ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

যমুনার তীরে যেন ভোটের মেলা-আনন্দ উৎসব

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২৩ মার্চ ২০১৬

যমুনার তীরে যেন ভোটের মেলা-আনন্দ উৎসব

সমুদ্র হক ॥ প্রথম দফার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে বগুড়ার যমুনা তীরের (যার অধিকাংশ চর এলাকা) সারিয়াকান্দি উপজেলার ১১ ইউনিয়নের নির্বাচন ছোটখাট ঘটনা ছাড়া সুষ্ঠুভাবেই শেষ হয়েছে। নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে সীমানা বিরোধের জটিলতার কারণে কাজলা ইউনিয়নের ভোট স্থগিত হয়ে যায়। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫৯, সংরক্ষিত নারী আসনের ৩৩ পদে ১২০ ও সাধারণ সদস্যের ৯৯ পদে ৩৬৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। নারী ভোটার পুরুষের চেয়ে বেশি। নারী ৭৩ হাজার ৩২২, পুরুষ ৬৮ হাজার ৪৯০। শহর থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে সারিয়াকান্দির যমুনা তীরে প্রবেশের আগেই ফুলবাড়ি বাজারে দেখা গেল বেশ জটলা। লোকজন নির্বাচনকে মেলার মতো দেখে আনন্দে মেতেছে। ফুলবাড়ি দাখিল মাদ্রাসার উত্তর কেন্দ্রে বেলা বারোটা পর্যন্ত ২৫ শতাংশ ভোট গ্রহণ করা হয়। এই কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ২৯ জন। প্রিসাইডিং অফিসার বললেন, সুশৃঙ্খলভাবেই ভোটগ্রহণ হচ্ছে। দক্ষিণ পাশেই একই মাদ্রাসার আরেকটা ভবনে শুধু মেয়েদের ভোটগ্রহণ কেন্দ্র করা হয়। এই কেন্দ্রে ২ হাজার ১শ’ ৯ জন ভোটারের মধ্যে বেলা সোয়া বারোটা পর্যন্ত প্রায় ৫০ শতাংশ ভোটগ্রহণ করা হয়। ভোটার আছিয়া খাতুন বললেন ভিড় এড়াতে তাড়াতাড়ি ভোট দিয়েছেন। এই কেন্দ্রের নারী ভোটাররা ঘর গেরস্তালির বিঘœ না ঘটাতে সকাল সকাল এসেছেন। যমুনার তীরে সারিয়াকান্দি সদর ইউনিয়ন পরিষদের নিজতিতপরইল সরকারী প্রাথমিক স্কুল কেন্দ্রের প্রবেশ পথের দুই ধারে মেলার মতো আয়োজন। ভ্রাম্যমাণ চা দোকানী তো বসেছেই, কিছুটা দূরেই জিলাপি ভাজা হচ্ছে উনুনে। এই সুযোগে বাদাম ওয়ালারা ডালা নিয়ে ঘুরছে। এলাকার রফিকুল ইসলাম বললেন ভোট দিয়েই কেউ কেউ নৌকা বইরে আনন্দ করছে। কৌতূহলী কেউ শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকা ভাড়া করে কোন চরে যাচ্ছে ভোট দেখতে। এই কেন্দ্র মোট ভোটার ৯শ’ ৮২ জন। উৎসবমুখর পরিবেশে বেলা দেড়টার মধ্যে ৬০ শতাংশেরও বেশি ভোটগ্রহণ হয়। এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও চারজন স্বতন্ত্র মিলে মোট প্রার্থী ৭ জন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই প্রার্থী দুপুরে এই কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। কেন্দ্রর প্রিসাইডিং অফিসার শাহীনূর রহমান জানালেন, কোন ধরনের হট্টগোল তো নেইই স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটররা আসছেন। এর আগে কিছুটা নদী পথে কিছুটা বাঁধের ওপর দিয়ে হেঁটে বেলা এগারোটার দিকে হাটশেরপুর ইউনিয়নের নিজবলাইল গ্রামের হাইস্কুল কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় দুই পক্ষের মধ্যে বেশ বাগবিত-া হচ্ছে। লোকজনও ছোটাছুটি করছে। থানার ওসিসহ কয়েকজন পুলিশ বাঁশি ফুঁকিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। এই অবস্থায় প্রিসাইডিং অফিসার কিছুটা সময় ভোটগ্রহণ বন্ধ রাখলেন। আধা ঘণ্টার মধ্যেই সব ঠিকঠাক হয়ে গেল। দুই মেম্বর প্রার্থীর মধ্যে তুচ্ছ ঘটনায় বাগবিত-া নিয়ে এমন ঘটনার উদ্ভব হয়ে মিটেও যায়। এই কেন্দ্র মোট ভোটার ২ হাজার ২শ’ জন। বলাইল গ্রামের শহিদুল ইসলাম ফল্টু বললেন ‘ভোট ভালই হচ্ছে বিএনপির লোকজনক বেশি দেখা যাচ্ছে না।’ লাইনে দাঁড়ানো ভোটারদের আগে যাওয়ার প্রবণতাকে সুশৃঙ্খল রাখতে আনসারদের সহযোগিতা করতে দেখা গেল। সারিয়াকান্দির যমুনার চরাঞ্চলের ৫টি ইউনিয়নের খোঁজখবর করে জানা গেল বিকেল চারটা পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এই চরগ্রামগুলোতে নদীপথে পৌঁছাতে শ্যালো ইঞ্জিনের নৌকায় এক থেকে তিন ঘণ্টা সময় লাগে। স্থল পথে ও নদীর চরে প্রতিটি এলাকায় পুলিশ র‌্যাব বিজিবি মোতায়েন করা হয়। নাতির কাঁধে ভর দিয়ে এলেন নারী ॥ শংকর লাল দাশ, গলাচিপার কয়েকটি ভোটকেন্দ্র ঘুরে এসে জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটা। ভোটগ্রহণ শুরু হতে তখনও বাকি আধ ঘণ্টা। অথচ এরই মধ্যে উত্তর চরখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠ অনেকটাই লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়েছে। বিদ্যালয়ের তিনদিকে সরকারী রাস্তা। এতেই অবস্থান নিয়েছে দর্শনার্থী সাধারণ মানুষ। কৌতূহলের বশে শহর থেকেও এসেছে বহু মানুষ। চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকরা তো রয়েছেই। আর বিদ্যালয় কেন্দ্রের বেষ্টনীর মধ্যে প্রায় শ’ তিনেক নারী-পুরুষ ভোটারের দীর্ঘ সারি। যা সামলাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের রীতিমতো গলদঘর্ম অবস্থা। ঘড়ির কাঁটা আটটা ছুঁতেই চারটি বুথে একযোগে শুরু হয় ভোটগ্রহণ। প্রচুর উৎসাহী মানুষের উপস্থিতিতে উৎফুল্ল কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মোঃ জামাল হোসেন জানান, কেন্দ্রটিতে মোট ভোটার ১৫৫২ জন। ভোটাররা যাতে অল্প সময়ে ভোট দিতে পারেন, এজন্য চারটি বুথে ভোট নেয়া হচ্ছে। এ কেন্দ্রে দেখা লালভানু নামে এক নারী ভোটারের সঙ্গে। নাতির কাঁধে ভর দিয়ে আসা লালভানু জানান, তার বয়স অনেক আগে ৭৫ ছাড়িয়ে গেছে। প্রিয় প্রার্থীদের ভোট দিয়ে কেন্দ্রের বাইরে এসে লালভানু আরও বলেন, ‘বাবাগো, আর ভোট দিতে পারুম কি না, হেইয়া কইতে পারি না। তয় এইবার মনে হয় শ্যাষ ভোট দিলাম। হেইডায় মনে শান্তি আনছে। এ্যাহোন মইরা গ্যালেও দুঃক্ষ নাই।’ কর্তৃপক্ষের ঝুঁকিপূর্ণ তালিকার এ কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সার্জেন্ট নাইমুল ইসলাম জানান, সব ভয়ভীতি দূর করে ভোটাররা যাতে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে পারেন, এ জন্য তারা শুরু থেকেই সার্বিক ব্যবস্থা নিয়েছেন। বেলা ৯টার দিকে কেন্দ্র ছাড়ার আগে এক নম্বর বুথের ধানের শীষের এজেন্ট মোঃ হাছান ও নৌকার এজেন্ট মনির হাওলাদার জানান, নির্বিঘেœ ভোট হচ্ছে। এ ধরনের পরিবেশে তারা খুশি। পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরের দক্ষিণ চরখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে পৌঁছে দেখা গেল, সেখানে ভোটারের পাশাপাশি উৎসাহী সাধারণ মানুষের সংখ্যা আরও বেশি। ভোটার ছাড়া অন্যরা সরকারী রাস্তায় দাঁড়িয়ে উপভোগ করছেন ভোট উৎসব। সবার কাছে এটি যেন খুশির ঈদ। কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মোঃ ইমাম হোসেন জানান, কেন্দ্রটিতে মোট ভোটার ১ হাজার ৪২৭ জন। চারটি বুথে ভোট নেয়া হচ্ছে। দেখা গেল, এখানে চৈত্রের কড়ারোদ উপেক্ষা করে নারী ভোটাররা স্কুল ভবনের বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন ভোট দেয়ার জন্য। অপেলা বেগম, মিনারা খাতুন, জোছনা বেগমসহ কয়েক ভোটার জানান, প্রিয় প্রার্থীদের ভোট দিতে এসেছেন। এজন্য রোদে পুড়তে তাদের কষ্ট হচ্ছে না। কেন্দ্রটিতে প্রথমেই দেখা আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইসরাত হোসেন আব্বাসের সঙ্গে। তখন পর্যন্ত ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেন টুটুও ভোটের পরিবেশে খুশি। গলাচিপা সদর ইউনিয়নের আরও দুটি কেন্দ্র রতনদী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মুরাদনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে বেলা সোয়া এগারোটায় রামনাবাদ নদী পার হয়ে গোলখালী ইউনিয়নের হরিদেবপুর কেন্দ্রে পৌঁছাতেই দেখা বিএনপির মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মইনের সঙ্গে। কেন্দ্র পরিস্থিতি ঘুরে এ প্রতিবেদকে তিনি বলেন, নির্বাচনী পরিবেশে তিনি খুশি। এ ধরনের অবস্থা থাকলে তার বিজয় নিশ্চিত। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের ১১০টি কেন্দ্রের মধ্যে দিনভর ১৮টি কেন্দ্র সরেজমিন ঘুরে এবং আরও অন্তত ৪০টি কেন্দ্রে খোঁজখবর নিয়ে সর্বত্রই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের খবর পাওয়া গেছে। বিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলোর মধ্যে ডাকুয়া ইউনিয়নের পশ্চিম পাড়ডাকুয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালট ছিনতাই হওয়ার কারণে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। একই ইউনিয়নের হোগলবুনিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ২০ মিনিট ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল। আরও কয়েকটি কেন্দ্রে কয়েকজন প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে জোরজবরস্তির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া কোথাও তেমন বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। বরং বিকেল চারটার দিকে উপজেলার ১ লাখ ৮৩ হাজার ৮৭৮ ভোটারের মধ্যে প্রায় ৭০ ভাগ ভোটার ভোট দিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে খবর পাওয়া গেছে। এ সংখ্যা বহু কেন্দ্রে বাড়তে পারে বলে কয়েকজন প্রিসাইডিং অফিসার জানিয়েছেন। সরেজমিনে কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি কেন্দ্রে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আনসার ও ভিডিপির পাশাপাশি ছিল থানা পুলিশ ও আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়ন। ছিল বিজিবি ও র‌্যাবের টহল। পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ছিল ভ্রাম্যমাণ টিম। কঠোর নিরাপত্তার কারণে সাধারণ ভোটাররা ছিল উৎফুল্ল। কোন ধরনের যানবাহন না থাকার কারণে মাইলের পর মাইল গাঁয়ের মেঠো পথ পেরিয়ে ভোটাররা এসেছেন কেন্দ্রে। রোদে পুড়েছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। প্রায় প্রত্যেকটি কেন্দ্রের বাইরে বসেছে নানা ধরনের দোকানিদের পসরা। ভোটকেন্দ্র ঘিরে যেন মেলার আমেজ। কেন্দ্রে প্রার্থীদের এজেন্ট হিসেবে দায়িত্বপালনকারীরা ছিলেন উৎসবের আমেজে। হরিদেবপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ৭ নম্বর বুথের ধানের শীষের এজেন্ট মোস্তাফিজুর জানান, এত সুন্দরভাবে ভোট হচ্ছে, যা না দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না। তারা এজেন্টরা মিলে বেশ আনন্দে আছেন। একই কেন্দ্রের মেম্বার প্রার্থীর এজেন্ট মোঃ নেহালউদ্দিন জানান, জোর জবরদস্তি দূরের কথা, কেউ জাল ভোট দিতেও আসেনি। গলাচিপা উপজেলা সদর থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরের প্রত্যন্ত গাঁ চরবাংলা। চরবিশ্বাস ইউনিয়নের মূলভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন ৭১৪ জন ভোটারের জন্য এখানকার চরবাংলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থাপন করা হয়েছে ভোটকেন্দ্র। বেলা তিনটার দিকে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার বাবুল কৃষ্ণ শীল জানান, দ্বীপটির অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও খারাপ। তারপরও সাড়ে চার শ’ ভোটার ভোট দিয়েছেন। আরও কিছু ভোট পড়বে। কেন্দ্রে ধানের শীষের তিন এজেন্ট জশিম পেয়াদা, আলমাছ খলিফা ও মইনুদ্দিন পেয়াদা জানান, তাদের কেন্দ্রে কেউ সামান্য হুমকিও দেয়নি। শান্তিপূর্ণ ভোট করতে পেরে তারাও খুশি। পাঁচ মাসের শিশুকে কোলে নিয়ে এলেন মা ॥ মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল, সিরাজদিখান থেকে জানান, আশি বছরের বৃদ্ধা ফরীদাশী ম-ল। নাতিনের হাতে কাঁধে ভর করে ভোট দিলেন। সিরাজদিখান উপজেলার মালখানগর গ্রামের বাসিন্দা এই বৃদ্ধা। বললেন, জীবনে বহুবার ভোট দিয়েছি। তবে এইবার ভোট দিতে আইসা খুব সুখ পাইলাম। মনে হইলো সক্কলে ভোট দিতে পারতাছে। আর কোন শঙ্কা-আতঙ্ক নাই। অন্যগো চেহারা দেইখ্যা আমার ভাল লাগছে। তিনি ভোট প্রয়োগ করেন মালখানগর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ কেন্দ্রে। আর তার নাতিন লতিকা ম-ল ঠাকুর মায়ের সঙ্গে এসে জীবনে প্রথম ভোট দিলেন। লতিকা সরকারী হরগঙ্গা কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞানে সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। লতিকা বলেন, এইবারই সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ ভোট হচ্ছে। সকাল ৮টায় ভোট গ্রহণ শুরু হলেও এর অন্তত আধাঘণ্টা আগেই লম্বা লাইন পড়েছিল এই কেন্দ্রে। পরে প্রিসাইডিং অফিসার সুভাস চন্দ্র দে গোপন কক্ষ বৃদ্ধি করে দ্রুত ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা করেন। এই কেন্দ্রে একই গ্রামের পাঁচ মাসের শিশু সাইফুল ইসলামকে কোলে নিয়ে ভোট দিতে আসেন শাহিদা বেগম। আর রথবাড়ি গ্রামের বৃদ্ধ জাব্বার শেখ (৬৫) ভোট দিতে আসেন লাঠিভর দিয়ে। কমলা ম-ল (৭০), খোরশেদা বেগম (৭০), গাঙ্গুলী দাস (৭১) ও লক্ষ্মী রানী ম-লসহ (৬০) বহু প্রবীণ ভোটারের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া নানা বয়সী ভোটারও ছিল লাইনে। পূর্ণিমা পোদ্দার (৪০) বলেন, ভোট দিতে কার ভাল না লাগে। আর পরিবেশ ভাল হইলে তো আরও শান্তি। তবে এইবার ভোট দিতে আইসা শান্তি লাগছে। বিাভন্ন কেন্দ্রে ঘুরে এমন চিত্রই লক্ষ্য করা গেছে। সকাল, দুপুর আর বিকেল সব বেলাই ভোটারের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
×