ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কলকাতায় উড়াল সড়ক ধসে নির্মাণ সংস্থার বিরুদ্ধে খুনের মামলা

প্রকাশিত: ০৪:০২, ২ এপ্রিল ২০১৬

কলকাতায় উড়াল সড়ক ধসে নির্মাণ  সংস্থার বিরুদ্ধে খুনের মামলা

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় নির্মাণাধীন উড়াল সড়ক ধসের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৫ জনে পৌঁছেছে। উদ্ধার কাজে পশ্চিমবঙ্গকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুক্রবার ওয়াশিংটন সফররত প্রধানমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে ফোন করে এ আশ্বাস দেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে এ কথা জানা গেছে। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার। এদিকে গিরিশ পার্কে উড়াল সড়ক ভেঙে পড়ার ঘটনায় নির্মাণকারী সংস্থার বিরুদ্ধে সরাসরি ৩০২ ধারায় খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। পাশাপাশি, যারা উড়াল সড়ক তৈরিতে কাঁচামাল সরবরাহ করেছিল তাদের বিরুদ্ধেও একই ধারায় মামলা করা হয়েছে। উড়াল সড়ক যাদের দেখাশোনা করার কথা ছিল, তারা তা ঠিক মতো করেছে কিনা তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। নির্মাণকারী সংস্থার ৭ জন শ্রমিককে দফায় দফায় জেরা করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতেই সংস্থার বালি, হাওড়া, উত্তরপাড়া, আনন্দপুর এবং হায়দরাবাদের অফিসে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে। দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে সেনাবাহিনী ও উদ্ধারকর্মীরা। উড়াল সড়কটি ধসে পড়ার কারণ নিয়ে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, তৃণমূল কংগ্রেস নির্বাচনের আগে দ্রুত উড়াল সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ করার জন্য চাপ দিয়েছিল। দ্রুত করতে গিয়ে উড়াল সড়কের স্টিলের কাঠামোটি ভারি ওজন নেয়ার উপযোগী করা হয়নি। ফলে ওই অংশটি ধসে পড়ে। বৃহস্পতিবার বিকেলে উত্তর কলকাতার বড়বাজার অঞ্চলের জোড়াসাঁকো এলাকায় নির্মাণাধীন বিবেকানন্দ উড়াল সড়ক ভেঙ্গে পড়ে গুরুতর আহত হয় ৭৮ জন। বিভিন্ন হাসপাতালে তারা চিকিৎসাধীন রয়েছে। ধসে পড়া উড়াল সড়কের এক শ’ ৫০ মিটার প্রশস্ত অংশটি সাত ঘণ্টা চেষ্টার পর সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তবে কংক্রিট ও ধাতব পদার্থের ধ্বংসস্তূপে অনেকে আটকা পড়ে আছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যাত্রীবাহী বাস, ট্যাক্সি, টানা রিকশা চাপা পড়েছে। তবে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বাহিনীর (এনডিআরএফ) মহাপরিচালক (ডিজি) সুরজিত সিং গুলেরিয়া জানান, ভেঙ্গে পড়া অংশের নিচে কারও জীবিত থাকার সম্ভাবনা নেই। সারা রাত ধরেই উদ্ধারকাজ চলেছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে যাত্রীবাহী মিনিবাস ও গাড়ি আটকে রয়েছে বলে যে আশঙ্কা করা হয়েছিল তা ঠিক নয়। উদ্ধারকারীরা জানান, উড়াল সড়কের ভেঙ্গে পড়া মূল অংশ সরাতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। হায়দরাবাদের নির্মাণ সংস্থা আইভিআরসিএল ভেঙ্গে যাওয়া উড়াল সড়কটি নির্মাণ করছে। এর কাজ শুরু হয়েছিল ২০০৯ সালে। বাম সরকারের আমলে এই উড়াল সড়কের নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। আর বর্তমান তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের আমলে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২৭ বছর ধরে তারা অসংখ্য সেতু নির্মাণ করেছেন। কখনও এ রকম দুর্ঘটনা ঘটেনি।
×