ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আপাতত ছুটিতে মাশরাফিরা

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ২৯ মার্চ ২০১৬

আপাতত ছুটিতে মাশরাফিরা

ফিরেই ঘরোয়া ক্রিকেটের ব্যস্ততা, এফটিপেতে আগস্ট পর্যন্ত কোন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নেই বাংলাদেশের, তবে বিসিবি চেষ্টা করছে দু’য়েকটি ঘরোয়া সিরিজ আয়োজনের মোঃ মামুন রশীদ ॥ টানা ক্রিকেটের মধ্যে থাকার পর এবার অফুরন্ত বিশ্রামের সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। গত বছর নবেম্বর-ডিসেম্বর থেকে টানা ক্রিকেটের মধ্যে ছিলেন খেলোয়াড়রা। টি২০ বিশ্বকাপ মিশন শেষে শনিবার দেশে ফেরা দলটির আপাতত আর কোন কাজ নেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) ফিউচার ট্যুরস প্রোগ্রামের আওতায় কোন দ্বিপাক্ষিক সিরিজ নেই বাংলাদেশ দলের দীর্ঘ ৫ মাস। সে কারণে আপাতত সব ক্রিকেটারকেই ছুটি দেয়া হয়েছে বিসিবি থেকে। তবে কিছুদিন পরেই শুরু হবে ঘরোয়া ক্রিকেটের ব্যস্ততা। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার জন্যও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এ সময়ের মধ্যে দু’য়েকটি দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজনের জন্য বেশ কয়েকটি বোর্ডের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করা হচ্ছে। এমনটাই জানিয়েছেন বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান আকরাম খান। নবেম্বরে জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে ওয়ানডে ও টি২০ সিরিজ, পরে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি২০, চলতি বছর জানুয়ারিতে জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে ৪ ম্যাচের টি২০ সিরিজ, ফেব্রুয়ারি-মার্চে এশিয়া কাপ টি২০ ও সর্বশেষ টি২০ বিশ্বকাপ খেলেছে বাংলাদেশ জাতীয় দল। টানা ক্রিকেট খেলার কারণে খেলোয়াড়রা বেশ পরিশ্রান্ত। এ বিষয়ে আকরাম বলেন, ‘জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা গত দেড় বছরে অনেক ক্রিকেট খেলেছে। আমরা মনে করি তাদের কিছুটা বিশ্রামের প্রয়োজন আছে। এ কারণে তাদের ছুটি দেয়া হয়েছে।’ এই দীর্ঘ অবসরের মধ্যে তাহলে ক্রিকেটাররা কি করবেন? অবশ্য মাঝে ঘরোয়া ক্রিকেটের ব্যস্ততা আছে সেখানে ক্রিকেটাররা খেলার সুযোগ পাবেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যস্ততা না থাকায়। এ বিষয়ে আকরাম বলেন, ‘সামনে আমাদের প্রিমিয়ার লীগ আছে। ক্রিকেটাররা সেখানে খেলতে পারবে। আমরা বেশি চিন্তা করছি ‘এ’ দল নিয়ে। সেখানে বেশিরভাগ জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা খেলেন। সে কারণে আমরা ‘এ’ দলকে দেশের বাইরে পাঠানো এবং অন্য দেশগুলোর ‘এ’ দলকে আনার চেষ্টা করছি সিরিজ খেলার জন্য। তাই ক্রিকেটাররা খেলার মধ্যেই থাকতে পারবে।’ জাতীয় দলকে নিয়েও চিন্তা-ভাবনা করছে বিসিবি। এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে যদি দু’য়েকটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সিরিজ খেলা যায় সেটা দলকে একটা ছন্দে রাখবে। কারণ টানা খেলার মধ্যে থেকে দলগতভাবে বাংলাদেশ দল এখন বেশ সুসংবদ্ধ হয়ে উঠেছে। দীর্ঘ বিশ্রামে সেখানে ছেদ ঘটতে পারে। এ বিষয়ে আকরাম বলেন, ‘আমরা ক্রিকেটারদের শৃঙ্খলার বিষয়ে বেশ সতর্ক। প্রিমিয়ার লীগ শুরু হয়ে যাবে, এর মধ্যেই আমরা আলোচনা করে ঠিক করার চেষ্টা করছি যেন দু’য়েকটি দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে পারি। সেটা করতে পারলে জাতীয় দলের জন্য বেশ ভালই হবে।’ আইসিসি এফটিপি অনুসারে কোন সিরিজ না থাকলে যে কোন দুটি বোর্ড আলোচনা সাপেক্ষে সিরিজ আয়োজন করতে পারে। তাই এখন সেদিকেই মনোযোগী হয়েছে বিসিবি। এফটিপি অনুসারে আগস্টে ভারত সফরে একটি টেস্ট ছাড়াও তিন ওয়ানডে খেলার কথা বাংলাদেশ দলের। এরপর অক্টোবরে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরোয়া সিরিজে ২ টেস্ট ও ৩ ওয়ানডে এবং ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ড সফরে ২ টেস্ট, ৩ ওয়ানডে ও ২ টি২০ ম্যাচের সিরিজ আছে বাংলাদেশ দলের। তবে আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত দীর্ঘ বিরতি আছে বাংলাদেশ দলের। সূচীতে এ সময়টাতে খেলা নেই টাইগারদের। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ফাঁকা নিউজিল্যান্ড, জুন পর্যন্ত পাকিস্তান, এপ্রিলে দক্ষিণ আফ্রিকা-শ্রীলঙ্কা, মে মাস পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুইয়েরও কোন সিরিজ নেই। তাই যথেষ্ট সুযোগ আছে বিসিবির সামনে এসব বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে কোন দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজনের। সে অনুযায়ী চেষ্টাও করছে বিসিবি। এপ্রিলের শেষদিকে নিজেদের মাটিতেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ খেলার জোর চেষ্টা চলছে এমনটাই জানা গেছে বিসিবি সূত্রে। তবে সিরিজটিতে কয়টি ওয়ানডে কিংবা টেস্ট থাকবে এখনও নিশ্চিত নয়। অন্যদিকে, আগামী মে-জুন মাসে ৩ ওয়ানডে, ২ টেস্ট ও ১ টি২০ ম্যাচ খেলতে জিম্বাবুইয়ে যাওয়ার কথা বাংলাদেশের। টানা দুটি সিরিজ তারা বাংলাদেশে এসে খেলে গেছে। সেটারই ফিরতি সিরিজ হিসেবে জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে সিরিজটা হওয়ার কথা। তবে জুনে ভারত সফরে তাদের ১ টেস্ট ও ৩ ওয়ানডের সিরিজ এবং জুলাইয়ের শেষে নিউজিল্যান্ড সফরে ২ টেস্ট আছে। আগস্টে জাতীয় দলের ভারত সফর শেষে আগামী সেপ্টেম্বর মাসে আবারও একটি বিরতি আছে। সে সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ৭ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলারও সম্ভাবনা বিবেচনা করে দেখছে বিসিবি।
×