ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মানিয়ে নেয়ার উপায়

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ২০ মার্চ ২০১৬

মানিয়ে নেয়ার উপায়

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর অনেক শিক্ষার্থীরই চিন্তা থাকে-প্রথম সেমিস্টারে ভাল ফল কিভাবে করা যায়? শিক্ষার্থীকে বুঝতে হবে বিগত সময়ে পড়ে আসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় বিশ্ববিদ্যালয় অনেক বড় শিক্ষা ক্ষেত্র। বিষয়ের আঙ্গিকতার পাশে ব্যবহারগত দিকটাও সম্পূর্ণ ভিন্ন। এমনকি শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষকদের প্রত্যাশার রকমও অন্যরকম। শিক্ষাদান ও গ্রহণের প্রক্রিয়াও ভিন্ন। স্কুল ও কলেজের তুলনায় এ পর্যায়ে ভাল ফল করাটা সহজও। ক্লাসে মনোযোগী হওয়া, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বোঝার সামর্থ্য অর্জন, ক্লাসে পড়ার আগে লেকচার দেখে নেয়া কিংবা পড়ানোর পর শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে নেয়া ইত্যাদি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। প্রতিযোগিতার এ যুগে শুধু পড়ালেখা একজন শিক্ষার্থীর জন্য যথেষ্ট নয়। পাশাপাশি প্রয়োজন সহশিক্ষার। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একজন শিক্ষার্থীর সরব পদচারণার সুযোগ রয়েছে বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণের। সুযোগটা কাজে লাগাতে হবে পূর্ণ মাত্রায়। এ লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়ে উঠছে বিভিন্ন ক্লাব; যেমন বিতর্ক, নাটক, সায়েন্স, ন্যাচার, কুইজ ক্লাব। এগুলোয় সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর মধ্যে গড়ে ওঠে নেতৃত্বদানের যোগ্যতা ও সাংগঠনিক দক্ষতা। কো-এডুকেশন ০ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে যে ছেলে বা মেয়েটির সঙ্গে আলাপ হলো, সে কিন্তু আপনার প্রেমিক বা প্রেমিকা নয়। তাকেই মনপ্রাণ সঁপে দিলে চোখের জল ফেলতে হবে পরে। ০ কলেজে যে পরিবেশে আপনি ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় তার চেয়ে আলাদা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিধি অনেক বড়। দুটোকে মেলাতে চাইলে মুশকিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনাকে অনেক বেশি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। ০ আপনি যতটা নমনীয়, প্রয়োজন পড়লে ঠিক ততটাই কঠিন হতে হবে। যে কোন পরিস্থিতি সামলানোর জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। ০ জড়তা ঝেড়ে ফেলে বন্ধু-বান্ধবীর সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলুন যে কোন বিষয়ে। ০ ছেলেদের ক্ষেত্রে কোন সুপিরিয়রিটি কমপ্লেক্সে ভুগবেন না। মেয়েরা মোটেও আপনাদের চেয়ে কম যোগ্য না। ০ মেয়েদের একটু বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। অনেক সময় এ্যাডভেঞ্চারার্স হতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনে অনেকে। সেই ভুল করবেন না। র‌্যাগিং ০ র‌্যাগিংয়ের হাত থেকে বাঁচার প্রথম রাস্তা হলো, খুব স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করা। এছাড়া পোশাক, কথা বলার ধরন, স্বাভাবিক থাকতে হবে। ০ নিজের ক্লাসের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখুন। তাহলে সিনিয়ররা আপনাকে কব্জা করতে পারবে না। ০ যদি মনে হয়, আত্মসম্মানে লাগছে তাহলে প্রতিবাদ করাই শ্রেয়। তবে খেয়াল রাখতে হবে, যে সময় র‌্যাগিং করা হয় সে সময় ধারে কাছে এমন কেউ যেন না থাকেন যিনি সুবিধা নিতে পারেন। তাই তখন চেঁচামেচি না করে দলবেঁধে প্রতিবাদ করাই বুদ্ধিমানের কাজ। গ্রাম থেকে শহরে বড় শহরের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে মফস্বলের অনেক শিক্ষার্থী। অভ্যস্ত জীবনধারা বদলে গেলে অনেকেরই এই প্রতিক্রিয়াগুলো হয়Ñ ০ উদ্বেগ, হতাশা ও নৈরাশ্যজনিত মানসিক অবসাদ, রাগ, হীনম্মন্যতা। ০ হৈচৈ ও হট্টগোলপূর্ণ একটু অন্যরকম জীবনযাত্রার চাপ একদিকে, অন্যদিকে রয়েছে প্রবল প্রতিযোগিতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে লড়াইয়ের প্রস্তুতি। ০ পুরনো বন্ধুদের কাউকেই প্রায় সঙ্গী হিসেবে পাওয়া যায় না। সম্পূর্ণ নতুন পরিবেশে বেড়ে ওঠা ছেলেমেয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে হয়। নতুন এই পরিস্থিতি অনেকের অজানা। ০ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে সাধারণত সিনিয়রদের উপদেশ অনুযায়ী হাতেখড়ি হয় প্রেম ও পলিটিক্স। ০ টেনশনের আর একটা কারণ ভাষাগত সমস্যা। ০ হঠাৎ পাওয়া স্বাধীনতার অপব্যবহারটাই বেশি হয়। করণীয় ০ রাজনীতি, নেশা ও অসৎ সঙ্গ থেকে দূরে থাকুন। বন্ধু নির্বাচনের সময় সাবধানী হোন। ০ প্রতিদিন রাতে ঠিক করুন পরের দিন কি কি করবেন। দিনের শেষে দেখুন কতটা পারা গেল। ০ প্রত্যেক বিষয়ে ১০০% নম্বরের দিকে লক্ষ্য রাখুন। কিন্তু সেটা অর্জন করতে না পারলে মুষড়ে পড়বেন না। এতে মনের ওপর বেশি চাপ পড়ে। লাইব্রেরিতে সময় দিন। ০ ইংরেজীর প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। ০ বাড়ির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করুন। প্রয়োজনে শিক্ষকদের সাহায্য নিন। আবদুল মালেক
×