ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

২০২১ সালের মধ্যে দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানীর পরিমাণ হবে ৫০ বিলিয়ন ডলার : বাণিজ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০১:৪৬, ২৭ মার্চ ২০১৬

২০২১ সালের মধ্যে দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানীর পরিমাণ হবে ৫০ বিলিয়ন ডলার : বাণিজ্যমন্ত্রী

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে ২০২১ সালের মধ্যে দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানীর পরিমাণ ৫০ বিলিয়নে ডলারে উন্নীত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেছেন, তৈরি পোশাক রপ্তানীতে বিশ্বের প্রথম অবস্থানে থাকা চীনের রপ্তানী প্রায় ২০০ বা ৩০০ বিলিয়ন ডলার। এই বিশাল সংখ্যার সাথে আমাদের দেশের তুলনা চলে না। আমাদের বর্তমান রপ্তানীর পরিমাণ ২৭ বিলিয়ন ডলার। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে ২০২১ সালের মধ্যে দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানীর এই পরিমাণ ৫০ বিলিয়নে ডলারে উন্নীত হবে। যেভাবে এই খাতে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে এই সংখ্যা আমরা অর্জন করতে পারবো। রবিবার দুপুরে বাংলা একাডেমির শামসুর রহমান মিলনায়নে বাংলাদেশ-ভারত সহযোগিতা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মিলনের প্রথম অধিবেশনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনী ও সেন্টার ফর ইস্ট এন্ড নর্থ ইস্ট রিজিওন স্টাডিজ-কলকাতার যৌথ উদ্যোগে এই সম্মিলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনে দুই দেশের প্রথিতযশা বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। উদ্বোধনী পর্বে বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনীর সভাপতি প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মেজবাহ কামাল। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভারতের ন্যাশনাল রিসার্চ প্রফেসর জয়ন্ত কুমার রায়। ’শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য ও আন্তসংযোগ’ শীর্ষক অধিবেশনে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আব্দুল মতলুব আহমেদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সিডিপির নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ, প্রাক্তণ ভারতীয় হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী প্রমুখ। এরপর সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও সহযোগিতা এবং পানির বন্টন ও পরিবেশ শীর্ষক আরও দুটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম অধিবেশনে বক্তব্য প্রদানকালে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ আরও বলেন, বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারত যদি ছোটোখাটো দেশের ক্ষেত্রে নমনীয় আচরণ করে, তাহলে সকলের উপকার হয়। এখন ভারত তামাক ও মদ ছাড়া প্রায় সকল দ্রব্যেই শুল্কমুক্ত সুবিধা দিচ্ছে। কিন্তু এ সুবিধা পাওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশী পণ্য ভারতে প্রবেশের ক্ষেত্রে এক ধরনের ফি আরোপ করা হয়। যা বাংলাদেশী পণ্য রপ্তানীর ক্ষেত্রে বাঁধার সৃষ্টি করে। তিনি আরও বলেন, ভারতে বাংলাদেশের পাটের ভালো বাজার রয়েছে। বাজার ও পণ্যের গুনগতমান উন্নত করে ভারতে আরও রপ্তানী বৃদ্ধি করা যেতে পারে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন নির্ভর করে কানেন্টিভিটির উপর। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন পূর্বের যেকোনো সময়ের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে। প্রাক্তণ ভারতীয় হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, আমাদের বাণিজ্যিক ধারার উন্নতির প্রধান নিয়ামক রাজনৈতিক ইস্যু। এক্ষেত্রে সার্কের ভূমিকা বাস্তবসম্মত নয়। পাকিস্তান কমবেশি সার্কের মধ্যে নেই। বাণিজ্যিকভাবে এই অঞ্চলকে সমৃদ্ধ করতে হলে ব্যবসায়িক অবকাঠামো এবং বিনিয়গের উপর গুরুত্বারোপ করতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন, পররাষ্ট্র নীতিকে আমরা বিভিন্নভাবে বিশ্লেষণ করতে পারি, নানা তাত্ত্বিক কাঠামোতে আবদ্ধ করা যেতে পারে, কিন্তু ভারত-বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ককে কোনো নির্দিষ্ট তাত্ত্বিক কাঠামোতে আবদ্ধ করা যাবে না। কারণ এই দুই দেশের সাথে জড়িয়ে আছে দীর্ঘ দিনের ইতিহাস-ঐতিহ্য, আবেগিয় সম্পর্ক এবং সাংস্কৃতিক লেনদেনের বিষয়গুলো। রাজনৈতিক দলের দ্বারা একটি দেশের পররাষ্ট্রনীতি প্রভাবিত হয়। ভারতের ক্ষেত্রে দলের পরিবর্তন হলে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এর পররাষ্ট্রনীতির পরিবর্তন হয়না। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এই আমাদের রাজনীতিটা একটি সময়ে পাকিস্তানীদের দ্বারা এমনভাবে পরিচালিত হয়েছে যে এটা অতিক্রম করতে আমাদের অনেকটা সময় লেগেছে। সার্কভুক্তদেশগুলো ভবিষ্যতে ইউরোপিয় ইউনিয়নের মতো অবাধ বাণিজ্য এবং অবাধ চলাচলের অবস্থা বজায় রাখতে সচেষ্ট হবে। এজন্য বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা যেমন ভারতের ভিসা জটিলার বিষয়টি সমাধানের জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সভাপতির বক্তব্যে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আব্দুল মতলুব আহমেদ বলেন, ভারতকে ছোটো দেশগুলোর ক্ষেত্রে ছাড় দিতে হবে। বাংলাদেশের সাথে ভারতের যে বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে তা কমাতে ভারতে বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে হবে। ভারতে রপ্তানী করার মতো আমাদের দেশে তেমন কোনো ব্র্যন্ডেড প্রোডাক্ট নেই। একারণেই বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দেয়।
×