ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আফগানিস্তানের হার ১৫ রানে

ইংল্যান্ডের ঘাম ঝরানো জয়

প্রকাশিত: ০৭:০৮, ২৪ মার্চ ২০১৬

ইংল্যান্ডের ঘাম ঝরানো জয়

শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ টি২০ বিশ্বকাপে আফগানদের সহজেই হারাল ইংলিশরা। ১৫ রানের জয়ে সেমির রেসে টিকে থাকল ইয়ন মরগানের দল। দিল্লীর ফিরোজ শাহ কোটলায় নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৪২ রানের স্কোর গড়ে। টস জিতে ব্যাটিং নেয়া ইংল্যান্ড। জবাবে ৯ উইকেটে ১২৭ রানে থামে আফগানিস্তানের সংগ্রহ। ব্যাটে-বলে চমৎকার ‘অলরাউন্ড’ নৈপুণ্য প্রদর্শন করে ম্যাচসেরা হয়েছেন মঈন আলি। এ জয়ে তিন খেলায় ২ জয়ে গ্রুপ-১ এ পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলো ইংলিশরা। দুই খেলায় ২ জয়ে শীর্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শনিবার গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডের প্রতিপক্ষ ‘ডিফেন্ডিং’ চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা। ফল সহজ জয়ের সাক্ষী দিলেও কাল ইংলিশদের জয়টা মোটেও সহজ ছিল না। বিশেষ করে আফগানিস্তানের চমৎকার বোলিংয়ের মুখে ব্যাটিংয়ে নেমে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ে গিয়েছিল মরগানের দল। বিশেষ করে দুই স্পিনার মোহাম্মদ নবী ও রশীদ খান। যেখানে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিলেন আন্তর্জাতিক তারকা নবী। ষষ্ঠ ওভারে নিয়েছেন ২ উইকেট, সঙ্গে একটি রানআউট। তার কিছুক্ষণ পরই দুর্দান্ত এক ক্যাচ নিয়ে একাই যেন ইংল্যান্ডকে কাঁপিয়ে দেন নবী। এক পর্যায়ে ৫৭ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে ইংল্যান্ড! ষষ্ঠ ওভারে টানা দুই বলে জেমস ভিন্স ও প্রতিপক্ষ অধিনাক ইয়ন মরগানের উইকেট তুলে নেন নবী। হ্যাটট্রিক বলেও এলবিডব্লিউর আবেদন হয়েছিল, কিন্তু অফস্টাম্পের একটু বাইরে থাকায় আম্পায়ার আউট দেননি। পরের বলেই বেন স্টোকসের ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট বড় তারকা জো রুট। সেটিও কী নাটকীয়তায়! স্টোকসের ডাকে দৌড়ে ক্রিজ পার হয়ে গিয়েছিলেন নন স্ট্রাইকে থাকা রুট। ততক্ষণে অবশ্য ‘না’ করে দিয়েছিলেন স্টোকস, কিন্তু দেরি হয়ে যায়। বল যায় বোলার নবীর হাতে, কিন্তু তিনি প্রায় ‘ভজকট’ পাকিয়ে ফেলেন। বল হাতে আসার আগেই বেল ফেলে দিয়েছিলেন। মুহূর্তের সিদ্ধান্তের পরে আবার বল হাতে নিয়ে স্টাম্প উপড়ে সংশোধন করে নেন, আউট! এক ওভারের মধ্যেই তিন-তিনটি উইকেট হারিয়ে সহযোগী দেশ আফগানিস্তানের সামনে রীতিমতো কাঁপতে থাকে কুলীন ইংলিশরা। ১৫তম ওভারে ক্রিস জর্ডান যখন সাজঘরে ফেরেন দলের রান তখন ৮৫। ১শ’ হওয়া নিয়ে সন্দেহ! ইংল্যান্ডকে বড় বাঁচা বাঁচিয়েছেন মঈন। তাকে সঙ্গ দিয়েছেন ডেভিড উইলি। অষ্টম উইকেট জুটিতে ৫.৩ ওভারে অবিচ্ছিন্ন ৫৭ রান যোগ করেন মঈন ও উইলি! ৩৩ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় সর্বোচ্চ ৪১ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন মঈন। এরপর প্রতিপক্ষকে ১২৭ রানে আটকে রাখতে বল হাতে ১ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা তিনি। সম্প্রতি নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছিলেন না। কিন্তু অসীম সাহসের অধিকারী আফগানদের বিপক্ষে বিপদে পড়া ম্যাচে ঠিকই নিজের জাত চেনালেন পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত ইংলিশ-অলরাউন্ডার। আফগানদের হয়ে নবী ও রশীদ নিয়েছেন দুটি করে উইকেট। জবাবে ব্যাট করতে নেমে আফগানিস্তানও ইংল্যান্ড বোলারদের তোপের মুখে পড়ে। ১৩ রানে ৩, ৩৯ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর আর সুবিধা করে উঠতে পারেনি তারা। এরপরও দলের সংগ্রহ কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার কৃতিত্ব শফিক উল্ল্যাহর। নয় নম্বরে নেমে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ২০ বলে ৩৫ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। সামিউল্লাহ শেনওয়ারি ২২ ও রশীদ খান ১৫ ছাড়া আফগানিস্তানের টপঅর্ডার পুরোপুরি ব্যর্থ। হালের আলোচিত ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদ ৪, অভিজ্ঞ নবী ১২ ও অধিনায়ক আসগর স্টানিকজাই মাত্র ১ রান করে সাজঘরে ফেরেন। ইংল্যান্ডের হয়ে পেসার উইলি ও স্পিনার আদিল রশীদ নেন দুটি করে উইকেট।
×