ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ম্যাককুলামের বিদায়ী টেস্ট

ক্রাইস্টচার্চেও চ্যালেঞ্জ দেখছেন বোল্ট

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

ক্রাইস্টচার্চেও চ্যালেঞ্জ দেখছেন বোল্ট

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রাইস্টচার্চে শুরু (শুক্রবার রাত সাড়ে তিনটা) হচ্ছে নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া দুই ম্যাচ সিরিজের শেষ টেস্ট। এই ম্যাচ দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাচ্ছেন ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম। ১-০তে পিছিয়ে থাকা সিরিজে কেবল সমতা ফেরানোর জন্যেই নয়, বিদায় বেলায় অধিনায়ককে জয় উপহার দিতে চাইবে কিউইরা। কিন্তু প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া যে রকম দুর্বার ফর্মে, তাতে কাজটা মোটেই সহজ হবে না বলে মনে করছেন ট্রেন্ট বোল্ট। ক্রাইস্টচার্চের হেগলি ওভালের আসন্ন লড়াইটাকে বাড়তি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন স্বাগতিক পেস তারকা। বোল্ট কথা বলেছেন ম্যাককুলামের বিদায় নিয়েও। ওয়েলিংটনে প্রথম টেস্টে ইনিংস ও ৫২ রানের বড় জয়ে উজ্জীবিত সফরকারী অসিরা। অধিনায়ক হিসেবে মাত্র দশ টেস্টের ক্যারিয়ারে দারুণ সব সাফল্য তুলে নিয়ে আলোচনায় স্টিভেন স্মিথ। ইনজুরির জন্য পিটার সিডলের খেলা নিয়ে সংশয় রয়েছে। ‘ম্যাচে অনুপ্রেরণা পাওয়ার মতো অনেক অনুষঙ্গই আমাদের রয়েছে। বিশেষ করে ম্যাককুলামের বিদায়। ও কেবল আমাদের অধিনায়কই নয়, তার চেয়েও বেশি কিছু। আধুনিক নিউজিল্যান্ডের আকর্ষণীয় এই ক্রিকেটারকে বিদায় বেলায় জয় উপহার দিতে চাই। দেশবাসীও সেটাই চাইছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে আমাদের জন্য কাজটা অত্যন্ত কঠিন। টেস্টে ব্যাটে-বলে দুর্ধর্ষ সময় কাটাচ্ছে প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া, তার ওপর ওয়েলিংটনের বাউন্সি কন্ডিশন আমাদের জন্য বাড়তি মাথা ব্যথার কারণ হয়ে উঠতে পারে! সমতায় সিরিজ শেষ করতে ম্যাককুলামের বিদায়ী টেস্টটা তাই আমাদের জন্য সত্যিকারের এক চ্যালেঞ্জ।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাউন্সি উইকেট ব্যাটসম্যানদের জন্য দুঃস্বপ্ন হলেও একজন পেসার হিসেবে আমি সেটিই চাইব! প্রতিপক্ষের মতো আমাদের দলেও এক ঝাঁক বিশ্বমানের পেসার রয়েছে। আমার বিশ্বাস ম্যাচটা জমে উঠবে।’ ওয়ানডে হারের ধাক্কা সামলে টেস্টে ঠিকই ঘুরে দাঁড়িয়েছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম টেস্টে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৫৬২ রান করা অসিরা প্রতিপক্ষকে ১৮৩ ও ৩২৭ রানে গুড়িয়ে দিয়ে সহজ জয় তুলে নেয়। ২৩৯ রানের ম্যারাথন এক ইনিংস উপহার দিয়ে ‘নায়ক’ বনে যান এ্যাডাম ভোজেস। ম্যাচে ৭ উইকেট নিয়ে পেসারদের পাশাপাশি সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান অতিথি স্পিনার নাথান লেয়নের। তবে ক্রাইস্টচার্চে সবুজ উইকেট চাওয়া নিউজিল্যান্ড কোচ মাইক হেসনের যুক্তি, ‘ওয়েলিংটনে বল কেবল প্রথম কয়েক ঘণ্টাই সুইং করেছে। ফলে দুই দলকে একই পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হয়নি। মানতে হবে ওরা ভাল জায়গা বল ফেলেছে, বলও সুইং করেছে। তবে একই পরিস্থিতিতে আমরাও একই কাজ করতাম। দু’দলের ব্যাটসম্যান সমান সুইয়েংর সামনে পড়লে প্রতিদ্বন্দ্বীটাও সমান হবে। সুতরাং ঘাসে ভরা বাউন্সি উইকেটই আমার চাওয়া।’ ম্যাককুলামকে দারুণ একটা বিদায়ী উপহার দিতেই যেমন জিততে চায় কিউইরা, তেমনি অধিনায়ক স্মিথই প্রতিপক্ষ অসিদের বড় অনুপ্রেরণা। অধিনায়ক হিসেবে ক্যারিয়ারের প্রথম ১০ টেস্টে অপরাজিত থেকে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছেন তরুণ এই সেনাপতি। স্মিথের নেতৃত্বে (২০১৪-১৬) এ পর্যন্ত ১০ টেস্টের ৬টিতে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। ড্র ৪। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে এমন কৃতিত্ব আছে কেবল ওয়ারউইক আর্মস্ট্রংয়ের। ১৯২০-১৯২১ সালে অধিনায়ক জীবনের শুরুতেই ১০ টেস্টে ৮ জয় ও ২ ড্র পেয়েছিলেন তিনি। স্মিথের সামনে রয়েছে নেতৃত্বের শুরুতে টানা বেশি টেস্টে অপরাজেয় রেকর্ডের হাতছানি। ১৯ ম্যাচে অপরাজিত থেকে যেটি সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়কের ইলিংওয়ের্থের দখলে (৮ জয়, ১১ ড্র)। ২০১৪ সালের শেষদিকে ঘরের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে মাইকেল ক্লার্ক ইনজুরিতে পড়লে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পান স্মিথ। নেতৃত্বের অভিষেকে ১ জয় ২ ড্র। সেই শুরু। গত বছর ইংল্যান্ড সফরে এ্যাশেজ ভরাডুবির পর অবসর নেন ক্লার্ক। স্থায়ীভাবে দায়িত্ব পড়ে স্মিথের কাঁধে। নিউজিল্যান্ডকে ২-০, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩ টেস্টে ২-০তে হারিয়ে বিজয় কেতন ওড়ান তরুণ তুর্কী এই উইলোবাজ। ব্যাট হাতেও সমান উজ্জ্বল স্মিথ। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অধিনায়ক হিসেবে স্মিথের (৮০.০৭) চেয়ে ভাল ব্যাটিং গড় কেবল ব্র্যাডম্যানের- ২৪ টেস্টে নেতৃত্ব দেয়া স্যার ডনের গড় ১০১.৫১!
×