ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পাবনায় ১৪শ’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই

প্রকাশিত: ০০:৩৮, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

পাবনায় ১৪শ’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই

নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা ॥ ভাষা আন্দোলনে পাবনার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকলেও এ জেলার শিশু-কিশোরদের মাঝে মাতৃভাষার চেতনা ও মূল্যবোধ জাগ্রত করতে সরকারি ও বেসরকারি ১৪শ’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আজো শহীদ মিনার গড়ে উঠেনি। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়,১৯৪৮ এর মাতৃভাষা আন্দোলনে পাকিস্তান গণ পরিষদে ‘ভাষা প্রশ্নে বির্তকের প্রতিবাদে’ ২৬ ফেব্র“য়ারি ঢাকায় ধর্মঘট পালনের খবরে পাবনায় ছাত্র সমাজ ও রাজনৈতিক দল এক সভায় মিলিত হয়ে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলে। সে ধারাবাহিকতায় ১৯৪৮ এর ১১মার্চ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সে সময় পাবনা জেলা প্রশাসক’কে স্মারকলিপি দিতে গিয়ে অনেকেই পুলিশের হাতে বন্দি হয়েছিলো। এ ছাড়া ১৯৫২ এর ২১ ফেব্র“য়ারি ঘটনার জের ধরে ৫ মার্চ শহীদ দিবস পালিত হয়েছিলো। এ সেদিন পাবনার স্কুল,কলেজে ধর্মঘট পালনসহ শহরে বিশাল মিছিল করা হয়েছিলো। ৫২ সালের ২৩ ফেব্র“য়ারি সর্বপ্রথম পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ মাঠে একটি অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এ ছাড়া ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোতে জেলার সুজানগরে একুশের মিছিল ও শোভাযাত্রায় গুলি চালালে সুজানগর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র আব্দুস সাত্তার শহীদ হন। জেলায় ১হাজার ৫শ’৪২টি সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মধ্যে ১হাজার ৪শ’টি প্রতিষ্ঠানে কোন শহীদ মিনার নেই। এ ব্যাপারে কেউ কোন উদ্যেগও নেয়নি। শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাদের স্কুলে শহীদ মিনার না থাকাটা অত্যন্ত দুঃখজনক। স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রীরা জানিয়েছেন, প্রতিটি সরকারি প্রাথমিক স্কুলে শহীদ মিনার থাকা অত্যন্ত জরুরি। শহীদ মিনার হলে ছাত্রদের মাঝে দেশপ্রেম জাগ্রত হবে বলেও অভিভাবকরা জানিয়েছেন। পাবনা সরকারি জেলা স্কুলের ছাত্ররা জানিয়েছে,ভাষা আন্দোলনের ফসল মাতৃভাষা পেলেও অত্যন্ত দুর্ভাগ্য যে জেলা স্কুলেও কোন শহীদ মিনার নেই। তাদের আশা স্কুল কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসন খুবশীঘ্রই একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করবেন। সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রী বলেন, বিশেষ করে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার থাকা খুবই জরুরি। বিশেষ করে একটি শহীদ মিনার থাকলে আমাদের শহীদদের প্রতি এবং দেশের প্রতি ভালোবাসার প্রেরণা যোগাবে। পাবনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জায়েদুর রহমান এ সর্ম্পকে বলেন,শহীদ মিনারের তো অবশ্যই প্রয়োজনীয়তা রয়েছে এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকাটা খুবই জরুরি। পাবনা সেন্ট্রাল গালর্স হাই স্কুলের ছাত্রীরা জানায়, শিক্ষকরা তাদের অনেক দাবি পূরণ করেছে,এবার তারা স্কুলে শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি তুলেছে। জেলা প্রশাসক রেখা রানী বালো জানিয়েছেন,ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে শুধু জেলা স্কুল কেন সকল স্কুলেই শহীদ মিনার থাকা উচিত। তাতে করে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের মাঝে মাতৃ ভাষার প্রতি মমর্ত্ববোধ জাগবে। এবং দেশকে তারা ভালোবাসতে শিখবে।
×