ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শুভ ইস্টার সানডে আজ

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২৭ মার্চ ২০১৬

শুভ ইস্টার সানডে আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শুভ ইস্টার সানডে আজ (রবিবার)। খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। ক্রুশবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করার পর এই দিনে খ্রিস্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিস্ট পুনরুত্থিত হয়েছিলেন। সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশের খ্রীস্টান সম্প্রদায়ও শনিবার গভীর রাত থেকেই দিনটি যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদায় উদযাপন করছে। প্রতিটি চার্চ অপরূপ সাজে সজ্জিত করা হয়েছে। আজ সকালে দেশের সকল চার্চেই বিশেষ খ্রিস্টযোগ ও প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থনা অনুষ্ঠান ছাড়াও বিভিন্ন খ্রিস্টীয় সামাজিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এই বিশেষ দিনটি পালনের জন্য নানা কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। ইস্টারের চেতনা বিশ্বশান্তি ও নির্মল আনন্দ আনয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করে বিভিন্ন সংগঠন বিবৃতি দিয়েছে। সারাবিশ্বের খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব হলো ইস্টার সানডে। খ্রিস্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিস্টকে বিপথগামী ইহুদী শাসকগোষ্ঠী তাদের কুসংস্কারাচ্ছন্ন শাসন ব্যবস্থা অক্ষুণœ রাখার স্বার্থে ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যা করেছিল। মৃত্যুর তৃতীয় দিবস রবিবারে পুনরুঙ্খিত হয়েছিলেন যিশুখ্রিস্ট। যিশুখ্রিস্টের পুনরুত্থানের ওই রবিবারটি ইস্টার সানডে নামে পরিচিত। চল্লিশ দিনের রোজা পালন শেষে এ ইস্টার সানডে বিশ্বের সকল খ্রিস্টভক্তদের জীবনে বয়ে আনে নির্মল আনন্দ ও শান্তি। গভীর রাত থেকেই শুরু হয়ে যায় ইস্টার সানডে উদযাপন। গভীর রাতে প্রতিটি চার্চে অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠান ও প্রার্থনা। খ্রিস্টভক্তরা চার্চে গিয়ে উপস্থিত হয়ে গভীর রাত পর্যন্ত অবস্থান করেন। তাঁরা পরস্পরের সঙ্গে ইস্টার সানডের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। খ্রিস্টভক্তরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কীর্তন করে রাতের বাকি সময় পার করে দেন। একইভাবে আজ রবিবার বিভিন্ন খ্রিস্টীয় সামাজিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এই বিশেষ দিনটি পালনের জন্য নানা কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। ইস্টার সানডেতে সরকারী ছুটি ঘোষণা করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ খ্রীস্টান এ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন (বাগাছাস)। ইস্টার সানডে উপলক্ষে শনিবার পাঠানো শুভেচ্ছা বিবৃতিতে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এ দাবি জানান। এক যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশ খ্রীস্টান এ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট প্রমোদ মানকিন এমপি, মহাসচিব নির্মল রোজারিও, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হেমন্ত কোড়াইয়া, চার্চ অব বাংলাদেশের কুষ্টিয়া ডায়োসিসের বিশপ রাইট রেভা শ্যামুয়েল সুনীল মানখিন, খ্রীস্টান এ্যাসোসিয়েশন কেন্দ্রীয় কমিটির যুব বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার প্রলয় স্নাল খ্রীস্টান সম্প্রদায়সহ দেশবাসীকে ইস্টার সানডের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, ইস্টার সানডে অস্থিতিশীল বিশ্বে শান্তি ও নির্মল আনন্দ বয়ে আনবে। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের মঙ্গল কামনা করেন তাঁরা। চার্চের পুরোহিতরা জানান, ইস্টার সানডে গোটা বিশ্বের খ্রীস্টিয়ান সম্প্রদায়ের জন্য একটি আনন্দের বিষয়। আর এই ইস্টার সানডে প্রভু যিশুর পুনরুত্থান উৎসব বলে অভিহিত। প্রত্যেক খ্রিস্ট ভক্তগণ আজ মহাসমারোহে প্রভু যিশুর পুনরুত্থান ও তাঁর মহাগৌরব প্রতাপ স্বীকার করে নিচ্ছে। আজ যিশুর পুনরুত্থান উৎসব। তিনি পাপতাপীর নিমিত্তে ক্রুশে সমর্পিত হয়েছিলেন। শত্রুদের দ্বারা প্রভু যিশু প্রহারিত, লাঞ্ছিত, অপমানিত, যন্ত্রণাভোগ এবং সর্বপূরি ক্রুশের উপর জীবন সমর্পণ করে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। কিন্তু তাঁর এই মৃত্যু ছিল ক্ষণস্থায়ী। তিন দিনের পরই তিনি মহাগৌরবে তাঁর পরাক্রম অসীম শক্তির পরিচয় দান করলেন। তিনি বেঁচে উঠলেন। বলাবাহুল্য যে, প্রভু যিশুর এই পুনরুত্থান উৎসব পালনের পটভূমিতে রয়েছে খ্রিস্ট ভক্ত অনুসারীদের আধ্যাত্মিক প্রস্তুতি। প্রভু যিশুর এই পুনরুত্থান উৎসব শুধু ভক্ত জনগস্টের আনন্দের সহভাগী হন না, আনন্দের সঙ্গে সঙ্গে নতুন জীবনের দিকনির্দেশনা খুঁজে পান ভক্তগণ। আর এই নতুন জীবনের মধ্যে রয়েছে পরম শান্তি, সৌহার্যপূর্ণ ভালবাসা, পারস্পরিক মিলন, একে অপরকে ক্ষমাদান এবং ক্ষমার মনোভাব নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সমাজে ও পরিবারে সুন্দরভাবে জীবনযাপন করার প্রতিশ্রুতি। আজ সারাবিশ্ব পেতে চায় শান্তি। যিশুর এই পুনরুত্থান মানুষের পরিত্রাণের পথকে সুগম করে তোলে। জীবন পরিবর্তন, আচার-আচরণ স্বভাব পরিবর্তন করেও যেন ঐশ্ব্যমহিমার এবং অনন্ত জীবন পাবার প্রত্যাশায় অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। ইস্টার সানডে যিশুর পুনরুত্থান একটি আনন্দের সংবাদ। আজ ইস্টার সানডে অর্থাৎ প্রত্যেক মানুষের জীবনে বয়ে আনবে শান্তি, ক্ষমা, ভালবাসা, পারস্পরিক মিলন, আনন্দ ও ভ্রাতৃত্ববোধ।
×