ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সঙ্গীত পরিচালনায় ব্যস্ত সমীর

প্রকাশিত: ০৪:১২, ২২ মার্চ ২০১৬

সঙ্গীত পরিচালনায় ব্যস্ত সমীর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে সাম্প্রতিক সময়ে যে কজন তরুণ সঙ্গীত পরিচালক নিজ কাজে মেধার স্বাক্ষর রাখছেন তাদের মধ্যে অন্যতম এস কে সমীর। বাংলাদেশের অডিও এবং চলচ্চিত্র দুই মাধ্যমেরই দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি নাটকের গানও করছেন সমীর। তার সঙ্গীতায়োজনের বেশকিছু গান ইতোমধ্যে জনপ্রিয় হয়েছে। আজীবন ভাল ভাল গান করার প্রত্যয়ে ধীরে ধীরে তার কাক্সিক্ষত লক্ষ্য ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। সঙ্গীতের মেধাবী মুখ সমীর সাতক্ষীরার সন্তান। তার বাবা ছিলেন একজন সাহিত্যিক ও সঙ্গীতজ্ঞ। মামা ও খালা ছিলেন নজরুল সঙ্গীতশিল্পী। তাই ছোটবেলা থেকেই তিনি গানের আবহে বড় হয়েছেন। তিনি বর্তমান সময়ে ব্যস্ততম শিল্পী, সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক হলেও নিজেকে শিল্পী হিসেবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। নিয়মিতভাবে স্টেজ ও টিভি লাইভ শোতে সঙ্গীত পরিবেশন করেন। তার গায়কীতে প্রথম সলো এ্যালবাম ‘ঘুম’ ২০০৮ সালে বাজারে আসে। কিছুদিন আগে তার সঙ্গীত আয়োজনে মিশ্র এ্যালবাম ‘হারিয়েছি মন’ রিলিজ হয়। এ এ্যালবামের গানগুলো শ্রোতামহলে বেশ প্রশংসিত হয়। ঈদে আসছে তার সঙ্গীতায়োজনে নিশাত ও প্রতিভাবান শিল্পী স্নেহের সলো এ্যালবাম। এছাড়া কাজ করছেন বেশ কয়েকটি মিশ্র এ্যালবামে। অডিও এ্যালবামের পাশাপাশি ‘হরিযুপিয়া’, ‘কারণ তোমায় ভালবাসি’, ‘ভালবাসার গল্প’সহ বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন। নিজের সঙ্গীত ক্যারিয়ার প্রসঙ্গে সমীর জনকণ্ঠকে বলেন, জন্মগতভাবেই সঙ্গীতকে লালন করি। তবে আজকের এ পর্যায়ে আসতে আমাকে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে। যদিও বাবা প্রয়াত শেখ আবুল ফজল ছিলেন বাংলা ব্যাকরণের সাহিত্যিক ও উচাঙ্গসঙ্গীতের শিক্ষক। ঢাকা নবাবপুর হাই স্কুলের সহকারী প্রধান হিসেবে শিক্ষকতা করা অবস্থায় রোড এক্সিডেন্টের পর মৃত্যুবরণ করেন। তার কাছ থেকে দীক্ষা নিয়ে অনেক গুণী শিল্পী দেশে বিচরণ করেছেন, যা শুনে ছোটবেলা থেকেই সঙ্গীত আমাকে কাছে টানত। ১৯৯৩ সালে সাতক্ষীরার আরেক সঙ্গীতগুরু ওস্তাদ আমজাদ হোসেনের হাত ধরে সঙ্গীতে দীক্ষা নিই। এর পর প্রথমে ড্রামস ও কি-বোর্ড শিখি। এছাড়া প্রাথমিক পর্যায়ে গিটার নিয়ে কেটে গেছে কয়েক বছর। এ সময় লিনেট নামে ব্যান্ডে লিড গিটারিস্ট ও ভোকাল ছিলাম। ২০০৬ সালে ব্যান্ডের কিছু পরিবর্তন এনে আবার শুরু করি হারমনাইজ নামের আর একটি ব্যান্ড দিয়ে। এর পর ২০০৮ সালের শেষে আমার নিজের একক এ্যালবাম ‘ঘুম’ প্রকাশের মাধ্যমে শুরু হয় আমার সঙ্গীত পরিচালনার কাজ। সেই থেকে চলছে। তিনি আরও বলেন, রিলিজের অপেক্ষায় আছে ‘সমীর মিক্সড ২০১৬’। এটি সিডি চয়েসের ব্যানারে বাজারে আসবে। এ্যালবামটি দেশের তরুণ তারকা কণ্ঠশিল্পী বেলাল খান, নদী, ঝিলিক, কর্নিয়া ও প্রতিভাবান কিছু তরুণ কণ্ঠশিল্পীর গান নিয়ে সাজানো হয়েছে, যেখানে আমার নিজেরও একটি গান থাকবে। আর একটি একক এ্যালবামের সম্ভাব্য নাম সমীর ফিচারিং স্নেহের ‘তোমার জন্য’। এ্যালবামটি শিল্পী বেলাল খান ও সুমিতকে নিয়ে। এ্যালবামে তিনটি দ্বৈতগান থাকছে। দুটি এ্যালবামই বৈশাখ উপলক্ষে বাজারে আসার সম্ভাবনা আছে। সম্প্রতি ভালবাসা দিবসে সিডি চয়েসের ব্যানারে বাজারে আসা সমীর ফিচারিং ডালিয়ার ‘স্বপ্নপুরী’ এ্যালবামটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এ্যালবামে বেলাল খান ও পুলকের দুটি দ্বৈতগান আছে । এছাড়া পরিচালক গোলাম মোস্তফা শিমুলের ‘কারণ তোমায় ভালবাসি’ চলচ্চিত্রের ছয়টি গানের এ্যালবামও বাজারে আসার অপেক্ষায়। ছয়টি গানেরই সুর দিয়েছেন ফিরোজ কবির ডলার। গানগুলো নিয়ে আমি আশাবাদী। এছাড়াও আমার ফিচারিংয়ে কয়েকটি একক এ্যালবাম ও একটি মিক্সড এ্যালবাম এরই মধ্যে বাজারে এসেছে। ২০১৪ শেষে থার্টিফার্স্ট উপলক্ষে এ্যালবাম ‘হারিয়েছি মন’ প্রকাশিত হয় ঈগল মিউজিকের ব্যানারে। মোট ১১শিল্পীর সমন্বয়ে এ্যালবামটি বাজারে আসে, যা ব্যাপক সাড়া ফেলে। এর আগে ইমপ্রেস টেলিফিল্মের প্রযোজনায়, গোলাম মোস্তফা শিমুলের পরিচালনায় ‘অনুক্রোশ’ ও ‘হরিযুপিয়া’, অনন্য মামুনের ‘ভালবাসার গল্প’ চলচ্চিত্রের দুটি গানের সঙ্গীত আয়োজন করে প্রশংসিত হয়েছেন। সমীর এভাবেই সারাজীবন বাংলা গানের সঙ্গে থাকতে চান। তার সঙ্গীত জীবনের জন্য শুভ কামনা।
×