ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হরতাল বন্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন দাবি সংসদ সদস্যদের

প্রকাশিত: ০৭:৫০, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

হরতাল বন্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন দাবি সংসদ সদস্যদের

সংসদ রিপোর্টার ॥ রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্যরা দেশ ও অর্থনীতি ধ্বংসকারী হরতাল বন্ধে কঠোর আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়ে বলেছেন, পাকিস্তান এখন জঙ্গী সৃষ্টির কারখানা। একাত্তরের পরাজয়ের গ্লানি ভুলতে না পেরে অকার্যকর ও ব্যর্থ রাষ্ট্র পাকিস্তান আমাদের দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। সেই ষড়যন্ত্রের ক্রীড়নক হয়ে এ দেশে কাজ করছেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সফলতা ধরে রাখতে অর্থনীতি ধ্বংসকারী হরতাল নামক কর্মসূচী প্রতিরোধে নতুন আইন করতে হবে। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং পরে ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে বুধবার রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন খাদ্য প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু, সরকারী দলের আবদুর রহমান, এ কে এম শাহজাহান কামাল, নিলুফার জাফরউল্লাহ, তানভীর ইমাম, সালাউদ্দিন আহমদ স্মৃতি, সারওয়ার সাইমন কমল, ওয়াশিকা আয়েশা খান ও জাতীয় পার্টির মাহজাবিন মোর্শেদ। আলোচনার শেষ পর্যায়ে অধিবেশনে কোরাম সঙ্কট দেখা দেয়। জাতীয় পার্টির দুই সদস্য বিষয়টি স্পীকারের দৃষ্টি আকর্ষণ না করলে আলোচনা সংক্ষিপ্ত করে এনে অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করেন। আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারী দলের আবদুর রহমান বলেন, শুধু বাংলাদেশেই নয়, নিজের সততা, প্রজ্ঞা, আর দূরদর্শী নেতৃত্ব সারাবিশ্বের কাছে শেখ হাসিনা এখন নন্দিত নেত্রীতে পরিণত হয়েছেন। অন্যদিকে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়ে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটাক্ষ করার দুঃসাহস দেখাচ্ছেন। পাকিস্তানের কণ্ঠে কথা বলছেন। অন্ধকার চোরাপথে খালেদা জিয়ার পথ খুঁজে লাভ হবে না। দেশের জনগণকে আর বিভ্রান্ত করতে পারবেন না। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবেই। কেউ-ই তা রুখতে পারবে না। খাদ্য প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, পাকিস্তান এখন জঙ্গী সৃষ্টির কারখানা। সেই ব্যর্থ পাকিস্তানের সুরে কথা বলছেন খালেদা জিয়ারা। কিন্তু তাদের মনে রাখা ভাল, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনককে কাপুরুষের মতো হত্যা করতে পেরেছেন। কিন্তু ১৯৭৫ আর ২০১৬ সাল এক নয়। দেশের ১৬ কোটি জনগণ এখন শেখ হাসিনার পক্ষে। ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করে কোন লাভ হবে না। তিনি বলেন, ধ্বংসের ওপর দাঁড়িয়ে উন্নয়ন ও সাফল্যের নৌকা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শত ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত মোকাবেলা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও রায় কার্যকর করে বঙ্গবন্ধু কন্যা ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম লিখিয়েছেন। কেননা, শেখ হাসিনা না থাকলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হতো না, দেশ কলঙ্কমুক্ত হতো না। সারাবিশ্বে উন্নয়নের ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা রোল মডেলের স্বীকৃতি পেয়েছেন। তাই শেখ হাসিনার তুলনা এখন শুধু তিনি নিজেই, অন্য কেউ নয়। বিরোধী দলের পক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্ন বলেন, ২০০৯ সালের নির্বাচনের আগে প্রশ্ন উঠেছিল দেশে গণতন্ত্র, সাংবিধানিক শাসন থাকবে কিনা। গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে কিনা। তখন আমাদের দল জাতীয় পার্টির মধ্যেও কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ ওই সময় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সাহসী সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণেই আজ দেশ সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে, দেশের এত উন্নয়ন হচ্ছে। বিরোধী দলে থেকেও দেশের উন্নয়ন করা যায়, গত দুই বছরে আমরা জাতীয় পার্টি তা প্রমাণ করেছি। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে বিরোধী দলে থেকেও আমরা সরকারে যোগ দিয়েছি। তিনি বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়ে বলেন, হরতালকে না করার জন্যও একটি আইন করা দরকার। হরতাল নামক ধ্বংসাত্মক কর্মসূচী থাকুক, আমরা তা চাই না। তাই আমি এ দুটি আইন দ্রুত পাস করার দাবি জানাই। বিএনপি-জামায়াত জোটের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আমরা যতই ভাল কাজ করি না কেন, কিছু লোক আছে তাদের ভাল লাগে না। আমরা বিরোধী দল ভাল কাজ করছি, সরকার দেশের উন্নয়ন করছে- এটাও তাদের ভাল লাগে না। সরকারী দলের এ কে এম শাহজাহান কামাল আন্দোলনের নামে নির্বিচারে পুড়িয়ে মানুষ হত্যার জন্য বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিচার দাবি করে বলেন, আগুনসন্ত্রাসী খালেদা জিয়া নির্বাচনে না এসে দেশকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন। সেক্ষেত্রে ব্যর্থ হওয়ার পর এখন একাত্তরের পরাজিত পাকিস্তানের সুরে কথা বলছেন, পাকিস্তানের এজেন্ট হয়ে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।
×