পরিদর্শনের মাধ্যমে এই কার্যক্রম শুরু করেন। আজ বুধবার এবং আগামীকাল তিনি উত্তরবঙ্গ সফরে থাকবেন। পর্যায়ক্রমে দেশের বিভিন্ন খাদ্যগুদাম ও অফিস পরিদর্শন করবেন। এ বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী কমরুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন কোথাও অনিয়ম বা দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না। কারও বিরুদ্ধে অনিয়ম পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, দেশের বড় খাদ্যগুদামগুলো সরেজমিন পরিদর্শ করব। কোন গুদামে নিম্নমানের চাল পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আর নিম্নমানের কোন খাদ্যশস্য কোথাও মজুদ করা হবে না। এমনকি বিদেশের বাজার থেকে সর্বোচ্চমানের গম আমদানি করার লক্ষ্যে গম আমদানি নীতিমালা সংশোধন করেছি। এতে নিম্নমানের গম আমদানির সুযোগ বাতিল করা হয়েছে। এখন থেকে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে এক নম্বর গম বাংলাদেশে আমদানি করা হবে। এ প্রসঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, এখন থেকে প্রোটিনের আদর্শমান ১২.৫-এর নিচে কোন গম আমদানির সুযোগ থাকল না। তিনি বলেন, গত ৪৪ বছর ধরে ১০ মাত্রার প্রোটিনের গম আমদানি করা হতো। এখন নীতিমালা সংশোধন করে মান নির্ধারিত করা হয়েছে। এখন থেকে দেশে ‘এ’ ক্যাটাগরির গম আমদানি করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এর আগে বাংলাদেশে গম আমদানির শর্তানুযায়ী আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত স্ট্যান্ডার্ড বা আদর্শমানের বিচারে চতুর্থ গ্রেডের গম আনা হয়। এতে আমদানিকারকরা কম দামে নিম্নমানের গমই আমদানি করতেন। গম আমদানির দুর্বল সংজ্ঞা বা স্পেসিফিকেশনের কারণে এতদিন নিম্নমানের গম আমদানির সুযোগ নিয়েছেন আমদানিকারকরা। নীতিমালার আলোকে নিম্নমানের গম আমদানি করায় ইতোপূর্বে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়, যে কারণে খাদ্যমন্ত্রী চান চিরতরে এই সকল বিতর্কের অবসান ঘটাতে। সে লক্ষ্যে তিনি নিজেই পরিদর্শন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পোস্তগোলা সরকারী আধুনিক ময়দা মিলের উৎপাদন কার্যক্রম সরেজমিন পরিদর্শনের সময় খাদ্য প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমদ, খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ সঙ্গে ছিলেন। পরিদর্শনকালে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী মিলের সহকারী প্রধান মিলার এবং অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে উৎপাদন কার্যক্রমের বিভিন্ন আনুষঙ্গিক বিষয় নিয়ে কথা বলেন। মিলটির দৈনিক গম ভাঙ্গানোর ক্ষমতা ২০০ মেট্রিক টন। বর্তমানে মিলটিতে এক শিফটে কাজ চলছে, যা থেকে দৈনিক ৫০ মেট্রিক টন গম ভাঙ্গানো হচ্ছে এবং প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৩৮ মেট্রিক টন আটা উৎপাদিত হচ্ছে। ১৯৫২ সালে রাজধানীর পোস্তগোলায় ময়দা মিলটি স্থাপন করা হয়েছিল। নব্বইয়ের দশকে মিলটি অকার্যকর হয়ে যায়। ২০০১ সালে মিলটি আধুনিকায়ন করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ২০০৪ সালে মিলটি বন্ধ করে দেয় এবং এর সব যন্ত্রপাতি ও কলকব্জা সের দরে বিক্রি করে দেয়। সরকারকে আটা-ময়দার বাজারের প্রতিযোগিতায় টিকিয়ে রাখার জন্য মিলটি নতুন করে গড়ে তুলতে ১৩৪ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেয়া হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই মিলটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। ২০১৫ সালের ৮ অক্টোবর মিলটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়।
×